নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ধীর-স্থির শুরু করে ৭৮ বলে পৌঁছেছিলেন হাফসেঞ্চুরিতে। ততক্ষণে তার ব্যাটে চড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে নিয়েছিল দল। এরপর অনুকূল পরিস্থিতি পেয়ে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ রাখলেন লিটন দাস। দ্রুত গতিতে রান তুলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকালেন এই ওপেনার। গতকাল হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে হেসেছে লিটনের ব্যাট। এক প্রান্ত আগলে স্বাগতিক বোলারদের মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের ভিত তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সংস্করণে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি।
সবশেষ আট ইনিংসে একবারও পার হতে পারেননি ২৫। তিনবার ফেরেন শূন্য রানে। বেশ চাপে থাকা লিটন ঘুরে দাঁড়ালেন দলের খুব প্রয়োজনের সময়। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ইনিংসের ৪০তম ওভারে অফ স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরের ডেলিভারি স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে মাইলফলকে পৌঁছান লিটন। তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে পৌঁছাতে তাকে খেলতে হয়েছে ১১০ বল। অর্থাৎ পরের ফিফটি তিনি এনেছেন মাত্র ৩২ বলে। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুললেও লিটনের ইনিংসের চার মাত্র ৮টি। বাড়তি কোনো ঝুঁকি নেননি তিনি। সিঙ্গেল-ডাবল নিয়ে স্ট্রাইক বদলান, সচল রাখেন দলের রানের চাকা।
শুরুর দিকে জিম্বাবুয়ের দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও টেন্ডাই চাটারা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেন। বাকিদের মতো লিটনও তখন কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে দারুণভাবে উইকেটে মানিয়ে নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান তুলে নেন ফিফটি। ওয়ানডেতে যা তার মন্থরতম। আগের মন্থরতম ফিফটি ছিল এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। দুই দলের সবশেষ ওয়ানডেতে সিলেটে ১৭৬ রান করার পথে ৫৪ বলে ছুঁয়েছিলেন পঞ্চাশ।
একপ্রান্ত আগলে রাখতে রাখতে হয়ত কিছুটা ক্লান্তি ভর করেছিল শরীরে। ইনিংসের ৪২তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন লিটন। পেসার রিচার্ড এনগারাভার ডেলিভারি পুল করতে গেলে টপ-এজ হয়ে যায়। বদলি ফিল্ডার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ক্যাচ লুফে নিলে থামে তার ১১৪ বলে ১০২ রানের গুরুত্বপ‚র্ণ ইনিংস। তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ২০৭ রান।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লিটনের আগের দুইটি সেঞ্চুরিই গত বছর মার্চে ঘরের মাঠে। সিলেটে প্রথম ওয়ানডেতে ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। পরে একই ভেন্যুতে তৃতীয় ওয়ানডেতে তিনি করেছিলেন চোখ ধাঁধানো ১৭৬ রান। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে যা সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।
আগে ব্যাট করে মন্থর শুরু এবং ৭৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারালেও লিটনের দৃঢ়তায় পথ হারায়নি বাংলাদেশ। ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারানো বাংলাদেশ পায় ২৭৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ। শেষ দিকে আফিফের ২ ছক্কা ও ১ চারে ৩৫ বলে ৪৫ রানের ইনিংস ভীষণ কাজে দিয়েছে। ৩৩ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ২৬ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ মিঠুন ১৯ রানে আউট হন। মোটামুটি বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান ভালো শুরু পেয়েও উইকেটে থাকতে পারেননি।
বলতে গেলে তিনটি জুটিতে ভিত পেয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে ১০৩ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন লিটন ও মাহমুদউল্লাহ। ষষ্ট উইকেটে আফিফের সঙ্গে ৩৪ বলে ৪০ রানের জুটি গড়েন লিটন। এরপর আফিফ ও মিরাজ মিলে সপ্তম উইকেটে ৪২ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন। শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারানোর বিনিময়ে ৭৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে এক ওভারেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। ৪০তম ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১৯৯। উইকেটে তখন দুজন সেট ব্যাটসম্যান লিটন-আফিফ। এ বিচারে শেষটা তেমন ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তিন শ পার হতে পারলে শেষটা হতো এর চেয়েও ভালো। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫১ রানে ৩ উইকেট লুক জঙ্গুয়ের। ২টি করে উইকেট মুজারাবানি ও এনগারাভার।
লিটনের ব্যাটিং তান্ডবের পর বল হাতে রুদ্ররূপে হাজির হলেন সাকিব আল হাসান। তাতেই তছনছ জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ২৭৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৮.৫ ওভারে মাত্র ১২১ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ফলে ১৫৫ রানের বড় জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ শুরু করলো টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের মাটিতে তাদের সর্বনিম্ন রানে অলআউট করার দিনে সর্বোচ্চ জয়ও পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৪৮, বুলাওয়ায়োতে ২০১৩ সালে। রানের দিক থেকে জিম্বাবুয়ের মাটিতে বাংলাদেশের আগের বড় জয়টি ছিল সেই ম্যাচেই, ১২১ রানে। ১৫৫ রানের রেকর্ডগড়া জয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি। ৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে আলো ছড়িয়েছেন সাকিব। এছাড়া তাসকিন, সাইফুদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম পান ১টি করে উইকেট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।