Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হাইতির ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩০০

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

হাইতির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, শনিবার ক্যারিবীয় দেশটিতে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। জীবিত কাউকে খুঁজে পেতে ধ্বংস্তুপের মধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। ভূমিকম্পের কবলে পড়ে গুড়িয়ে গেছে বসত-বাড়ি, গির্জা এবং স্কুল। অনেক হাসপাতাল রোগীতে ভরে গেছে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহের প্রয়োজন ছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় পাঁচ হাজার ৭০০ মানুষ আহত হয়েছে এবং অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

দরিদ্র দেশটিতে গত মাসে প্রেসিডেন্টের হত্যার পর রাজনৈতিক টানাপোড়েনে থাকার সময়েই নতুন করে আবার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়লো। হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে লি কায়ে শহরটির আশেপাশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বাসিন্দারা মরিয়া হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে আহতদের টেনে বের করার চেষ্টা করছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় একটি গির্জা অ্যাংলিকান চার্চের প্রধান আর্চডিকন আবিয়াদে লোজামা বলেন, রাস্তাগুলি চিৎকারে ভরে গেছে। মানুষ তাদের প্রিয়জন কিংবা কোন সম্পত্তি, চিকিৎসা সহায়তা এবং খাবার পানি খুঁজছে।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা- ইউএসজিএস জানিয়েছে যে, শনিবারের ভ‚মিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল সেন্ট লুই ডু সুড শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে। তবে কম্পন এর থেকে আরো প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরের জনবহুল রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতেও অনুভ‚ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সেই সাথে জনগণকে ‘সংহতি দেখানোর’ আহবান জানিয়েছেন। শনিবার তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ধ্বংসস্ত‚পের নিচ থেকে যতজনকে সম্ভব জীবিতদের উদ্ধার করা। আমরা জানতে পেরেছি যে, স্থানীয় হাসপাতালগুলি, বিশেষ করে লি কায়ের হাসপাতালগুলো আহত রোগী দিয়ে ভরে গেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে, তিনি ইউএসএআইডি- এর মাধ্যমে জরুরি মার্কিন সহায়তা” অনুমোদন দিয়েছেন। জাতিসংঘও বলেছে যে তারা উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে। প্রতিবেশী দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিক খাদ্য এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিউবাও ২৫০ জনের বেশি ডাক্তার নিয়োগ করেছে। হাইতির বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান জেরি চ্যান্ডলার রবিবার বলেছিলেন যে, দক্ষিণের লি কায়ে শহরে থাকা প্রায় ১৫০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো প্রায় ৩০০০ বাড়ি-ঘর। তিনি বলেন, নিপসে ৮৯৯টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে এবং ৭২৩টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্র্যান্ডেআন্সে ৪৬৯টি বাড়ি ধ্বংস এবং ১৬৮৭টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন যে, দেশটির দিকে ধেয়ে আসা গ্রীষ্মকালীন ঝড় এই পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপ করবে। রোববারের ভাষণের সময় পোপ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, শীঘ্রই সাহায্য আসবে। ভূমিকম্পের পর আরো বেশ কয়েকটি আফটারশক অনুভূতি হয়েছে। ইউএসজিএস সতর্ক করেছে যে, ভূমিকম্পটিতে হাজার হাজার প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০১০ সালে হাইতিতে একটি ভূমিকম্পে দুই লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল এবং দেশের অবকাঠামো এবং অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সূত্র : বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইতি

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ