Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লোভনীয় বেতনে সরকারি চাকরির নামে প্রতারণা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২১, ২:৫৬ পিএম

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্র, সুখী পরিবার, মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অ্যাপোলো কনজিউমার প্রোডাক্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় বেতনে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করত তারা। এ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ফিরোজ, আব্দুল কুদ্দুস, মাঈনুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, তৌকির আহমেদ ও কফিল উদ্দিন চৌধুরী। এদের মধ্যে ফিরোজ চক্রের মাস্টারমাইন্ড বলে জানিয়েছে পিবিআই।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) ও শনিবার (১৪ আগস্ট) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার মোহাম্মদপুর থানায় চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ফজলুল করিম নামে এক ভুক্তভোগী। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (১৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় পিবিআইর অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান।

তিনি বলেন, দেশের প্রথম সারির কিছু পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিত প্রতারক চক্রটি। মহাখালীেতে স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করত তারা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ইমেল এড্রেস দেওয়া থাকত। যেগুলোতে আগ্রহীরা সিভি পাঠাতেন। সিভি পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীকে একটি এসএমএসের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে বলে একটি কনফার্মেশন পাঠাত। এরপর বিকাশের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১৯৪০ টাকা নিত।

পিবিআই কর্মকর্তা আরও বলেন, টাকা পাঠানোর পর চাকরি প্রার্থীকে এই প্রতারক চক্র একটি মানি রিসিট, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ও চূড়ান্ত নির্বাচিত হওয়ার ফরম ইমেইলে পাঠাত। তাদের কথামতো চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম পূরণ করে প্রতারকদের দেওয়া ইমেইলে ফিরতি মেইল করতে হতো চাকরি প্রত্যাশীদের। এরপর ডিজিটাল আইডি কার্ড দেওয়ার কথা জানাত প্রতারকরা।

তিনি বলেন, বিনামূল্যে ল্যাপটপ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট দেওয়া হবে সেজন্য দ্বিতীয় দফায় আরও ৪ হাজার ৮০ টাকা দাবি করত চক্রটি। আবারও টাকা পাঠানোর পর চাকরিতে যোগদানের জন্য চাকরি প্রত্যাশীরা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এক পর্যায়ে ওই নম্বরে আর সংযোগ পাওয়া যায় না। ততক্ষণে ভিকটিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা নিত চক্রটি।

পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান বলেন, তারা এ পর্যন্ত কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়া গেলেও প্রতারকদের দুটি বিকাশ নম্বরে গত তিন মাসে ১২ লাখ টাকা এসেছে। যা থেকে ধারণা করা যায় তারা কত মানুষকে প্রতারিত করেছে।

তিনি বলেন, সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন শাখার কেউ এই প্রতারণায় জড়িত কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর আগে নূন্যতম যাচাই করা প্রয়োজন। তাহলে আর প্রতারকরা সাধারণ মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারত না। ভাল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে মানুষ আশ্বস্ত হয়। বিজ্ঞাপন সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। যেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।

গ্রেফতার আসামিদের মোহাম্মদপুর থানার মামলায় রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পিবিআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতারণা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ