Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে এলপি গ্যাস নিয়ে নৈরাজ্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড়শ টাকা বেশী বিক্রি হচ্ছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ জুলাই, ২০২১, ২:০৬ পিএম

সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে অতি সিমিত সরকারী এলপি গ্যাস সরবারহের সুযোগে বেসরকারি কোম্পানীর গ্যাস নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। ‘এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন’ জুলাই মাসে সারাদেশে এলপি গ্যাসের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৯১ টাকা নির্ধারন করলেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন কোম্পানীর পরিবেশকরা ১ জুলাই থেকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ১ হাজার টাকায় ১২ কেজির সিলিন্ডার বিক্রী করছেন। ফলে সাধারন ভোক্তাদের ১ হাজার ৫০ টাকা করে ঐসব গ্যাস কিকনতে হচ্ছে। সমগ্র দকিক্ষণাঞ্চলে এলপি গ্যাস নিয়ে একটি সিন্ডিকেটের কারণে ভোক্তাদের সরকারী নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫৯ টাকা বেশী দামে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরকারী পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানী সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও এলপি গ্যাস বিপনন করলেও তার সরবারহ প্রায় বন্ধ হওয়ায় বেসরকারী সিন্ডিকেট সক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। উপরন্তু সরকারী এসব কোম্পানীর গ্যাস সিলিন্ডারগুলো এতটাই পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ, তা এখন ব্যেশীরভাগ ডিলার ও সাধারন ভোক্তাগন গ্রহন করতে চচ্ছেন না।
একাধীক খুচরা ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, বেসরকারি কোম্পানীর এলপি গ্যাস বরিশালের পরিবেশকদের সিন্ডিকেট চক্রটি গত ২৫ জুনের পরই খুচরা ব্যবসায়ীদের সিলিন্ডার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ১ জুলাই সকাল থেকে আগের দামের চেয়ে দেড়শ টাকা বেশী দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের সিলিন্ডার সরবরাহ শুরু করেছেন বেসরকারী কোম্পানীর পরিবেশকরা।
ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, বেসরকারি কোম্পানীর পরিবেশকদের এই সিন্ডিকেট কয়েক বছর ধরে বরিশালে এলপি গ্যাস নিয়ে অনৈতিক ব্যবসায় সক্রিয়। তারা প্রতি মাসের ২৭-২৮ তারিখের পরই খুচরা ব্যবসায়ীদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে নতুন মাসের ১ তারিখ থেকে দাম বৃদ্ধি করে থাকে। মজুদ থাকা সিলিন্ডার দিয়ে খুচরা ব্যবসায়ী সহ ভোক্তাদের কাছ থেকে পরিবেশকরা কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অরিয়ন গ্যাস কোম্পানীর বরিশালের পরিবেশক মো.তরিকুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোম্পানী থেকেই দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কারনে তারা খুচরা বিক্রেতাদেরও দিচ্ছেন বেশী দামে। সরকারের মূল্য নির্ধারনের বিষয়টি সম্পর্কে ঐ পরিবেশক বলেন, ‘এটা কোম্পানী ও সরকারের মধ্যে বোঝাপড়া হবে। তারাই সরকাকে ম্যানেজ করবে’।
এলপি গ্যাস কোম্পানী মেট্রোম্যাক্সের পরিবেশক মলয় সাহা সহ আরও কয়েকজন পরিবেশকও দাবী করেন, কোম্পানী থেকে দাম বৃদ্ধি করায় তাদের কিছু করার থাকেনা। তবে বসুন্ধরা গ্যাস কোম্পানীর পরিবেশক মো. রাসেল হোসেন বলেছেন, তারা জুন মাসের দর ৮৮০ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের এখনও সিলিন্ডার দিচ্ছেন। দাম বৃদ্ধির বিষয়টি কোম্পানী থেকে এখনও জানানো হয়নি।
এলপি গ্যাস নিয়ে বেসরকারী কোম্পানীগুলোর অতিরিক্ত মুনাফা বন্ধে সরকার গত মে মাস থেকে সারাদেশে ভোক্তাদের কাছে বিক্রির একটি মূল্য নির্ধারন করে দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছেনা। জুন মাসে খুচরা বিক্রেতাদের জন্য এলপিজি’র মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল ৮৪০ টাকা। তখন বরিশালের সিন্ডিকেট চক্রের কারনে খুচরা বাজারে বিক্রি হতো ৯০০ টাকা দরে। বুধবার জুন মাসের চেয়ে আরও ৪৯ টাকা বৃদ্ধি করে খুচরা মূল্য নির্ধারন করেছে ৮৯১ টাকা। অথচ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে বৃদ্ধি পেল প্রতি সিলিন্ডারে দেড়শ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ