Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন হান্নান শাহ

প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৩:৫৫ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন আসম হান্নান শাহ। শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে তারা তাদের প্রিয় নেতাকে।
১/১১ এর দলের দুর্দিনের সময়ে হান্নান শাহ দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীদের মনে স্থান করে নেন। দুপুরে মরহুম নেতার কফিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কফিনটি দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দিয়ে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষে সিনিয়র নেতারা প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর আগে কার্যালয়ের সামনের সড়কে অস্থায়ীভাবে কালো কাপড় দিয়ে তৈরি মঞ্চে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য মরহুম নেতার লাশ রাখা হয়।

এখানে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত জানাজায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, গিয়াস কাদের চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শাহজাহান ওমর, আবদুস সালাম, গোলাম আকবর খন্দকার, আবদুল হালিম, কবির মুরাদ, ফজলুর রহমান, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কায়সার কামাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ২০ দলীয় জোটের সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, শফিউল আলম প্রধান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, সাঈদ আহমেদ, খোন্দকার লুৎফর রহমান, গোলাম মুস্তফা ভুঁইয়া, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মুম্তাফিজুর রহমান মোস্তফাসহ বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী, ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।

এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নিতাই রায় চৌধুরীও এই সময়ে দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তিনি (আসম হান্নান শাহ) শুধু একজন সৈনিক ছিলেন না, তিনি সত্যিকার অর্থে একজন গণতন্ত্রের সৈনিক ছিলেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার ভূমিকা চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। বিশেষ করে বিএনপি ও বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সংকটে পড়েছিলো ১/১১ অবৈধ সরকারের সময়ে, বিএনপির পক্ষে, বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ। আজ তিনি আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন। আমরা তার যেন দোয়া চাই, আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্তে নসিব করেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, শনিবার বাদ আসর নয়া পল্টনের কার্যালয়ে হান্নান শাহের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে।

শুক্রবার বাদ জুম্মা গ্রামে বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়াতে তাকে সমাহিত করা হবে, যে মাটিতে ৭৪ বছর আগে জন্ম হয়েছিলো তার।

দাফনের আগে শুক্রবার আরো তিনটি জানাজা হবে গাজীপুরে। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচের হিমঘর থেকে শুক্রবার সকালে সড়ক পথে গাজীপুরে নিয়ে সকাল ৯টায় জয়দেবপুর রাজবাড়ী মাঠে, সাড়ে ১০টায় কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং জুমার পর বিকাল তিনটায় প্রয়াতের নিজ এলাকা চালা বাজার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা হবে। এরপর ঘাগটিয়া গ্রামে বাবার করবের পাশেই তাকে দাফন করা হবে।

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস সেন্টারে মারা যান এই রাজনীতিক।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ডিওএইচএস‘র জামে মসজিদ, সাড়ে ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হান্নান শাহের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সর্বশেষ জানাজা হবে মহাখালীর গাউসুল আজম জামে মসজিদে। এরপর প্রয়াত হান্নান শাহের মরদেহ সিএমএইচএর হিমঘরে রাখা হবে।

ডিওএইচএস‘র জানাজায় সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজ্জাম্মেল হক, সাবেক নির্বাচন কমিশনের সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ওসমান ফারুক, রুহুল আলম চৌধুরীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা অংশ নেন।

এরপর দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের কফিন নিয়ে আসা হয়। সেখানে জাতীয় সংসদের পক্ষে প্রধান হুইপ আসম ফিরোজ, বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষে নুরুল ইসলাম এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, এলডিপির পক্ষে আবদুল করীম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম পৃথক পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

এর আগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির মাহবুবুর রহমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামারুজ্জামান, সাবেক হুইপ শহীদুল হক জামাল, সাবেক সাংসদ এবিএম আশরাফউদ্দিন নিজান, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), নাজিম উদ্দিন আলম, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, সেলিম রেজা হাবিবসহ বিভিন্ন দলের সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকে নয়া পল্টনের কার্যালয়ে আসম হান্নান শাহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে কোরআন খানি অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের লাশ কার্যালয়ের সামনে আসলে শত শত নেতা-কর্মী সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

আসম হান্নান শাহের মৃত্যুতে গত মঙ্গলবার থেকে চারদিনে শোক পালন করছে বিএনপি। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তোলন করা হয়েছে কালো পতাকা।

বুধবার সিঙ্গাপুর থেকে বিমানে আসম হান্নান শাহের কফিন ঢাকায় পৌঁছালে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাতেই মহাখালীর বাসায় ছুটে যান মরহুমের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানে তিনি প্রয়াত নেতার স্ত্রী নাহিদ হান্নানসহ ছেলে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সান্ত্বনা জানান।

কুলখানি

আসম হান্নান শাহের ছোট ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান জানান, আগামী শনিবার বাদ মাগরিব মহাখালী ডিওএইচএসএর জামে মসজিদে মরহুমের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ