Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হাসপাতালে এ ধরনের নৈরাজ্য চলতে পারে না : সংসদে ফরাজী

প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্বাচিপ করলে চিকিৎসা সেবা দিতে হয় না
স্টাফ রিপোর্টার : স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী সরকারি হাসপাতালগুলোতে নৈরাজ্য চলার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এ ধরনের অবজ্ঞা ও নিষ্ঠুর আচরণ চলতে পারে না। দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের বিচার করতে হবে। এ নিয়ে কমিটি গঠনেরও দাবি করেন তিনি।
গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। ফরাজী বলেন, ঢাকা মেডিকেলে এক রোগী ভর্তি হলো। কিন্তু ডাক্তার চিকিৎসা দেয়ার আগেই হাসপাতালের সুইপার তাকে ইনজেকশন দিল। পরে তিনি মারা গেলেন। এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
তিনি বলেন, হাসপাতালের ডাইরেক্টর সাহেব কী করেন। ডিজি সাব কী করেন? আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষ একজন মন্ত্রী। একসময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একসময়কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সন্তান মো. নাসিমের উপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। তিনি শক্তিশালী একজন নেতা। কিন্তু তার অধীনে যারা কাজ করেন তারা ঠিকভাবে কাজ করছেন না। এজন্য দেশের সব মানুষ দুঃখিত। হাসপাতালে এ ধরনের নৈরাজ্য চলতে পারে না। তারা স্বাচিপের দায়িত্ব পালন করলে আর জনগণকে চিকিৎসা সেবা দিতে হয় না। হাসপাতালে চিকিৎসকরা চিকিৎসা করবেন। তার পরিবর্তে যদি যার কোনো অক্ষরজ্ঞান নেই এ ধরনের ব্যক্তি চিকিৎসা দেয় এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর হতে পারে না।
তিনি বলেন, তাই আমি বলছি, এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে শুধু ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেবেন। সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করবেন। এতে সংসদ সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে তা বের করতে হবে। এখানে ডাইরেক্টর ডিজি তারাই কিন্তু দায়ী। অর্থাৎ হাসপাতালগুলো দায়িত্বে যারা আছেন তাদেরই এ দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। মন্ত্রী এই ব্যবস্থা করে সমগ্র জাতিকে জানাবেন। দায়িত্ব পালনের অবহেলার জন্য নিষ্ঠুরতার জন্য তাদের শাস্তি দিতে হবে।
সড়ক, রেল এবং নদীপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায় কার?
ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি তাহজিব আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘মহান সংসদের কাছে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা, যাদের ঘামে, শ্রমে ও রক্তে আমাদের এই নগর সভ্যতা, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমাদের এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, তাদের কি বছরে দুবার ঈদ উদযাপনের লক্ষ্যে নিরাপদে, নির্বিঘেœ বাড়ি যাওয়ার অধিকার নেই?’
তিনি বলেন, ‘এবার ঈদের পূর্বে বাড়ি ফেরার সময় এবং ঈদ উদযাপনের পরে কর্মক্ষেত্রে ফেরার সময় কী নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। ঈদের সময় অধিক যানবাহনে কিছুটা দুর্ভোগ হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে যাত্রীদের ত্রাহি নাভিশ্বাস উঠবে, এটি কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।’
স্বতন্ত্র এ সংসদ সদস্য বলেন, তারপরে ঘাট পারাপারের সময় দেখবে ফেরিতে উঠতেই রাত পার হয়ে গেছে। অজানা কারণে কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি নেই এবং ফেরিঘাটগুলো বিকল। এটি কর্তৃপক্ষের অবহেলা, না অযোগ্যতাÑজানি না। কিন্তু ঘরমুখো যাত্রীদের কাছে এটি নির্মম তামাশাই মনে হয়েছে। তারপরেও যারা নিরাপদে বাড়ি গিয়েছেন এবং বাড়ি থেকে নিরাপদে ফিরেছেন, তারা নিশ্চয়ই নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করছেন। কারণ সড়ক, রেল এবং নদীপথ এবার বরাবরের চেয়ে অনেক বেশি রক্তাক্ত হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্টমতে, সড়ক, রেল এবং নদীপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৬৪ জন এবং আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি। এই অযাচিত মৃত্যুর দায় কে নেবে? কায়েমি স্বার্থের কাছে আত্মসমর্পণকারী মন্ত্রীরা, অযোগ্য এবং দায়িত্বহীন সরকারি কর্মকর্তা, মুনাফালোভি বাসমালিক, অপেশাদার, উচ্ছৃঙ্খল এবং বেপরোয়া বাসচালকরা? যারা বছরে দুবার মাটির টানে, শেকড়ের সন্ধানে বাড়ি ফিরতে চায়? এতোগুলো নিষ্পাপ প্রাণ অকালে ঝরে গেল, কিন্তু, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোনোরকম কার্যকর প্রতিক্রিয়া আমরা পাইনি।
তিনি বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেই এমন নজির আছে যে, রেল দুর্ঘটনার পরে রেলমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী নিজ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু, যোগাযোগ খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আমাদের কোনো মন্ত্রীকে সামান্য দুঃখ প্রকাশও করতে শুনিনি।
স্বতন্ত্র এই সংসদ সদস্য আরো বলেন, আমাদের সেতুমন্ত্রী গাড়ি চালকদের কখনো রাস্তার রাজা, কখনো আলেকজান্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমার প্রশ্ন হলোÑরাস্তায় যদি এতো প্রতাপশালী আলেকজান্ডারই থাকে, তাহলে মন্ত্রী-মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোথায়?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাসপাতালে এ ধরনের নৈরাজ্য চলতে পারে না : সংসদে ফরাজী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ