Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নানা আয়োজনে জাতীয় কবির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী গতকাল পালিত হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মাধ্যমে সাম্য, মানবতা, দ্রোহ ও প্রেমের এই কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে।
কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। এরপর দোয়া ও ফাতিহা পাঠ করা হয়। পরে কবির পরিবারের সদস্য ও ভক্ত অনুরাগীরা কবির মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং কবির রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করেন। অন্যদিকে বাংলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এ উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং নজরুল স্মৃতি বিজড়িত ‘স্মৃতি কক্ষে’র উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দিনভর কবির গান, নাটক ও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করে।
১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকায় পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ) ইন্তেকাল করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
‘গাহি সাম্যের গান/ মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান...।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এভাবেই তার লেখনিতে মানবতার জয়গান গেয়েছেন। লিখেছেন দ্রোহ ও প্রেমের কবিতা। নানা মাত্রিকতায় বাংলা সাহিত্য ও সংগীতকে করেছেন মহিয়ান, করেছেন সমৃদ্ধ। আমাদের জাতীয় জাগরণের সেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ইসলাম সাম্য মানবতা এবং প্রেমের কবি। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একাধারে সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্রময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীতকে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। সাম্যবাদ, দ্রোহ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন। দারিদ্র্যের সঙ্গে সবসময় লড়াই করলেও অন্যায়ের সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি। শির উঁচু করে শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। মাথা নত করেননি লোভ-লালসা, খ্যাতি, অর্থ, বিত্ত-বৈভবের কাছে। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য। মানবতার মুক্তির পাশাপাশি সামপ্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, ক‚পমন্ডুকতার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তার রচিত ‘চল্ চল্ চল্’ গানটি আমাদের রণসংগীত। ‘বিদ্রোহী’ কবিতা তার বৈপ্লবিক সৃষ্টি। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়। শুধু কবিতাতেই নয়, গান রচনায় নজরুল অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার ইসলামী গান, গজল কিংবা শ্যামা সঙ্গীত বাংলা গানকে করেছে সমৃদ্ধ, নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা ও সুর করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যুবার্ষিকী পালিত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ