Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বক্তব্যে লেশমাত্র সত্যতা নেই -বিএনপি

ভোয়া’য় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার

প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যে সত্যতার লেশমাত্র নেই বলেছে বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকায় (ভোয়া) প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, এখানে (বাংলাদেশ) স্বাভাবিক পরিস্থিতি একেবারেই নাই। আমরা সভা-সমাবেশ-মিছিল- এটা একেবারেই আমরা করতে পারি না। কখনো কখনো এটা একেবারে সীমাবদ্ধ সময়ের মধ্যে করা যায়। বাইরে তো সমাবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। একটা ঘরের মধ্যে, একটা সীমাবদ্ধ জায়গার মধ্যে এটা ২৪ ঘণ্টা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টা আগে আমরা অনুমতি পাই। স্বভাবগতভাবে প্রধানমন্ত্রী তার মতো করে বক্তব্য দিয়েছেন যার মধ্যে সত্যতার কোনো লেশমাত্র নেই। আমি বলব, দেশে গণতন্ত্র কতটুকু আছে, এটা এখানে মিডিয়ার বন্ধুরা যারা আছেন তারা জানেন, জনগণ জানেন, রাজনৈতিক দলগুলো জানেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়েস অব আমেরিকা’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা তো কারও কাছ থেকে কথা কেড়ে নিচ্ছি না। যার যা ইচ্ছা, কথা বলেই যাচ্ছে। তারা মিটিং করছে, মিছিল করছে, সবই তারা করছে। রাজনীতির যথেষ্ট সুযোগ আছে, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নাই।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন অফিসে এই সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয় যা শুক্রবার ভয়েস অব আমেরিকা প্রকাশ করে।
দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা শামসুজ্জামান দুদু ভয়েস অব আমেরিকা’র সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ভয়েস অব আমেরিকা একটি আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম, তারা জেনে-বুঝে প্রধানমন্ত্রীকে ‘দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে কিনা’ এরকম প্রশ্নটা করেছেন। তারা গণতন্ত্রের উন্নয়ন, গণতন্ত্রের প্রয়োগ-প্রতিষ্ঠা এগুলো যদি স্বাভাবিক থাকতো তাহলে সে ধরনের প্রশ্ন তারা করতো? এখানে যেহেতু সংগঠনের অধিকার নেই, মত প্রকাশের অধিকার নেই, সভা-সমাবেশ করার অধিকার নেই, গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির ছিঁটে-ফুটা নেই, এটা জানে বলে তারা এ ধরনের প্রশ্ন করেছেন।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে ইউনেস্কো। এই প্রকল্প হলে তাতে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে উল্লেখ করে প্রকল্পটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সরকার গায়ের জোরে এবং জনস্বার্থ ও সন্দুরবনের ঝুঁকিকে পাত্তা না দিয়ে রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে অনঢ় অবস্থান দেখাচ্ছে- যা গোটা জাতিকে বিস্মিত করেছে।
ইউনেস্কো বলেছে, তাদের কাছে যতটুকু তথ্য ও প্রতিবেদন এসেছে তার ভিত্তিতেই তারা নিশ্চিত যে, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সুন্দরবন রক্ষার্থে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাবের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে সংলাপ চেয়েছি। গণতন্ত্র মানে আলোচনা, গণতন্ত্র মানে সংলাপ, গণতন্ত্র মানে আপোষ। আমরা একটা নির্বাচন চাই, আমরা ভোট দিতে চাই, সেই পরিবেশটা চাই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পরে এই সরকারের মনোনীত নির্বাচন কমিশন বা এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কী হবেÑ নতুন করে বলার অবকাশ নাই।
সেজন্য আমরা চাইছি, সবার অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন। সবাই যাতে ভোট দিতে পারে। আমার নেত্রী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নাম নিয়ে যদি আপত্তি থাকে, আমাদের কোনো অসুবিধা নাই, অন্যকোনো নামে হতে পারে। এটা সরকার, বিরোধীদল, পেশাজীবী, সাংবাদিক নানা পেশার মানুষকে যদি মিলে উদ্যোগ নিলে একটা কিছু হতে পারে। তড়িঘড়ি করে নির্বাচন করার পরিস্থিতি থেকে আমরা বেরুতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন চাই, মধ্যবর্তী না, এই সরকারের অধীনে না। একটি গ্রহণযোগ্য সরকারের অধীনে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে এবং একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন চাই।
কারাবন্দি গাজীপুরের নির্বাচিত মেয়র ও দলের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে আবারো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলায় আটক দেখিয়ে বন্দি করে রাখার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান সাবেক ছাত্র নেতা দুদু। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ বিএনপিকে জড়িয়ে যে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্য রেখেছেন, তারও নিন্দা জানান তিনি।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, মুনির হোসেন, তকদির হোসেন মো. জসিম, মোস্তফা শরীফ টিটু প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বক্তব্যে লেশমাত্র সত্যতা নেই -বিএনপি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ