Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কানাডায় মুসলিম পরিবারকে হত্যায় সামাজিক মাধ্যমে নিন্দার ঝড়

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২১, ৩:২৩ পিএম

কানাডার একটি অভিবাসী মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে হত্যার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুসলিমবিদ্বেষী এই হামলার প্রতিবাদে ফেসবুকে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। অপরাধীর দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যমে নিন্দা জানিয়ে সমালোচকরা বলছেন, যদি একজন মুসলিম এই হামলা করতো তাহলে মানবতার ফেরিওয়ালারা এত সময়ে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের ফেনা তুলে ফেলতেন। বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যেতো! আর হামলাকারীর ব্যক্তিগত কর্মের ফলে সামগ্রিকভাবে ইসলাম ও মুসলিমদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হতো! অথচ এখানে যে হামলা করেছে তাকে কোন বিশেষণে বিশেষিত করা হচ্ছে না।

এদিকে, মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে হত্যা করাকে ‘সন্ত্রাস’ আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিন্দা জানিয়েছিল।একটি আপাত পিকআপ ট্রাক হামলার ঘটনা মনে করা হলেও এটিকে ইসলামবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদীদের মুসলমানদের লক্ষ্য করে উদ্দেশ্যমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, কানাডাযর অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে 'পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে' ট্রাক উঠিয়ে দিয়ে ওই পরিবারের চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ২০ বছর বয়সী একজন কানাডিয়ান ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যারা মারা গেছেন তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে এই হামলা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। সাম্প্রতিক বছরে কানাডায় মুসলিমদের উপর এটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা।

ফেসবুকে ফখরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘আহ্, পৃথিবীতে কোথায় গেলে মানুষ মানুষের হাত থেকে রক্ষা পাবে?ধর্মের জন্য, দলের জন্য, গোষ্ঠীর জন্য মানুষ মানুষকে মেরে ফেলে!. 'একটুও বিবেকটা জাগ্রত হয়না!হায়রে সেরা জীব!’’

ক্ষোভ জানিয়ে সোহাগ আহমেদ লিখেছেন, ‘‘কোন মুসলিমকর্তৃক এই হামলা হলে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যেতো! আর হামলাকারীর ব্যক্তিগতকর্মের ফলে সামগ্রিকভাবে ইসলাম ও মুসলিমদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হতো! অথচ এখানে যে হামলা করেছে তাকে কোন বিশেষণে বিশেষিত করা হচ্ছে না! তার নাম পর্যন্ত মিডিয়াগুলো হাইলাইট করছে না!’’

সৈয়দ নাজমুল হুসাইন লিখেছেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক।পশ্চিমারা শুধু মুসলমানদের মধ্যেই উগ্রবাদি খুঁজে বেরায়। ইহুদি খৃষটানদের মধ্যেও উগ্রবাদ যে কতো ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে আছে; এই নৃশংস ঘটনাটি এর এক অকাট্য প্রমান।’’

মুফীজুল ইসলাম মুহীতের মন্তব্য, ‘‘যদি এটা কোন মুসলিম করতো। এতক্ষণে এই মুসলিমের কারনে হাজারো মুসলিমকে অত্যাচার করতো কানাডা সরকার।। কিন্তু খৃষ্টান হলে মাফ।’’

জিএম শফিউল্লাহ সুমন লিখেছেন, ‘‘এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি। হত্যাকারী এবং তার পিছনে যারা রয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচার করা হোক।’’

ইমরান মল্লিক লিখেছেন, ‘‘বলছি হত্যাকারীর পরিচয় শুধু হত্যাকারী হবে না সন্ত্রাসবাদী হবে? মুসলিম নিয়ে যে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়, এসব তারই ফল।। একটা মাত্র কুড়ি বছরের ছেলের মনমানসিকতায় বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি এত ঘৃণা,বিদ্বেষ।কে বা কারা এই বাচ্চা মগজগুলো ধোলাই হরছে, সেটাও বের করুক কানাডা প্রশাসন।’’

আব্দুল মান্নান লিখেছেন, ‘‘দুঃখজনক হলেও সত্য!আজকের এই হামলার পরে হামলাকারীকে মানসিক প্রতিবন্ধি বা মাদকাসক্ত বলে প্রচার করা হতে পারে।তার বিচারকে নড়বড়ে করে দিতে। আর যদি অন্য কোন জাতি কে মারা হত তাহলে তারা অন্য গন্ধ পাইতেন।’’

হাসিন ফাইয়াজ নুরের মন্তব্য, ‘‘আজ পুরো পৃথিবী ধর্মের নামে ঘৃণায় ভরে উঠছে। অথচ প্রতিটি ধর্মগ্রন্থ খুলে দেখুন, সেখানে ভালোবাসা, দয়া, মানবতার কথা বলা আছে।আহা কতই ভালো হতো, মানুষ যদি জানতো আল্লাহ ঈশ্বর গড একজনই। আর তিনি মানুষের হৃদয়ে আছেন। কাজেই মানুষকে ভালোবাসা উত্তম ইবাদত।’’

উল্লেখ্য, নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন।তাদের একজনের বয়স ৭৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ৪৬ বছর। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং ৪৬ বছর বয়সী একজন পুরুষ রয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ