Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বর্ষা এলো ভাঙছে নদী

সারাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

বর্ষাকাল আজ হলো শুরু। বর্ষার বাহক মৌসুমী বায়ু এসেছে আগেই। সক্রিয় হয়ে জেঁকে বসছে। বাংলাদেশের উপকূলভাগে উত্তর বঙ্গোপসাগরেও মৌসুমী বায়ু এবং মেঘমালা জোরালো। দেশের অধিকাংশ স্থানে এবং উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাতের জোর বাড়ছেই। এরফলে ভরা বর্ষায় বন্যাপ্রবণ দেশের অধিকাংশ প্রধান নদ-নদীতে ধীরে ধীরে বাড়ছে পানি। সেই সাথে বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নদীভাঙন।

দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি জুন (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়) মাসে সারা দেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের ৮টি বিভাগে জুন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধরা হয় মোট ৩ হাজার ৪৮৪ মিলিমিটার। আর পূর্বাভাসে ৩ হাজার ১৩৫ মি.মি. থেকে ৩ হাজার ৮৩০ মি.মি. পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, জুন ছাড়াও বর্ষার মাস জুলাই এবং আগস্টে (আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র) পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গেল মে মাসে সারাদেশে গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে মে পর্যন্ত ৬ মাসে দেশে গড়ে ৮০ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত অর্থাৎ মারাত্মক অনাবৃষ্টি-খরার কবলে পড়ে দেশ।

এদিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গতকাল সোমবার বিহারের দিকে সরে গেছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ স্থানে এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়তে পারে।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে হাতিয়ায় ৪৪ মি.মি.। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৩৫.৭ ডিগ্রি সে.।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বিহার ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

নদীভাঙন ও পানি বৃদ্ধি
ভরা বর্ষায় বন্যাপ্রবণ দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন দিন দিন বাড়ছে। গতকাল পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে পদ্মায় পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা ও এর সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরফলে এ সময়ে এ অঞ্চলের নদীসমূহের পানির সমতল সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। কোথাও কোথাও আকস্মিক বন্যা সংঘটিত হতে পারে।

দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৫৩ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪৩টিতে হ্রাস ও ৪টিতে অপরিবর্তিত থাকে। রোববার ৫৮টি স্থানে পানি বৃদ্ধি, ৩৭টিতে হ্রাস ও ৫টিতে অপরিবর্তিত থাকে। গত ২৪ ঘণ্টায় নদ-নদী অববাহিকায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষাকাল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ