Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অপুষ্টির কারণে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা ২০ ভাগ কমে যেতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম

দেশের বিভিন্ন শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বড় অংশ অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির কারণে শ্রমিকের কর্মক্ষমতা ও উৎপদানশীলতা ২০ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে (এসডিজি) শ্রমিকের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া জরুরি।

সোমবার (৭ জুন, ২০২১) শ্রম ও কর্মসংস্থাান মন্ত্রণালয়ের শ্রম অধিদফতরের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত শ্রম মন্ত্রণালয় ও গেইন বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বমূলক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তারা এই তথ্য তুলে ধরেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আওতাধীন শ্রম অধিদফতর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সহযোগিতায় ছিল সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)। নেদারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

শ্রম অধিদফতর ও ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিলেশানস ইনস্টিটিউট (আইআরআই) কর্মকর্তাদের স্বক্ষমতা বাড়ানো, পুষ্টি ও নিরাপদ খাবার গ্রহণে শ্রম অধিদফতরের সমন্বিত সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কারখানায় ট্রেড ইউনিয়নগুলোতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা অণুসরণের লক্ষ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।

এই চুক্তির আওতায় শ্রম অধিদফতর ও গেইন শ্রমিকদের পুষ্টি উন্নয়নে যৌথ ও সংক্রিয়ভাবে কাজ করবে। গেইনের ‘স্বপ্ন’ প্রকল্পের অংশ হিসাবে এটি বাস্তবায়িত হবে। এর পাশাপাশি উভয়ই পুষ্টি ও কর্মশক্তি উন্নয়নে কর্মরত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি, এই সংক্রান্ত জ্ঞান ও তথ্য বিনিময় এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এছাড়া এর আওতায় শ্রম অধিদফতর গেইনের সঙ্গে যৌথভাবে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা তৈরি, ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ আয়োজন, শ্রমিকদের মাঝে সচেতনমূলক ক্যাম্পেইন ও এই বিষয়ক বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করবে।

এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থাান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাকিউন নাহার বেগম, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) গৌতম কুমার, গেইন-বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মো আবু আশরিফ মাহমুদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘কর্মশক্তি ও পুষ্টি’ সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশে-এর পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল।

কে এম আব্দুস সালাম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা; তিনি ৪৮ বছর আগে পুষ্টি বিষয়টিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সে কারণেই জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শখ হাসিনা। সরকার প্রধান মনে করেন, অপুষ্টির কারণে সংঘঠিত রোগব্যাধি ব্যক্তিজীবনে কর্মঘণ্টা হ্রাস ও আর্থিক ক্ষতিসাধন করে, যা সার্বিকভাবে জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত করে। তাই অপুষ্টির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত উপস্থাপনায় মনিরুজ্জামান বিপুল জানান, বাংলাদেশ ও বিশে^র বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী-শ্রমিকের যথাযথ পুষ্টি জাতীয় উৎপাদনশীলতা ২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। তিনি জানান, শুধু আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যে উৎপাদনশীলতা কমায়, তার আর্থিক মূল্য ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার।

প্রসঙ্গত: গেইন ‘স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ২১ টি কারখানায় কাজ করে। এসব কারখানায় ৫২ হাজার শ্রমিক কাজ করে, যেখানে ৬৩ শতাংশই নারী ও ৪৭ শতাংশ পুরুষ। এর আওতায় এই পর্যন্ত ৪৩ হাজার শ্রমিকদের পুষ্টি ও ওয়াশ বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ