Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইনকিলাবে নদী ভাঙ্গনের সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টা পর সচিবের এলাকা পরিদর্শন, খুশী পদ্মাচরের মানুষ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ৯:৫০ পিএম

পদ্মায় নদী ভাঙ্গনের মুখে ৫০ পরিবার, হুমকিতে গোলডাঙ্গী ব্রিজসহ ২ স্কুল। শিরোনামে ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশ হয় গত ১৬ জুন ২০২১ তারিখ।

সংবাদ প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টা পর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব আলম আরা বেগম আজ শুক্রবার সকাল ১০ টায় নদী ভাঙ্গন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর পাউবোর সুপারেনটেন্ড ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ শাহীদুল আলম, পাউবোর ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশল সুলতান মাহমুদ, বিভাগীয় প্রকৌশলী অতনু সরকার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আলতাব হোসেন, ডিক্রীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান মিন্টু ফকির, নর্থচ্যানেল ইউনিয়ন আওয়ামীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোফাজ্জেল হেসেনসহ স্হানীয় নদী ভাঙ্গন কবলিত বহু মানুষ।

এ সময় বাপাউবোর ফরিদপুর নির্বাহী প্রকৌশলী নদী ভাঙ্গন সহ গোলডাঙ্গী ব্রীজের সামনে ভাঙ্গনে জিওব্যাগ
ফলোআপ করান এবং ব্রীজের উওর দিকে তীব্র ভাঙ্গনের বিষয় অবগত করান।

সচিব নিজ চোখে ভাঙ্গনের স্হান দেখেন এবং আন্তরিকতার সহিত সব কথা শুনেন।

ভাঙ্গনের প্রথম স্হানটি ফরিদপুর সদর থানার ডিক্রিরচর ইউপি ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মধ্যবর্তী গোলডাঙ্গী এলাকা।

দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার চরবাসীর শহর আসা যাওরার একমাত্র পথ গোলডাঙ্গী ব্রীজ। এই ব্রীজ থেকে নদী নতুন ভাঙ্গনর ভয়বহতার দৃশ্য তথা গ্রাম দুটি মাত্র দুইশ শত গজ দূরে।

এই ব্রীজ থেকে এক কিলো উওরে তথা শুকুর মৃধার ডাঙী, বাছেদ মোল্যার ডাঙ্গী নামক দুটি গ্রাম গত ১৪৪ ঘন্টায় পদ্মা ভাঙ্গনের কবলে পরে শুকুর আলীর গ্রামটি সম্পূর্ন নদীতে এবং বাছেদের ডাঙ্গীর আংশিক গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হতে বাকি আছে।

ভাঙ্গনের তীব্রতা এমন ভাবে বেড়ে গেছে য়াহা ভয়াবহ রুপ ধারন করছে।

উল্লেখিত, গ্রাম দুটি নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মধ্যে, এই ইউনিয়নের আওয়ামীগের সভাপতি মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমাদের চোখের সামনে গত বছর আরো দুটি গ্রাম পদ্মার বুকে বিলিন হয়ে গেছে।

কথা হয় ঐ এলাকার ভিটে হারা করিম মিয়া, কবির হেসেন, রাহিম মোল্যার সাথে, তারা সকলেই বললেন নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে হলে ভাঙ্গনের স্হান থেকে ১০০ গজ দুরে একটি ডুবোচর আছে। এখান থেকে স্হানীয় জানাশোনা লোক দিয়ে বাংলা ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটতে হবে।

চরবাসী আরো বলেন,ফরিদপুর জেলা প্রশাসক সাহেব এবং সদর ইউএনও সাহেব আমাদের কষ্টের দৃশ্য যদি আমলে নেন এবং বাংলা ড্রেজার দিয়ে ভাঙ্গনের পুর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশের ডুবোচর কেটে বালু মাটি অপসারন করার ব্যবস্হা করেন, তা হলে ভাঙ্গনের তীব্রতা থেকে কাইয়মুদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামটি রক্ষা হয়।

এটি অবশ্যই স্হানীয় লোক দ্বারা ( যারা নদীর তল চিনেন) ভাঙ্গন থেকে পুর্ব অংশের ডুবোচর কেটে বালু মাটি অপসারন করে পশ্চিমাংশে ভাঙ্গনের স্হানে ফেললে কৃত্রিম চর জেগে ভাঙ্গন থামবে বলে স্হানীয়রা মনে করেন।

এই বিষয় কথা হয় ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব,মোঃ মাসুম রেজার সাথে তিনি প্রতিনিধি বলেন, স্হানীয়রা তাদের কষ্টের কথা প্রকাশ করতে পারেন, তবে বাংলা ড্রেজারটা সম্পূর্ণই অবৈধ।

জেলা প্রশাসক মহোদয় আছেন, তিনিই সকলের বিষয়
দেখেন। তিনি ভাঙ্গন ঠেকাতে বিআইডব্লিউটিসির ড্রেজার দিয়ে
ডুবোচর কেটে বালু মাটি অপসারন ব্যবস্হা নিয়েছেন।

ভাঙ্গন ঠেকাতে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়াও হচ্ছে।

এ প্রতিনিধি ঘন্টাব্যাপী ভাঙ্গন কবলিত স্হান ও ভাঙ্গনের কবলে পরা এলাকা ট্রলারযোগে পরিদর্শন কালে বাড়ীঘর সহ সবকিছু হারিয়েছেন এমন একাধিক চরবাসীর সাথে কথা বলেন।

তারা ইনকিলাব কে জানান, বিআইডব্লিউটিসির অপরিকল্পিত ড্রেজিং আমাদের কোন কাজে আসবে না।

শুধুই দিন রাত সরকারের তেলা ফুড়াচ্ছে। কাজের কাজ হচ্ছে প্রতিদিন নতুন নতুন বাড়ী ঘর পদ্মার বুকে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।

চরবাসীর কেন বাংলা ড্রেজার দিয়ে ডুবোচর কাটতে বলেন এত লাভ কি?

তাদের যুক্তি এমন যে, বিআইডব্লিউটিসির ড্রেজার দিয়ে যেনারা ড্রেজিং করছেন তারা আমাদের এলাকায় নতুন এবং স্হানীয় নদীর তলদেশ সম্পর্কে এদের কোন ধারনা নাই।

ধারনার উপর নদীর জল থেকে মাটি কাটে। কোন স্হানে ডুবোচর এবং কোন স্হান গভীর এটা খড়ার সিজনে স্হানীয়দের খুব জানা।

এবং এই স্হান দিয়ে গত দুই মাস আগেও পায় হেঁটে নদীর এপার ওপার গেছেন স্হানীয় ড্রেজার মালিক ও ড্রাইবাররা এদের দ্বারা যদি বাংলা ড্রেজার দিয়ে ডুবোচর কেটে ভাঙ্গনের গভীর জায়গায় বালু মাটি ফেলানো যায় তাহলে নদীভাঙ্গনের তীব্রতা কমে কৃত্রিম চর জেগে উঠবে বলে এরা মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ