Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লৌহজংয়ে নয়ন কসাইয়ের কাছে তিন শিশু ধর্ষণ

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২১, ৬:৪১ পিএম

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ১৫ দিনের ব্যবধানে তিন শিশু ধর্ষণ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ তিন শিশুকে নয়ন কসাই (৪০) নামে একই ব্যক্তি পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আর এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার পদ্মা সেতুর কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

জানা যায়, শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ৬ বছরের শিশুকে নয়ন মোবাইলে ভিডিও দেখানোর কথা বলে ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি বাসায় এসে মাকে ঘটনা বললে শিশুটির মা নয়নকে জুতা পিটা করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে পাশের বাড়ির ৭ বছরের এক শিশু ও সাড়ে ৪ বছরের আরেক শিশুও একই কায়দায় নয়নের লালসার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে ।

পরে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রিনা বেগম, পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলতাফ শেখ, সাধারণ সম্পাদক দাদন তালুকদারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সালিসে বসেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই ধর্ষক নয়ন কসাই পলাতক রয়েছে। যার ফলে সেদিন রাতে সালিস করা হয়নি। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারকে সালিসগণেরা এসব ঘটনা ফাঁস না করার জন্য বলে আসেন।

আজ (২৬ জুন) শনিবার দুপুরে সরজমিনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা থানায় কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা করতে চান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন গৃহবধূ জানান, সালিশগণ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে লোভ ও ভয় দেখিয়েছে, যার কারণে তারা কিছু বলতে কিংবা মামলা করতে চাইছে না। স্থানীয়রা ধর্ষক নয়নের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন।

পুনর্বাসন কেন্দ্রের সভাপতি আলতাফ শেখ জানান, আমি এ ঘটনা থানা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। ইউপি নারী সদস্য রিনা বেগম বলেন, আমরা কোনো বিচার করিনি। আমিও ধর্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।

তিনটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ আনা নয়ন মাওয়া বাজারে গরু-খাসির মাংস বিক্রেতা। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। নয়ন বিবাহিত। তার স্ত্রী, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। মেয়েটি বিবাহযোগ্যা। স্ত্রী বিউটি পার্লারে কাজ করেন। নয়নের স্ত্রী যখন পার্লারে যায়, তখনই নয়ন মোবাইল ফোনে শিশুদের কার্টুন দেখানোর লোভ দেখিয়ে নিজের ঘরে ডেকে এনে ধর্ষণ করেন।

পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা নাসির খান বলেন, এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে সম্প্রতি অপরাধ বেড়ে গেছে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা রয়েছে। গত দুই বছরে এরকম ৫/৬টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় অপরাধীরা দুঃসাহস দেখাচ্ছে।

শিশু ধর্ষণের ঘটনায় লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, ধর্ষণের ঘটনা শোনে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। সর্বশেষ শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার সময় ধর্ষককে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। কিন্তু অপরাধী নয়নকে পায়নি। ওসি আরও জানান এখনও মামলা হয়নি তবে ভিক্টিমের পরিবারের সাথে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ