Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গঙ্গাচড়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বিনবিনার চর গ্রামটি

তিস্তার ভয়াবহ ভাঙ্গন

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম

করাল গ্রাসী তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে গঙ্গাচড়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম। করাল গ্রাসী তিস্তা ইতিমধ্যে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনার চর গ্রামটির সবকিছুই গিলে ফেলেছে। চলতি বন্যা মওসুমে ইতিমধ্যে ৪০/৪৫টি পরিবারের ঘর-বাড়িসহ হেক্টর হেক্টর ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ, মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। দিনের পর দিন ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে। এতে করে উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এই গ্রামটি।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি দফায় দফায় বাড়তে থাকে। পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় ভয়াবহ ভাঙ্গন। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা চর হতে লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলী সংযোগ বেড়ি বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে বাগেরহাট বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ও আশ্রয়ণে পানি ঢুকে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে ভাঙন রোধে চেষ্টা চালায়। কিন্তু অনেক স্থানে বালুর ব্যাগ না ফেলায় সেসব স্থানে নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়। এতে করে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ইতিপূর্বে ২২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বিনবিনার চরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ননির্মিত বাঁধটি ভেঙ্গে পূর্ব বিনবিনার চরের একমাত্র মসজিদটি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে লক্ষীটারী ইউনিয়নের কেল্লারপাড় চরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত উপবাঁধটিও ভেঙে যেতে বসেছে। কয়েক দিনের ভাঙনে কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা ও পশ্চিম ইচলীর ২৭টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চরম হুমকির মুখে পড়েছে দুটি ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, মসজিদ ও ফসলি জমি।

উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলি, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, পূর্ব বিনবিনা চর, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, চর নোহালী, বাগডহরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

আজ শুক্রবার গঙ্গাচড়া উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত বিনবিনার চর এলাকায় সরজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, এসব এলাকায় আগে তেমন নদী ভাঙ্গন ছিল না। তিস্তার গতি পরিবর্তন হওয়ায় এখন এসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তারা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া না হলে অধিকাংশ এলাকা নদীর পেটে চলে যাবে। ঘর-বাড়ি, জমি-জমা হারিয়ে অসংখ্য পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়বে। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানিয়েছেন, তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে ইতিমধ্যে বিনবিনা চরে ২০/২৫টি পরিবারের বাড়ি-ঘর বিলীন হয়েছে। অসংখ্য ফসলি জমি ও গাছ-পালা নদীগর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে ভাঙ্গন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা ভাঙ্গছে। এখনও পানি অনেক কম আছে। ভাঙ্গন রোধে এখনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। তখন অনেক সমস্যা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ