Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তালেবানের আচরণে মুগ্ধ রাশিয়া, বললেন তাদের বিকল্প নেই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২১, ৮:২৪ পিএম

কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গত কয়েক দিনে তালেবান যে ধরনের আচরণ প্রদর্শন করেছে তাতে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভ। তিনি বলেছেন, দেশটিতে তালেবানের বিকল্প নেই এবং তালেবানকে প্রতিরোধে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। -রয়টার্স

১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠীকে মস্কোর স্বীকৃতি এবং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতা মধ্য-এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো নিশ্চিত করতে চায় মস্কো। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে পরিচিত মধ্য-এশিয়াকে নিজের আঙ্গিনা বলে মনে করে মস্কো। কাবুল থেকে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ঝিরনোভ বলেন, তালেবান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগের চেয়ে বর্তমানে রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেক ভালো। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি আশাবাদী বলেও জানান।

ঝিরনোভ বলেন, কাবুলের পরিস্থিতিকে একটি সতর্কতামূলক আশা হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, সেখানে একটি খারাপ শাসনব্যবস্থা ছিল, যা অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং মানুষ আশাবাদী। তারা বলেছেন, শাসনব্যবস্থা খারাপ হতে পারে না। যে কারণে এটি আরও ভালো হওয়া উচিত। এটি উতড়ে যাওয়া তালেবানের আরেকটি পরীক্ষা। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পর তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ শুরু করা উচিত। ঝিরনোভ বলেছেন, ‌‌মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি পাল্টে গেছে এবং তালেবান আশাব্যঞ্জক কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা বাস্তবতাকে নাকচ করে দিতে পারি না। তারা (তালেবান) এখন ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষ। আফগানিস্তানে তালেবানের বিকল্প নেই।

বর্তমানে রাজধানীর হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে এবং বাইরে ছাড়া কাবুল অনেকাংশেই শান্ত। যদিও তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার মানুষের হুড়োহুড়িতে বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ন্যাটো। পশ্চিমা বিশ্বের কিছু রাজনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কঠোর বিধি-বিধানের প্রয়োগের মাধ্যমে আফগানিস্তানে সহিংসতা অব্যাহত রাখতে পারে তালেবান।

এদিকে, ১৯৮০’র দশকে আফগানিস্তানের সোভিয়েতবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রধান নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন। কাবুলের উত্তরের পাঞ্জশির উপত্যকা থেকে তিনি তালেবানকে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন। প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার দুর্গ হিসেবে পরিচিত পাঞ্জশির উপত্যকা গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৯০ এর দশকেও তালেবানের হাতে পতন হয়নি। এমনকি সোভিয়েত আমলেও এই উপত্যকা জয় করতে পারেনি কেউই।

আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেও তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, তিনি আফগানিস্তানে আছেন এবং আশরাফ গনির পলায়নের পর তিনিই এখন সাংবিধানিকভাবে আফগানিস্তানের বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট। ঝিরনোভ বলেছেন, সালেহর ঘোষণা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল এবং তালেবানকে প্রতিহত করার জন্য পাঞ্জশিরভিত্তিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ হয়েছে। তিনি বলেন, তাদের সামরিক কোনও সম্ভাবনা নেই। সেখানে বেশি মানুষও নেই। তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার যে সুসম্পর্ক চলছে, শুক্রবার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভের করা ওই মন্তব্য সেই সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করছে।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২১ আগস্ট, ২০২১, ১১:২২ পিএম says : 0
    আমরা এশিয়ার যে সমস্ত দেশ ঐক্যবদ্ধ। ভারত ছাড়া।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ