Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর ৪০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২১, ১:৪৯ পিএম

শহরের চেয়ে এখন গ্রামের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর সেই সাথে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রাম পর্যায় থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রাজশাহী মেডিকেলে করোনায় মারা যাওয়াদের বেশিরভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। মৃতদের বেশিরভাগই চিকিৎসাকালে অবস্থা খারাপ থাকছে। তাদের শারীরিক সমস্যা গতবছরের করোনার লক্ষণের চেয়ে আলাদা।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী জানান, বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর ৪০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের। কারণ হিসেবে আমরা দেখছি গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানা, অবাধে সব জায়গায় চলাচল, মাস্ক না পরাসহ অন্য কারণে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানলে শনাক্তের হার কমে অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে বুধবার ১৬ জুন সকাল ৮টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান। এদের মধ্যে সাত জন পুরুষ ও ছয় জন নারী। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর আটজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চার ও কুষ্টিয়ার একজন করে। এ নিয়ে জুনের ১৬ দিনে মারা গেলেন ১৬১ জন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান,
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এখন যে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন তাদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, শারীরিক অন্যান্য সমস্যাও হঠাৎ করে বাড়ছে। শারীরিক অবস্থার নানান ধরনগুলো পরিবর্তন হয়েছে। চিকিৎসার সময় দিচ্ছে না এই ধরন গুলো। হঠাৎ করেই করোনা আক্রান্ত রোগীর অবস্থা বেশিমাত্রায় খারাপ হয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ সাপোর্টের।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. পার্থ মণি ভট্টাচার্য জানান, গতবছর করোনার যেমন লক্ষণ ছিল এবার কিন্তু অনেক বিষয় আলাদা দেখছি। ভর্তির পর থেকেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া এবং অক্সিজেন স্যাচুয়েশন কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক বেশি হচ্ছে।
এদিকে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যু হার কমছে না বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ তাদের। লকডাউনের সুফল পেতে সাত দিন নয়, অন্তত ১৪ দিনের লকডাউনের পরামর্শ দিচ্ছেন হাসপাতাল পরিচালক ও রামেক হাসপাতালের চিকিৎকরা।
হাসপাতাল পরিচালক বলছেন, বয়স্ক মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরুণদের মৃত্যুর হার। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটসহ মোট ১৩টি ওয়ার্ডে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। প্রস্তুত করা হয়েছে আরও একটি ওয়ার্ড, সেখানে ৩৬টি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে আইসিইউ বেড। এখন হাসপাতালে ২০টি আইসিইউ বেডে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে করোনা ও ইউনিটগুলোতে ৮টি টিমে সেবা দিচ্ছেন মোট ৮০ জন চিকিৎসক। সঙ্গে নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন ৫০০ জন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কাছে আরও ১৫ জন চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বুধবার রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, রাজশাহী জেলায় এ পর্যন্ত ১১৪ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে নগরীর ৬৮ জন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী জেলায় এক হাজার ৫৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২১.৭০ শতাংশ। রাজশাহী নগরীতেই গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ২৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রামেক হাসপাতাল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ