Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে আমতলীর মাছ ও পান চাষীরা নিঃস্ব

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ১০:১৭ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীর জলোচ্ছ্বাসে বরগুনা জেলার আমতলীর মাছ ও পান চাষীরা নি:শ্ব হয়ে গেছে। উপজেলার ২৪০ টি পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। নষ্ট হয়েছে ৪শতাধিক পানের বরজ। এতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা।

জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে পায়রা নদী সংলগ্ন আমতলী পৌরসভাসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে উপজেলার ২৪০টি মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। এতে ৩৯ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মৎস্য বিভাগ।

আমতলী পৌর শহরের বাঁশতলা গ্রামের দেলোয়ার ফকির বলেন, পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুই একর জমির মাছের ঘের তলিয়ে সকল মাঝ ফেঁসে গেছে। ঘেরের চারিপাশে জাল দিয়েও রক্ষা করতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, এতে আমার দশ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

একই গ্রামের লাল মিয়া হাওলাদার ও জাহিদ ফকির বলেন, সব শেষ। আছে শুধুই স্মৃতি। এতো পানি ১০ বছরেও দেখিনি। তারা আরো বলেন, মাছের ঘের তলিয়ে অন্তত ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে উপজেলার ২৪০ টি মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত ৩৯ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের আর্থিক অনুদানের জন্য তালিকা করে বরগুনা জেলা মৎস্য অফিসে প্রেরণ করেছি। অনুদান পেলে চাষিদের সহযোগিতা করা হবে।

এছাড়া ইয়াসের প্রভাবে লবণ পানির কারণে এবং বাতাসে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৪শতাধিক পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাতাসের প্রভাবে পান পাতা ছিঁড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এবং লবণ পানির প্রভাবে অনেক পান গাছের পাতা ইতোমধ্যে ঝলসে যেতে শুরু করেছে। রোদ উঠলে হয়তো পান গাছের ক্ষতির পরিমাণ আরো স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে। পান চাষিরা বলেন, বন্যার লবণ পানি পান বরজে ঢুকে পানের লতা পঁচে যাচ্ছে। এতে তাদের সর্বনাশ হয়েছে। মাটি লবণাক্ত হয়ে যাওয়ায় ওই জমিতে এ বছর আর পান চাষ করা সম্ভব হবে না বলে জানান চাষিরা।

গুলিশাখালী ষোল হাওলাদার গ্রামের পান চাষি হিরু হাওলাদার বলেন, বন্যার লবণ পানি ঢুকে আমার ১৮ শতাংশ জমির পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, ওই জমিতে এ বছর আর পান চাষ করা যাবে না। এতে আমার অন্তত দুই লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

একই গ্রামের জামাল হাওলাদার বলেন, বন্যার লবণ পানি পান বরজে প্রবেশ করে সব শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমার পান বরজই সম্বল। সেই সম্বল শেষ হয়ে গেছে।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, বন্যার লবণ পানিতে তলিয়ে উপজেলার চার’শতাধিক পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এতে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরগুনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ