Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রতিরক্ষা ও পরমাণু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরে মরিয়া ভারত

প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


ওবামার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির যে ব্যক্তিগত ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটা পরবর্তী মার্কিন প্রশাসনের সময় টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছে দিল্লি
ইনকিলাব ডেস্ক : সামরিক নজরদারির জন্য প্রিডেটর ড্রোন কেনা এবং একাধিক প্রতিরক্ষা ও পরমাণু প্রকল্পের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে তোড়জোড় চালাচ্ছে ভারত। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে আগ্রহী দিল্লি। এক পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যকার আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ২২টি প্রিডেটর গার্ডিয়ান ড্রোন কেনার বিষয়টি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রসঙ্গত এমন এক সময় এই চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রসঙ্গ তোলা হলো, যখন কাশ্মির প্রশ্নে দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত অস্থিরতা বিরাজ করছে। ওবামা প্রশাসনের ক্ষমতার মেয়াদ ফুরোবে আর অল্প ক’দিনের মধ্যেই। এই সময়ের মধ্যেই ভারত এমন চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করতে চায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি কেমন দাঁড়াবে তা নিয়ে নিশ্চিত নয় দিল্লি। তাই দ্রুত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইছে তারা। খবরে বলা হয়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে যে ব্যক্তিগত ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তা পরবর্তী প্রশাসনের সঙ্গে গড়ে উঠবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। আর এজন্য এই প্রশাসনের আমলেই দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইছে ভারত।
রাশিয়াকে সরিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। মোদি সরকার ভারতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি মার্কিন পারমাণবিক চুল্লি বসানোর বিষয়েও আলোচনা এগিয়ে নিয়েছে। এর বিপরীতে ওয়াশিংটন নয়াদিল্লিকে যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উচ্চ-প্রযুক্তির সামরিক সহায়তা দেবে। তাছাড়া মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম-এর সদস্য হতেও ভারত সহায়তা পাবে যুক্তরাষ্ট্রের। আর এর ফলে ভারত নজরদারি প্রিডেটর ড্রোন কিনতে পারবে। ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী অস্ত্রবাহী ড্রোন কেনারও ইচ্ছা পোষণ করেছিল। পাকিস্তানে কথিত জঙ্গি ঘাঁটিতে তা ব্যবহার করা হবে বলেও উল্লেখ করেছিল ভারত। তবে আইনি বাধ্যবাধকতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার অনুমোদন দিতে পারছে না বলে জানা গেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার চলতি বছরের এপ্রিলে ভারত সফরে গিয়েছিলেন। বছরের শেষ নাগাদ তিনি আরেকবার ভারত সফরে যাবেন বলে জানা গেছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ওপর বিশেষজ্ঞ ধ্রুব জয়শঙ্কর বলেন, এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আর তা এশিয়ায় চীনা আধিপত্যকে সামনে নিয়ে আসতে পারে। তবে জঙ্গিবাদ বিশেষজ্ঞ এবং ট্রাম্পের উপদেষ্টা ওয়ালিদ ফারেজ জানিয়েছেন, নির্বাচনে যে-ই বিজয়ী হ্যোক, ভারতের তাতে চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। ফারেজ বলেন, ভারত জঙ্গিবাদ-বিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার। দুটো দেশই শহরাঞ্চলে জঙ্গিবাদ দ্বারা আক্রান্ত। এই দুই পক্ষের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আবশ্যক। উল্লেখ্য, সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে ভারতকে সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নৌবাহিনীর বিমান উড্ডয়নের ক্ষেত্রেও উচ্চ প্রযুক্তির সহযোগিতা দেওয়া হবে ভারতকে। চলতি বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের জন্য প্রযুক্তিগত সাহায্যের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। মোদি সরকারের এক কর্মকর্তা ওই প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে ভারত বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। আগস্টে মোদি সরকার ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদী একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। যার ফলে এক দেশের সেনাঘাঁটি অপর দেশ ব্যবহার করতে পারবে। পাশাপাশি আরও দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে। যার ফলে দেশ দুটি পরস্পরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করবে। রয়টার্স, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রতিরক্ষা ও পরমাণু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরে মরিয়া ভারত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ