Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দ্রুত প্রত্যাবাসন দাবি

রোহিঙ্গা আগমনের চার বছর

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী আগমনের চার বছর পূর্ণ হল। ২০১৭ সালের এদিনে মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য থেকে সেনা নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা ঢলের মত বাংলাদেশে এসেছিল। ওইদিন থেকে পরবর্তী প্রায় একমাস পর্যন্ত ৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৭ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আগমন করে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দিয়ে কক্সবাজার জেলার উখিয়া- টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা করে।

গতকাল রোহিঙ্গা আগমনের চতুর্থ বর্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমূহ কোন ধরনের সমাবেশ আয়োজনের কর্মসূচি ছিলনা। তবে রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে মসজিদে মসজিদে দোয়ার মাধ্যমে এই বর্ষপূর্তির উদযাপন করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে উখিয়া-টেকনাফসহ গোটা কক্সবাজারের অধিবাসীদের মাঝে। ইতিমধ্যেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি। তারা গতকাল রোহিঙ্গা আগমনের ৪র্থ বর্ষ পূর্তিতে কক্সবাজার শহরে মানববন্ধন করেছে। ওই মানববন্ধন থেকে দ্রæত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবি জানানো হয়েছে।

উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি জনিত স্বাস্থ্যবিধি মানা, গত ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে বিশাল সমাবেশ করার ফলে প্রশাসন এ নিয়ে বিব্রত হওয়া, আবাহওয়া প্রতিক‚লে থাকায়, ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক থ্রীজির নীচে থাকাসহ আরো বিভিন্ন কারণে এবার তারা কোন বর্ষপূর্তি উদযাপন করছেন না।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বছরে গড়ে ৩০ হাজার ৪০০ শিশু রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমুহে জন্ম লাভ করে থাকে। তবে আগমনের প্রথম বছর এ সংখ্যা ছিলো আরো অনেক বেশি। সে হিসাবে গত ৪ বছরে প্রায় দেড় লাখ শিশু ক্যাম্প সমুহে জন্ম নিয়েছে। মাদক, হত্যা, অপহরণ, স্বর্ণ চোরাচালান, ডাকাতি, দখলবাজীসহ নানা অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছে কিছু রোহিঙ্গা। প্রতিদিন ইয়াবাসহ রোহিঙ্গারা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে।
গত একবছরে কয়েক দফায় প্রায় ৩৮ হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর দ্বীপে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভাসানচরে আরো রোহিঙ্গা স্থানান্তর করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে।
সচেতন মহলের মতে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরানো দরকার। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে তারা মনে করেন। গতকাল বুধবার দুপুরে কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি কক্সবাজার শহরে মানববন্ধনের আয়োজন করে।

সংগঠনের সহসভাপতি মনজুর আলম সিকদারের সভাপতিত্বে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে তাদেরকে এক জায়গায় নিয়ে আসা দরকার। যারা অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও এনআইডি করেছে সবগুলো বাতিল করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মদতদাতা চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমাবেশে দাবি জানান বক্তারা।

কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি নুরুল আজিম সওদাগর, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক ইমাম খাইর, সহসাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম কেলু, মাস্টার জসিম উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক মো. নেজাম উদ্দিন, দফতর সম্পাদক কানন বিশ্বাস প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ