Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুনের নেপথ্যে অনৈতিক সম্পর্ক!

মা-বাবা-বোনকে হত্যা মেহজাবিন ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

রাজধানীর কদমতলীর মুরাদনগরে মা-বাবা ও বোনকে হত্যার ঘটনায় আরেক মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম ও তার স্বামী শফিকুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মেহজাবিনের চাচা সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা করেন। পরে গতকাল কদমতলী থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই জাকির হোসাইন মেহজামিন মুনের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে মেহজামিন মুনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে মা-মেয়ের দ্বন্দ্ব, স্বামীর সঙ্গে ছোটবোনের পরকীয়া সন্দেহ ও সম্পর্কের অবনতি এবং আগের স্বামীকে হত্যার মানসিক যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতেই মেহজাবিন পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে ধারণা পুলিশের। আর সেই পরিকল্পনা থেকেই কদমতলী হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি মেহজাবিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাকি এ কথা স্বীকারও করেছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহত মৌসুমী ইসলাম উচ্চবিত্তদের মেয়ে সাপ্লাই দিতেন। তার মেয়ে মুন ছিলেন এক নেতার বেডপার্টনার। মা-মেয়ের মধ্যে দেহব্যবসা নিয়ে ঝামেলা হয়। এর রেশ ধরে মুন পরিকল্পিতভাবে সবাইকে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। জানা গেছে, মুনের মা মৌসুমী সাবেক একজন বিএনপি নেতার পিএস হত্যা মামলার আসামি। মুনের বাবা মাসুদ রানা দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি স্ত্রী-মেয়ের ব্যবসার বিষয় জানতেন। পুলিশ আরও জানায়, লাশগুলো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিষাক্ত কিছু প্রয়োগের আলামত পাওয়া গেছে। আলামতগুলো পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

অপরদিকে মেহজাবিন ইসলাম মুন গ্রেফতার হলেও তার স্বামী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশি পাহারায় রয়েছেন। কদমতলী থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধারের সময় মেহজাবিন ইসলাম মুনকে আটক করা হয়। তাকে আটকের পর মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তার স্বামী শফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তাকে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর গ্রেফতার দেখানো হবে। মেহজাবিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার স্বামী শফিকুল ইসলামকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ জানায়, অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন মেহজাবিন মুন। মা-বাবাসহ ছোট বোনকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন দেন মুন নিজেই। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কদমতলীর মুরাদপুর হাজী লাল মিয়া সরকার রোড এলাকা থেকে স্বামী, স্ত্রী ও মেয়ের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। আটক মেহজাবিন থাকেন আলাদা বাসায়। মায়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন তিনি।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, মেহজাবিন আত্মস্বীকৃত একজন খুনি। স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো ছিল না। বোনের সঙ্গে তার স্বামীর অবৈধ কোনো সম্পর্ক ছিল কি না সে বিষয়ে শফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ