Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিলেটে সেই জামিলা আজ যুক্তরাজ্যের পথে উড়াল দিলেন বিমানে

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২১, ৫:১৩ পিএম

যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটের সেই নারী অবশেষে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সিলেট ছেড়েছেন। বুধবার (৪ আগস্ট) বেলা ২টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-২০১) ফ্লাইটে সিলেট বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড়াল দেন তিনি। গত ২৮ জুলাই সিলেট থেকে লন্ডন সরাসরি ফ্লাটের বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০১ এর যাত্রী ছিলেন ভুক্তভোগী প্রবাসী জামিলা চৌধুরী। কিন্তু ওইদিন যুক্তরাজ্য যেতে পারেননি ওসমানী বিমানবন্দরের কতিপয় কর্মকর্তার অসৌজন্যমূলক ও অন্যায় দাবীর প্রেক্ষিতে। এ ঘটনার ওই প্রবাসী নারীর একটি ভিডিও সাক্ষাতকার গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ছড়িয়ে পড়লে টনক নড়ে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। গত ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় জামিলা চৌধুরীর বাসায় যান সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের একটি প্রতিনিধি দল। বাসায় গিয়ে তাকে সান্তনা দেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এবং ৪ আগস্ট যুক্তরাজ্য যাওয়ার জন্য টিকেটের ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। সেই সঙ্গে তদন্তসাপেক্ষে দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেয় প্রতিনিধি দল। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে বিমানবন্দরের অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে আজ জামিলার লন্ডন যাত্রার বিষয়ে সকল ধরনের সহযোগিতা করেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সন্তেুাষ প্রকাশ করে আরেকটি ভিডিও করেন জামিলা। বুধবার বেলা ২টার দিকে ওসমানী বিমাবন্দর থেকে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আজকের বিমাবনন্দরের পরিবেশ এবং কর্মকর্তাদের আচরণে খুবই খুশি আমি। বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত ভালো লাগছে। এভাবেই আমরা প্রবাসীরা যাতে নির্বিঘেœ এবং হয়রানির শিকার না হয়ে দেশে যাতায়াত করতে পারি- এই প্রত্যাশাই করি।’

জানা যায়, বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে লন্ডনে সন্তানদের রেখে দেশে এসেছিলেন জামিলা চৌধুরী। গত বুধবার বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০১ এ যুক্তরাজ্য ফেরার কথা ছিল তার। সেখানে কোয়ারেন্টিনের জন্য হোটেলও বুকিং করা ছিল। ২৮ জুলাই (বুধবার) জামিলা চৌধুরী নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ বিমানের কাউন্টারে পৌঁছালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা তার কাছে লোকেটর ফর্ম চান। তখন নিজ মোবাইলে লোকেটর ফর্মটি দেখালেও প্রিন্ট কপি চান এক কর্মকর্তা। এখান থেকেই মূলত ঘটনার সূত্রপাত।

জামিলা চৌধুরীর ভাষ্যমতে- বারকোডযুক্ত লোকেটর ফর্মের প্রিন্ট কপি বাধ্যতামূলক হতে পারে না যেখানে সবকিছুই বর্তমানে চলছে ডিজিটালি। তবে বিমান কর্মকর্তা সেটি মানেননি। খানিকক্ষণ বাক-বিতন্ডার পর জামিলা চৌধুরী বিমানবন্দরের নির্ধারিত কাউন্টারে লোকেটর ফর্ম প্রিন্ট করার জন্য যান। কিন্তু সেখানে দীর্ঘ লাইন থাকায় তা প্রিন্ট করাতে পারেননি। এখানে দুই দফায় বেশ খানিকটা সময় চলে যায় বলে জানান জামিলা চৌধুরী। জামিলা চৌধুরী বলেন, ‘এরপর আমার লাগেজে অতিরিক্ত মালামালের কারণে আমার কাছে অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করেন সেই কর্মকর্তা। আমি তা দিতে অপারগতা জানাই এবং বলি অতিরিক্ত ওজনের লাগেজ ফিরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র একটি লাগেজ নিয়ে বোর্ডিং পাস দেবার জন্য আমাকে। কিন্তু সেই কর্মকর্তা উত্তেজিত হয়ে আমার উপর পাসপোর্ট ছুঁড়ে মারেন এবং ব্যবহার করেন অকথ্য ভাষা। আমাকে বোর্ডিং পাস না দিয়েই লাইন থেকে বের করে দেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি উপস্থিত অন্যন্য কর্মকর্তাকেও অনেক অনুরোধ করি, কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করেনি।’ এসময় জামিলা চৌধুরী বিমানবন্দরে নিজের অভিযোগ জানাতে চাইলেও তার অভিযোগ কেউ গ্রহণ করেনি। বিমানবন্দরে থাকা অবস্থায় নিজের মোবাইলে কয়েকটি ভিডিও করেন মিসেস চৌধুরী। একটি ভিডিওতে দেখা যায় কর্তব্যরত বিমান কর্মকর্তা বলছেন ‘আমাদের মধ্যে হিউমিনিটি (মানবতাবোধ) নেই। আপনি ম্যানেজারের কাছে যান, আমরা আপনাকে কোনো সাহায্য করতে পারবো না।’ আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়- সাহায্য চাইতে গেলে এক কর্মকর্তা লাগেজ বেল্টের উপর দিয়ে লাফিয়ে পালাচ্ছেন। তবে বিমান কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফ্লাইট ধরতে না পারার কারণ হিসেবে বলছেন- অতিরিক্ত ওজনের লাগেজের কথা বলে সাফাই জবাব দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ