Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইএস নির্মূলে অভিযান, নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি তালেবানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:২৯ পিএম

তালেবান দাবি করেছে যে, আফগানিস্তান তারা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং দেশটি ‘যুদ্ধের হুমকি’ থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আইএসআইএল (আইএসআইএস) গ্রুপের একটি সহযোগী গোষ্ঠী কর্তৃক ধারাবাহিকভাবে হামলা সেই দাবিগুলোকে দূর্বল করে দিয়েছে।

তালেবান ক্ষমতায় আসার ছয় সপ্তাহের মধ্যে, খোরাসান প্রদেশে ইসলামিক স্টেট, আইএসকেপি (আইএসআইএস-কে), কাবুল, জালালাবাদ এবং মাজার-ই-শরীফ শহরে হামলা এবং কার্যকলাপের খবর পাওয়া গেছে। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান দেশটির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আইএসকেপিকে (ইসলামিক স্ট্যাট অব খোরাসান প্রোভিন্স) সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করছে। মঙ্গলবার আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান শুরু করেছে তালেবান। এরই অংশ হিসেবে আইএসকেপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আফগানিস্তানের নঙ্গরহর প্রদেশ থেকে সংগঠনটির কমপক্ষে ৮০ সদস্যকে তালেবান আটক করেছে।

আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন সংগঠনটি বলছে, তাদের এ অভিযানে আইএসকেপির সাবেক নেতা মাওলানা জিয়া-উল-হক নিহত হয়েছেন। আইএসকেপির এ নেতা আবু ওমর খোরাসানি নামেও পরিচিত। এ ছাড়া পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভ্রমণকালে আইএসআইএলের নেতা ফারুক বেনগালজাইকে হত্যার দাবি করেছে তালেবান। গত ২৮ আগস্ট কাবুলের পরিচিত সালাফিপন্থী বক্তা শেখ আবু ওবায়দুল্লাহ মুতাওয়াকিলকে আটকের অভিযোগ উঠে তালেবানের বিরুদ্ধে। এ আটকের এক সপ্তাহ পর মুতাওয়াকিলকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে তালেবান।

আইএসকেপি যে মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত, সেই সালাফি মতবাদের ভিত্তিতে চলা আফগানিস্তানের ১৬টি প্রদেশের তিন ডজনের বেশি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। কাতারের দোহাভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দীর্ঘ দিনের শত্রু’ আইএসকেপিকে আফগানিস্তান থেকে একেবারে বিলীন করে দেয়াটা অত্যন্ত জটিল কাজ হবে তালেবানদের জন্য। তবে তারা জঙ্গি সংগঠনটির কাছ থেকে দেশটির বেশ কিছু জেলার নিয়ন্ত্রণ বেশ সফলভাবে নিজেদের হাতে নিতে সক্ষম হয়েছে।

আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন মুজতবা হারিস ও আলী এম লতিফি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ক্ষমতাগ্রহণের পর তালেবান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা দিয়েছিল। সেইসঙ্গে সংগঠনটি বলেছিল, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।কিন্তু এর পরই একাধিক হামলা চালিয়েছে আইএসকেপি। বিশেষ করে কাবুল, জালালাবাদ ও মাজার-ই-শরিফে বেশ সক্রিয় রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটির খোরাসান শাখা। সর্বশেষ ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালায় আইএসকেপি। ওই হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৮০ জন নিহত হন। সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ ওই হামলায় আহত হয়েছেন কয়েকশ’ মানুষ।

তালেবান এখন আফগানিস্তানের নিরাপত্তার জন্য আইএসকেপিকে সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করে। গত কয়েক সপ্তাহে আফগানিস্তানের জালালাবাদে বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাণ গেছে তালেবান সদস্যদেরও। এর টেলিগ্রাম বার্তায় আইএসকেপি ৩৫ জন তালেবান সদস্য হত্যার দাবি করে। তবে তালেবান এ দাবি অস্বীকার করেছে। আইএসকেপির বিরুদ্ধে তালেবানের এ অভিযান প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, তাদের সংগঠন সক্রিয়ভাবে ‘দেশে যারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে, তাদের খুঁজে বের করবে।’ সূত্র: আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ