Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মালিকা-লিনার ভবিষ্যৎ বিবেচনায় সমঝোতায় সম্মত বাবা-মা

জাপানি জননীর আইনি লড়াই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৩ এএম

সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় নিয়ে সমঝোতা করতে সম্মত হয়েছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো এবং বাংলাদেশ বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ। তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে থাকা ২ সন্তানের সঙ্গে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দিনের প্রথমভাগে মা এবং দ্বিতীয়ভাগে বাবা তাদের শিশু কন্যা জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। সন্তানদের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে মা এরিকো বলেন, সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সমঝোতায় রাজি হয়েছি। বাচ্চাদের দেখে এলাম। সেখানে তাদেরকে হাস্যোজ্জ্বল দেখেছি। নিজ হাতে তাদের গোসল করিয়েছি। আমি সত্যিই গর্বিত যারা এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন তাদের প্রতি। তারা অনেক আন্তরিক। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিবেশ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যদিও এটি কোন পাঁচ তারকা হোটেল নয়। পরিবেশ সুন্দর, পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ।

এ সময় এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, এ পরিবারের মধ্যে বর্তমানে যে ঘটনাটি ঘটেছে, এখানে অনেক ধরণের সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। যদিও বলা হয়েছে যে একটি ফ্ল্যাট কেনাকে কেন্দ্র করে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে‑ এ তথ্যটি পরিপূর্ণ সত্য নয়। স্বামী-স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিযে যে সমস্যা চলমান রয়েছে, জাপানের আদালতে যে মামলা ছিল তাতে এরিকো বিজয়ী হন। জাপানের আদালত বাবা ইমরান শরীফকে নির্দেশনা দিয়েছেন যেন দুই সন্তানকে মা এরিকোর কাছে ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু তিনি সেটি করেননি। তিনি বাংলাদেশে চলে এসেছেন সন্তানদের নিয়ে। পরবর্তীকালে বাংলাদেশে এসে মামলা দায়ের করেন। যেহেতু এটি একটি পারিবারিক বিষয় তাই এখানে আইনের বাইরে সামাজিক ও সাংস্কৃতি বিষয় জড়িত রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরেও কিভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা যায় সেটির চেষ্টাও চলমান রেখেছি। দু-একদিনের মধ্যে এরিকো ও ইমরান শরীফ এবং আইনজীবীদের সাথে বসে সমঝোতার বিষয়টি চালিয়ে যাব। আমি আশা করি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি সমাধানে আসতে পারবো। এডভোকেট শিশির মনির বলেন, তাদের মধ্যে এখনও কোনও ডিভোর্স হয়নি। ফলে নানান ধরণের সমঝোতা করার সুযোগ রয়েছে। বাচ্চাদের ভবিষ্যতে মূল জিনিস। যত সমস্যাই থাকুক না কেন‑ বাচ্চাদের কল্যাণ কোথায়‑ এটি উভয়পক্ষের আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাবো।

বাবা সন্তানদের হোটেলে রাখতে চাইছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, এটা আদালতের বিষয়। তারপরও সামাজিকভাবে নিজেদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হলে এ বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে একক কোনও সিদ্ধান্তে বিষয়টি এখন আর নেই।

এদিকে জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার বাবা ইমরান শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, এখানে বাচ্চারা ঠিকমত খেতে পারছে না। এজন্য একটু ভালো থাকার জন্য কোনও অভিজাত হোটেলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি। সন্তানদের ভালোর জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য‑ যে কোনও ভালো সিদ্ধান্তের জন্য‑ সমঝোতায় বসতে রাজি আছি। সমঝোতার পর ফলাফল কি দাঁড়ায় তার ওপর পরবর্তী বিষয় জড়িত রয়েছে। আমি প্রাণপণ চেষ্টা করব আমার বাচ্চাগুলো যেনও ভালো থাকে। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন তারা অত্যন্ত আন্তরিক। বাচ্চারা সেখানে কেমন আছে‑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের মন খারাপ। তারা ডিপ্রেশনে রয়েছে। ১০ ও ১২ বছরের দু’জন বাচ্চা, তাদের আশপাশে যারা আছে সবাই অপরিচিত, কেমন থাকতে পারে আপনারাই বলুন। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে যদি হোটেলে স্থানান্তর হওয়া যায় তাহলে সন্তানদের পাশাপাশি মা-বাবা আলাদা আলাদা রুমে পাশাপাশি থাকতে পারবে। এতে তারা মানসিক শান্তি পাবে বলে আমি মনে করি। জাপানে ফ্লাটের বিষযে যে তথ্য দেয়া হয়েছে এটি ভুল। আমাকে দুদিনের লিগ্যাল নোটিশ দিযে পুরোদমে রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়েই আমাকে বাংলাদেশে চলে আসতে হয়েছে । জাপানি আদালতে এ বিষয়ে আমি ন্যায়বিচার পাব না‑ তাই আস্থা রাখতে পারিনি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাপান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ