Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বেনাপোলে নছিমন-করিমনে কোমলমতি শিক্ষার্র্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত

প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস

বন্দর নগরী বেনাপোলের প্রি ক্যাডেট স্কুলগুলোতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করছে ইঞ্জিনচালিত ঝুঁকিপূর্ণ নছিমন-করিমনে। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
অভিভাবকরা বলছেন, অনেকবার এনিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানালেও এ নিয়ে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। আর শিক্ষকরা বলে আসছেন অর্থ সংকটের কারণেই তারা নছিমন-করিমন ব্যবহার করছেন। অচিরেই তারা এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করবেন। বেনাপোল শহরএলাকা ঘুরে দেখা যায়, নব দিগন্ত প্রি ক্যাডেট, আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন, রেসিডেন্টসিয়াল ইনস্টিটিউট ও বিএম ইংলিশ ইনস্টিটিউটসহ আরো কয়েকটি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নছিমন-করিমন ও আলমসাধুতে পণ্যের মত সাজিয়ে ঠাসাঠাসি করে আনা নেয়া করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। অনেক সময় চলন্ত অবস্থায় এসব যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে উঠা-নামা করতে হয় তাদের। এজন্য যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও জীবনহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। হাইকোটের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব কর্মকা- ভাবিয়ে তুলছে অভিভাকদের। অথচ পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে কিছুই করছে না, বলছে না। পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী গত ৮ মাসে বেনাপোল ও শার্শায় ৮০ শতাংশ দুর্ঘটনাই নছিমন, করিমন ও আলমসাধুর দুর্ঘটনায় ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন, আহত হয়েছেন শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু। এর মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ১০/১৫ জন। নিহতের মধ্যে শিক্ষার্থী রয়েছে ৪ জন। এছাড়া অজপাড়াগাঁয়ের আরো অনেক মৃত্যুর খবর প্রশাসনিকভাবে রফা দফা হওয়ায় তা আর প্রকাশ পায় না। অভিভাবক শহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমরা বাচ্চাদের লেখাপড়া করতে পাঠবো কোথায়? যেখানেই পাঠাই না কেন সকলে অর্থ বাঁচানোর স্বার্থে এই ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনই ব্যবহার করছে।’ বেনাপোলের বড় আচড়া গ্রামের অভিভাবক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন, যেদিন জানলাম আমার বাচ্চাকে স্কুলকর্তৃপক্ষ নছিমনে আনা নেয়া করছেন, সেদিন থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে আমি নিজ দায়িত্বে তাদের স্কুলে আনা-নেয়া করছি। কিন্তু সবার পক্ষেতো বাচ্চাদের জন্য এভাবে সময় দেয়া সম্ভব নয়। এখানকার প্রিক্যাডেট স্কুলগুলো এখন অতি-বাণিজ্যক হয়ে উঠেছে। যখন সেবার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক মনোভাবটাই বড় হয়ে উঠবে, তখন সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এধরনের অপরাধ কর্মকা- ঘটতেই থাকবে।’ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের কারণে প্রতিদিন এ পথে চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন। বলতে গেলে সব সময় লেগে থাকছে তীব্র যানজট। আর এই ব্যস্ত সড়কটিতে নছিমন-করিমন চলায় প্রতিনিয়ত বেনাপোল সড়কটিতে ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুলিশ প্রশাসনের সামনে কিভাবে রাস্তায় এই অবৈধ যানটি শিশু শিক্ষার্থীদের আনা-নেয়া করে জানি না। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।’ বেনাপোল বিএম ইংলিশ ইনস্টিটিউটের পরিচালক রাজু আহম্মেদ জানান, অর্থ সংকটের কারণে তারা নছিমনে ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেয়া করছেন। এটা যে বড় অপরাধ সেটা তারা জানেন। কিন্তু তাদের ভাষায়, এটা অস্থায়ী ব্যবস্থা।’ দ্রুত এটা বন্ধ করে বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের আনা নেয়া করা হবে বলে জানান তিনি। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বলেন, ‘এর আগেও স্কুলে ছাত্রছাত্রী বহনকারী অনেক নছিমন-করিমন আটক করেছি। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্র-ছাত্রী বহন করবেন না মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয়ায় এগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেনাপোলে নছিমন-করিমনে কোমলমতি শিক্ষার্র্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ