Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দুই বছরের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ৬:২৫ পিএম

উত্তোলন বৃদ্ধি সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে গত দুই বছরের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বুধবার নিউ ইয়র্কের ব্রেন্ট ক্রুড প্রতিব্যারেল ৭৬ ডলারে বিক্রি করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের পর এটি সর্বোচ্চ দাম। মার্কিন অপরিশোধিত তেলের মজুদ থেকে গত সপ্তাহে ৭৬ লাখ ব্যারেল তেল কমে ৪৫ কোটি ৯১ লাখ ব্যারেলে দাঁড়ায়। দেশটিতে ভ্রমণ প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তেলের মজুদ কমে যায় এবং এতেই দাম বেড়ে গেছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করায় ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ভ্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার জন্য বিমান সংস্থাগুলোর বাড়তি তেলের (জ্বালানি) প্রয়োজন হচ্ছে। এ কারণে তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি। এদিকে বুধবার দ্য আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের তেল শোধনাগার কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দুটি বাজার সূত্রে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় তেল কোম্পানি বিশেষত রয়্যাল ডাচ শেল তাদের বার্ষিক সাত দশমিক দুই মিলিয়ন ব্যারেল জ্বালানি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তেলে দাম বাড়ছে।

মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ব্রেন্ড ক্রুডের দাম ৮১ সেন্ট বা এক দশমিক এক শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৫ দশমিক ৭৬ ডলারে পৌঁছেছে। গত ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই সূচক ৪৯ সেন্ট বা দশমিক সাত শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৩ দশমিক ৩৪ ডলারে পৌঁছেছে, যা ও গত ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে সর্বোচ্চ দাম। করোনার কারণে ওপেকের তেল উত্তোলন হ্রাস করায় চলতি বছরে জ্বালানি তেলে ৪৫ শতাংশ লাভ করেছে। যদিও কোভিড বিধিনিষেধ সহজ করায় চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তেলের চাহিদা আরও বাড়বে। এ লক্ষে সম্প্রতি ‘ওপেক+’ আগামী আগস্ট থেকে তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও বুধবার ওপেকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১ জুলাই ওপেক প্লাসের শীর্ষ সভায় পরবর্তী বছরের তেল উত্তোলনের বিষয় চূড়ান্ত হবে।

এক দিন আগেই মঙ্গলবার কাতার ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দিয়ে বড় বড় তেল কোম্পানির প্রধানরা ‘এখনই তেল খাতে বিনিয়োগ না বাড়ালে তেলের দাম আরও বেড়ে যাবে’ বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন। তারা বলছেন, তেল খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের অভাবে তেলের সরবরাহ কমে যেতে পারে এবং তার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়বে। রয়্যাল ডাচ শেল এবং টোটাল এনার্জি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি এবং তারা ভবিষ্যদ্বাণী করছে যে, অপরিশোধিত তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে অস্থিতিশীল বাজার পরবর্তীতে আবার নিচে নেমে আসতে পারে।

এক্সন মবিল কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড্যারেন উডস বলেন, প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের অভাবে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে এবং এতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়বে এবং পরবর্তীতে আবার সেটি ঠিক হয়ে যেতে পারে। তবে এ সংক্ষিপ্ত সময়ে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রেডিং হাউস ট্রাফিগুরাড গ্রুপ বলছে, আগামী বছর নাগাদ তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ব্যাংক অব আমেরিকা করপোরেশনও চলতি সপ্তাহে পূর্বাভাস দিয়েছে যে, তেলের দাম ওই পর্যায়ে যেতে পারে। একই কথা বলেছে গোল্ডম্যান সাচ গ্রুপও। সূত্র: আবর নিউজ, আল জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জ্বালানি তেলের দাম

১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৩০ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ