Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেখানো হয়নি অত্যন্ত নিম্নমানের ঘরগুলো

ফুলবাড়ীতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিদর্শন টিম

মাহফুজুল হক আনার ও আবু শহীদ | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

দেশের ভূমিহীন মানুষদের জীবনমান উন্নয়ন ও স্থায়ী ঠিকানা দিতে সরকারের অসামান্য উদ্যেগ ছিল আশ্রয়ণ প্রকল্প। মুজিব জন্মশতবাষির্কীতে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর উপহার দিয়েছেন। এ প্রকল্পের আওতায় অনেক ভূমিহীন তদের আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন। এসব ঘর পেয়ে ভূমিহীনরা যেমন উচ্ছ্বসিত তেমনি রয়েছে হতাশাও।

প্রশাসনের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে প্রশংসিত এ উদ্যেগটি এখন প্রশ্নের মুখে। এসব ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে তদন্তদল। গত শুক্রবার তদন্তকারী একটি দল পৌঁছায় দিনাজপুরে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দুটি প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাওয়া পরিদর্শন টিমকে। তবে অজ্ঞাত কারণে প্রথম পর্যায়ের অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করা ঘরগুলো দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারী এ দলের সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উপ-প্রকল্প প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন ও মনিটরিং অফিসার গোলাম মবিন মো. মাহতাবুল। তবে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দেরীতে আসায় দুটি প্রকল্প এলাকায় যেতেই সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় পরিদর্শন টিমকে সবগুলো প্রকল্প দেখানো সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রথম ধাপে ৭৬৯টি ২য় পর্যায়ে ২৩০টি এবং উপজেলা পর্যায়ের দুটিসহ মোট ১ হাজার ১টি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ধাপে ফুলবাড়ীতে ৭৬৯টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় উপকারভোগীদের বসবাস নিয়ে আশঙ্কার শেষ নেই। ভিত মজবুত না থাকায় সামান্য ঝড়েই ঘরগুলো উড়ে যাবার আশঙ্কা। এসব শঙ্কা মাথায় নিয়ে অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে বসবাস করতে গিয়ে পড়েছে নতুন নতুন সমস্যায়। নেই রাস্তা, ঘরের মেঝে ফাটা, দেয়াল ফাটা, নেই জানালা কোথাও কোথাও ঘরগুলো দেবে গেছে। এর আগে সামান্য ঝড়ে আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরে বেশ কয়েকটি ঘরের বর্গা, আধাপাকা বারান্দার পিলার ধসে পড়ে।

ওই ঘটনার পর থেকে ফুলবাড়ীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, বেশিরভাগ ঘরের নির্মাণ কাজে চূড়ান্ত অনিয়ম হয়েছে, ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। কোনো কোনো ঘরে ব্যবহার করা হয়েছে আগে ব্যবহৃত পুরনো ইট। ফলে বেশীরভাগ বাড়িই ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় নতুন করে কাজ করতে দেখা গেছে। অথচ প্রতিটি ঘর নির্মাণে যে বরাদ্দ তাতে বেশ ভালো মানের কাজ করা সম্ভব ছিল বলে দাবি তাদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে থাকতে চাচ্ছেন না অনেকেই।

ফুলবাড়ী উপজেলায় উপহারের ঘর পাওয়া আনজুআরা বেগম বলেন, সামান্য ঝড়ের বাতাসে ঘরের চালা উড়ে যায়। রাস্তা নেই, পায়খানার ওয়াল ফাটা, মেঝে ফাটা। একই কথা বলেন, মুন্সিটুডু, কুশলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মিনারা বেগমসহ একাধিক বসবাসকারী। তারা বলেন, এর আগে সামান্য ঝড়ে ঘরের চাল সব উড়ায় নিয়ে গেছে। একেতো নিম্নমানের কাজ হয়েছে, তার উপর কোন কোন ঘরে জানালা নেই, নেই সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। জমির মাঝখানে ঘরবাড়িগুলো হলেও মূল রাস্তা থেকে সেখানে যাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত তেমন কোন রাস্তা করা নেই।

তবে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরগুলোতে প্রথম পর্যায়ে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে এখন সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ঝকঝকে করে তবেই উপকারভোগীদের কাছে হস্তাহন্তর করছি। এরপরেও কোন সমস্যার অভিযোগ পেলেই তা সাথে সাথে সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Meer Md. Shamsuddoha ১১ জুলাই, ২০২১, ৮:১১ এএম says : 0
    নিবিড় অনুসন্ধানে দেখা যাবে এসব কর্মকর্তারাই জড়িত, যার দরূণ নিম্নমানের ঘরগুলো দেখানো সম্ভব হয় নাই । ভাববেন না এসব আমলারা উদাসীন । তাদের পাওনা ঠিকই বুঝে নিয়েছে ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আশ্রয়ণ প্রকল্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ