Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২১, ১২:০৪ এএম

‘দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সু-চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার এই বক্তব্যে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছাকৃত প্রতিবন্ধকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে আবেদন করা হলে তিনি বলেছিলেন ‘সরকার যে শর্তে তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন, সেই শর্ত শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না। এটা নির্ভর করছে একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্তের উপর’ এবং তিনি আরো বলেছিলেন, ‘সরকার বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে’। আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্য দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে সেসময় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল। কিন্তু ২/১ দিন পরই তিনি ইউটার্ন নিয়ে বলেছেন, ‘সম্ভব নয়’ এবং এখন বলছেন ‘ক্ষমা চাইতে হবে’। এগুলো সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ এবং রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রিত ও কলুষিত করার ব্যর্থ চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। যিনি কোনো অপরাধই করেন নাই তাঁর ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যা ভ্রষ্টাচার ছাড়া কিছুই নয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার যখন যেটা মনে করে তখন সেটি জনগণের উপর চাপিয়ে দেয় এবং একইসাথে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও তাই ঘটছে। আমরা আইনমন্ত্রীর সংসদে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করবার আহবান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ১/১১’র সরকার বাংলাদেশকে বিরাজনীতি করণের অংশ হিসেবে মাইনাস-টু ফর্মূলার বাস্তবায়ন ঘটাতে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাঁদেরকে দন্ডিত করে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র করেছিল। ২০০৮ সালে ১/১১’র সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনার মামলাগুলো বিভিন্নভাবে শেষ করে অপরদিকে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো জিইঁয়ে রাখা হয় এবং ১/১১’র সরকারের দায়ের করা চারটি মামলার সাথে পরে আরও ৩২টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে সেগুলোকে তড়িঘড়ি করে বুলেটের গতিতে চূড়ান্ত রায়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর মধ্য থেকে ২টি মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ফরমায়েসী রায় দিয়ে তাঁকে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয় এমনকি তাঁর জামিনের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নিয়ে কারাবাস দীর্ঘায়িত করা হয়। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন করতে যারপর নাই চেষ্টা করেছে এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছে।

প্রিন্স বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রারম্ভে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার শর্তসাপেক্ষে তাদের দেয়া ফরমায়েশী রায় স্থগিত করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেও কার্যত: তিনি গৃহবন্দী। সরকার প্রথম দফায় বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় থেকে চিকিৎসার শর্ত দিলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের যেকোন হাসপাতালে চিকিৎসার শর্ত দেয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ। কোভিড পরবর্তী জটিলতা নিরসন হলেও বর্তমানে তিনি লিভার, কিডনী ও হার্টের বিভিন্ন জটিলতায় তীব্র অসুস্থ অবস্থায় নিজ বাসভবনে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে আরও উন্নত সেন্টারে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। তাই দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত এই নেত্রী যিনি স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন, দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছেন, যিনি বারবার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয়েছেন, যাঁর স্বামী রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং যিনি নিজেও মুক্তিযুদ্ধের সময় বন্দী ছিলেন-তাঁর উন্নত ও সুচিকিৎসা জনগণের প্রাণের দাবী।

তিনি বলেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, ভয় পায় তাঁর জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বকে। এজন্যই তারা ফরমায়েশী রায়ের ওপর ভিত্তি করে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখে তাঁকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখতে এবং তাঁর উন্নত চিকিৎসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাঁকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায়। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে তাঁর সমস্ত দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। ক্ষমতা জবরদখলকারী সরকারের মন্ত্রীরা রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলসহ বিরোধী দল ও জনগণকে নেতৃত্বশুন্য করার ষড়যন্ত্র করছে, এটি জনগণ বরদাশত করবে না। এসময় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আবদুস সালাম আজাদ ও সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু উপস্থিত ছিলেন।

 

 



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
    ভারতীয় সংসদীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে,রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি চালু করতে হবে,ডান পন্থী সব দল এক হতে হবে,তারেক জিয়া দেশে আসবে,আসার পর বামপন্থী আওয়ামী লীগ বাকশালি ভারতীয় সংসদীয় দুষকৃতকারী রাজনৈতিক আমলাদের সংগ্রাম করে হঠাতে হবে ।সংবিধান সংশোধন করতে হবে।রাষ্ট্র পতি পদ্ধতি চালু করতে হবে। ডান পন্থী দলগুলো এক হয়ে নির্বাচন দিতে হবে,যে জনগণের ভোটে জীতবে সে রাষ্ট্র পতি হয়ে ক্ষমতা চালাবে,এই ভারতীয় সংসদীয় পদ্ধতি মানি না মানবে না,বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে ডান পন্থী দলগুলো এক হয়ে এই ভারতের পলিটিকস্ এর লুঠ পাঠের সংসদীয় পদ্ধতি জরুরি বাতিল করতে হবে,সে জন্য তারেক জিয়া দেশে আসা জরুরি,
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
    ভারতীয় সংসদীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে,রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি চালু করতে হবে,ডান পন্থী সব দল এক হতে হবে,তারেক জিয়া দেশে আসবে,আসার পর বামপন্থী আওয়ামী লীগ বাকশালি ভারতীয় সংসদীয় দুষকৃতকারী রাজনৈতিক আমলাদের সংগ্রাম করে হঠাতে হবে ।সংবিধান সংশোধন করতে হবে।রাষ্ট্র পতি পদ্ধতি চালু করতে হবে। ডান পন্থী দলগুলো এক হয়ে নির্বাচন দিতে হবে,যে জনগণের ভোটে জীতবে সে রাষ্ট্র পতি হয়ে ক্ষমতা চালাবে,এই ভারতীয় সংসদীয় পদ্ধতি মানি না মানবে না,বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে ডান পন্থী দলগুলো এক হয়ে এই ভারতের পলিটিকস্ এর লুঠ পাঠের সংসদীয় পদ্ধতি জরুরি বাতিল করতে হবে,সে জন্য তারেক জিয়া দেশে আসা জরুরি,
    Total Reply(0) Reply
  • Pashi Monilal ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৫ এএম says : 0
    "খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না" -বিএনপি। বিএনপি খালেদার জন্য কি করেছে? জেল থেকে বের করেছে তার আপন জনেরা। চিকিৎসা নিতে বিদেশে নেওয়ার ও ব্যবস্থা করছে তার আপন জনেরা। এতে বিএনপির ভুমিকা কি? বর্তমানে তারা নিজেদের মধ্যে কামরা কামরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shahinur Islam ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৬ এএম says : 0
    তাহলে ভেতরে অবস্থান করুন ঈদের পর!
    Total Reply(0) Reply
  • Kenan Shah ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৬ এএম says : 0
    অবৈধ আইনমন্ত্রীর উচিৎ বেগম খালেদা জিয়ার কাছে রাস্ট্রপক্ষ হিসেবে ভূয়া মামলার জন্য ক্ষমা চাওয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • জিয়া সৈনিক আবদুল হাই ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৬ এএম says : 0
    তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে প্রশ্নই আসে না ক্ষমা যদি চাইতে হয় আল্লাহর কাছে চাইবে
    Total Reply(0) Reply
  • Shafiqul Islam ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৭ এএম says : 0
    বর্তমান আইনে বিনা দুশে দুশি বানিয়ে এত গুলা আলেম কে হত্য করেছে এবং জেল জুলুম অব্যাহত আছে তার পরও কি কলিজা কাপেনা জুর করে দুশি বানাতে চায় আল্লার গজব তদের উপর আসবে ইনসাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ