Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অসময়ে শিম চাষে দৃষ্টান্ত স্থাপন

প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে

দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়ার গোলজার হোসেন বাবলু (৬০) অসময়ে জমিতে শিমগাছ চাষ করে গ্রামীণ জনপদে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বগুড়া জেলার শস্য ভা-ার এলাকা হিসেবে পরিচিত দুপচাঁচিয়া উপজেলা। এই উপজেলায় শীত মৌসুমে বিভিন্ন রবি শস্যসহ সবজির সাথে শিমের চাষ ব্যাপক হারে হয়ে থাকে। ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটিয়েছে উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়ার মৃত জহির উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে গোলজার হোসেন বাবলু (৬০)। তিনি গ্রীষ্মের কাঁক ফাঁটা রোদ্রের মধ্যে নিজ এলাকায় ২ বিঘা জমিতে অটো হাইব্রিড জাতীয় শিম চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। উক্ত জয়পুরপাড়ায় সরেজমিনে গিয়ে গোলজার হোসেন বাবলুর সাথে একান্ত এক সাক্ষাতকালে “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, তিনি একটি পত্রিকার মাধ্যমে পাবনার মুলাডুলা নামক স্থানের জনৈক ব্যক্তির অটো হাইব্রিড শিম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার খবর জানতে পারেন। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেন। মুলাডুলি গিয়ে ওই ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করে অটো হাইব্রিড শিম চাষের পদ্ধতি জেনে নেন। ওই এলাকা থেকে ৩৫০ টাকা কেজি ধরে ২ হাজার ৫শ’ টাকার অটো হাইব্রিড শিমের বীজ ক্রয় করে। ক্রয়কৃত শিমের বীজগুলো জ্যৈষ্ঠ মাসে তার বাড়ি সংলগ্ন ২ বিঘা জমিতে রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন। বীজগুলো থেকে চারা বের হয়। তিনি চারাগুলোর গোড়া মাটি দ্বারা উচুঁ করে বেঁধে দেন। চারাগুলো আরো বড় হতে থাকলে গুনার সাহায্যে লাইলনের রশি দিয়ে মাঁচা (স্থানীয় ভাষা) তৈরি করে। শ্রাবণের প্রথম দিকে চারাগুলো বড় হয়ে মাঁচায় শিমের গাছগুলো উঠে যায় এবং গাছে ফুল ধরতে থাকে। শ্রাবণের শেষের দিকে ফুল থেকে পূর্ণাঙ্গ ফল হয়ে তা শিমে রূপান্তরিত হয়। তিনি আরো জানান, তার ২ বিঘা জমিতে অটো হাইব্রিড শিম চাষ করতে বীজ, কামলা (শ্রমিক), বাঁশ, গুনা সহ প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনি তার রোপণকৃত জমি থেকে শিম উত্তোলন শুরু করেছেন। তা বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রিও করেছেন। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১ মণ ৫ কেজি করে শিম জমি থেকে উত্তোলন তা স্থানীয় হাটে বিক্রি করে থাকেন। এতে ইতিমধ্যেই তিনি প্রায় লক্ষাধীক টাকার শিম বিক্রয় করেছেন বলে জানান। তবে ভাদ্র মাসের প্রচ- গরমে শিম গাছের ফুলগুলোতে পচন ধরে এতে তিনি কিছুটা হতাশা হয়ে পড়েন। কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগ করে গাছগুলোকে আবার সতেজ করে তুলেছেন। শীতের আমেজ পড়ায় গাছগুলো সতেজতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আশা করছেন এই শীত মৌসুমে গাছগুলোতে ফলন আরো বাড়বে। আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত গাছগুলো থেকে শিমের ফলন পাবেন। এতে তার খরচ বাদ দিয়েও প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা তার আয় হবে বলে আশা করছেন। অসময়ে এই শিম চাষ করায় তিনি এলাকায় নতুন দিগন্ত সৃষ্টির পাশাপাশি এলাকার সব শ্রেণির মানুষের কাছে তার পরিচিতি ঘটেছে। কঠোর পরিশ্রম সততা আর নিষ্টার সাথে যে কোন কাজ করলে সফলতা আসেই তারই দৃষ্টান্ত গোলজার হোসেন বাবলু। আর তার এই পথকে অনুসরণ করে অসময়ে এই অটো হাইব্রিড শিম চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় অনেকেই তার কাছে থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।



 

Show all comments
  • md rubel khan ২৯ জুলাই, ২০১৭, ৯:২২ পিএম says : 0
    কৃষক গুলজার হোসেন বাবলু ভাই এর মোবাইল নাম্বা্রটা দেওয়া যাবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অসময়ে শিম চাষে দৃষ্টান্ত স্থাপন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ