Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বর্ণবাদের প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:৫০ পিএম

গত সপ্তাহান্তে টেক্সাসে সীমান্তরক্ষীরা ঘোড়ায় চড়ে অভিবাসীদের তাড়িয়ে দিচ্ছেন, এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবিটি হাইতি বংশোদ্ভূত আমেরিকান মার্লিন বাস্টিয়ানের মনে বেদনার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।

১৯৮০’র দশকের গোড়ার দিকে হাইতি থেকে একজন অভিবাসী হিসেবে, তিনি মিয়ামি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে আইন প্রয়োগকারীদের সাথে একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানে তিনি কিউবার শরণার্থীদের মুক্ত করার সময় সহকর্মী হাইতিয়ান অভিবাসীদের আটকে রাখার বা নির্বাসনের প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ামি পুলিশ বিক্ষোভকারীদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্য বড় ঘোড়া দিয়ে পদদলিত করার চেষ্টা করছে। এভাবে ৪০ বছর পরে, আবার ইতিহাস নিজের পুনরাবৃত্তি করছে।’

মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে শিবির স্থাপনকারী হাজার হাজার হাইতিয়ান অভিবাসীদের প্রতি এমন আচরণ নিয়ে প্রতিবাদ মার্কিন শহরগুলোর রাস্তা থেকে ক্যাপিটলের হল পর্যন্ত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। কারণ লোকেরা বিশ্বাস করে যে, মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থা বর্ণবাদী এবং অসম। যদিও বর্তমান সীমান্ত সংকটের কারণে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা বাদামী অভিবাসীদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের প্রতি হওয়া কঠোর আচরণ এবং অতিরিক্ত প্রতিবন্ধকতা হিসাবে বিবেচিত হয়। তা নিয়ে বছরের পর বছর হতাশার চূড়ান্ত পরিণতিতেই এই বিক্ষোভ।

মিয়ামি ভিত্তিক ফ্যামিলি অ্যাকশন নেটওয়ার্ক মুভমেন্টের নির্বাহী পরিচালক বাস্টিয়ান বলেছেন, ‘এটি নিষ্ঠুর, অ-আমেরিকান এবং অকার্যকর। যা অভিবাসী কারণগুলোর পক্ষে সমর্থন করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের কাছ থেকে এত কল পাচ্ছি কেন জিজ্ঞাসা করছি? হাইতিয়ানরা কখনো কি আমেরিকার ক্ষতি করেছে? আমরা যা করেছি তা হল আমেরিকাকে সাহায্য করার চেষ্টা, এবং আমাদের সাথে এইরকম আচরণ করা হচ্ছে?’

মঙ্গলবার, প্রায় ২০০ হাইতিয়ান আমেরিকানরা মায়ামিতে একটি প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেয় এবং মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভকারীরা ‘বর্ডার এন্ড রেসিজম’ এবং ‘সকল মানুষের সাথে একই রকম আচরণ করুন’ লেখা স্লোগান লেখা প্লাকার্ড ধরে রেখেছিলেন। ‘তাদের শ্বাস নিতে দিন’ বলে স্লোগান দেয়ার মাধ্যমে তারা শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।

ঘানা অভিবাসীদের কন্যা এবং ব্ল্যাক অ্যালায়েন্স ফর জাস্ট ইমিগ্রেশন (বাজি) -এর নির্বাহী পরিচালক, নানা গ্যামফি দীর্ঘদিন ধরেই ‘দুই স্তরের বৈষম্য’র কথা বলে আসছেন। অভিবাসী হওয়ার জন্য এবং কালো হওয়ার জন্য। কয়েক দশক ধরে, অনেক হাইতিয়ান আমেরিকানরা বলেছে, তারা অনুভব করেছে যে কালো আশ্রয়প্রার্থীদের অন্যান্য গোষ্ঠীর মতো সুযোগ দেয়া হয়নি। এটি এমন একটি অনুভূতি যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তান থেকে আরো শরণার্থীদের প্রবেশের মধ্যে তীব্র হয়েছে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, বুধবার ডেল রিও ক্যাম্পে ৫ হাজারেরও কম শরণার্থী অবশিষ্ট রয়েছেন। সেখানে একসময় ১৫ হাজারেরও বেশি শরণার্থী ছিলেন। ডিএইচএস সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস সোমবার বলেছিলেন যে, ক্যাম্পটি ১০ দিনের মধ্যে খালি করা হবে। কিন্তু বিভাগীয় কর্মকর্তারা বলছেন না যে, তারা কতজন অভিবাসীকে হাইতিতে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে এবং কতজনকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে দেয়ার এবং মার্কিন আইনে মানবিক সুরক্ষা খুঁজতে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বুধবার আরও তিনটি প্লেনে করে শরণার্থীদের হাইতিতে ফেরত পাঠিয়েছে। এর মাধ্যমে মোট ১২টি প্লেন শরণার্থী বোঝাই করে হাইতিতে ফেরত পাঠানো হলো। সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ