পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, যেনা, পরকীয়ার কোনো স্থান নেই। ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বৈধ পন্থায় নারী-পুরুষের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। আর পরকীয়া-ব্যভিচারসহ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল)। সমাজে ব্যাপকহারে পরকীয়া, লিভটুগেদারসহ নানাবিধ হারাম সম্পর্ক গড়ে উঠছে। আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচতে হলে সবধরনের গোনাহ ছাড়তে হবে। গতকাল জুমার খুৎবাপূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেক মুসল্লিকে বাইরে রাস্তার উপর জুমার নামাজ আদায় করতে হয়েছে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম গতকাল জুমার খুৎবাপূর্ব বয়ানে বলেন, সবধরনের আজাব গজব ও বিপর্যয় থেকে বাঁচতে আল্লাহপাকের সব নাফরমানি ছাড়তে হবে, গোনাহ মুক্ত জীবনযাপন করতে হবে, সবধরনের পাপাচার পরিহার করে জীবন পরিচালনা করতে হবে। বর্তমান সময়ে একদিকে যেমন করোনাভাইরাসের মহামারি চলছে, সেই সাথে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিছন্নতা দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কোথাও যাতে নোংরা পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে হাদীস শরীফে অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে। মনে রাখতে হবে আজকের এই বিপর্যয় আমাদেরই কৃতকর্মের ফল। কোরআনে কারিমে এরশাদ হয়েছে : মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা রূম আয়াত ৪১)। পেশ ইমাম বলেন, কোরআনে কারিমে এরশাদ হয়েছে, তোমরা প্রকাশ্য পাপ কাজ পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপ কাজও। যারা পাপ কাজ করে তাদের অতিসত্বরই তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেয়া হবে। (সুরা আনআম আয়াত ১২০)। আল্লাহপাক আমাদের গোনাহমুক্ত জীবনযাপনে তৌফিক দান করুন-আমীন।
ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, পরকীয়া ছোট একটি শব্দ। কিন্তু এর ক্ষতি ও পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ এবং মারাত্মক। এটা বিকৃত মানসিকতার কাজ। সুস্থ মস্তিষ্কের কোনো নারী-পুরুষ পরকীয়ায় লিপ্ত হতে পারে না। ইসলাম নীতি-আদর্শ এবং মানবিকতার ধর্ম। ইসলামে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, যেনা, পরকীয়ার কোনো স্থান নেই। ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বৈধ পন্থায় নারী-পুরুষের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে। আর পরকীয়া-ব্যভিচারসহ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সূরা বনি ইসরাঈল : ৩২)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকীয়া-ব্যভিচারের ভয়াবহ শাস্তির কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার ছেড়ে দাও। কেননা, এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। তিনটি দুনিয়াতে এবং তিনটি আখেরাতে দেয়া হবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হবে তা হচ্ছে, তার চেহারার উজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার জীবনে দারিদ্র্যতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তুষ্টি, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।’ (বায়হাকি, হা. নং ৫৬৪)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হবো।’ (বোখারি : ৭৬৫৮)।
খতিব আরও বলেন, আমাদের সমাজে ব্যাপকহারে পরকীয়া, লিভটুগেদারসহ নানাবিধ হারাম সম্পর্ক গড়ে উঠছে। শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে পর্দার অমোঘ বিধান। এজন্য পরপুরুষ বা পরনারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। তাই আসুন, আমরা পরকীয়া এবং যাবতীয় হারামমুক্ত জীবন গড়ি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন-আমীন।
দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, আমাদের সকলকে মুত্তাকী হতে হবে। মুত্তাকী হলে আল্লাহ তায়ালা দুইটি পুরস্কার দিবেন। একটি হল যেকোনো মুসিবতে আল্লাহ তায়ালা তার রাস্তা খুলে দিবেন। দ্বিতীয়টি তার রিজিক অফুরন্ত বেহিসাব হবে। নিশ্চয় মুত্তাকী ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার কাছে সর্বাধিক সভ্রান্ত। সূরা হুজরাত আয়াত-১৩। অতএব, আমাদের সকলকে মুত্তাকী হতে হবে। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন- আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।