Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচন নির্বাচন খেলা আর হবে না

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়ে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে বিএনপি সেই নির্বাচন মেনে নেবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের কথা খুব পরিস্কার, নির্বাচন নির্বাচন খেলা আর হবে না। নির্বাচন হতে হলে অবশ্যই একটি নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, নির্বাচন হতে হলে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন হতে হবে। শেষ কথা আমরা কোনো নির্বাচন মেনে নেবো না যদি নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সেই নির্বাচন না হয়।

গতকাল শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘১ অক্টোবর ২০০১ : নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সর্বশেষ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের (সরকার) দিন ঘনিয়ে এসেছে, দিন শেষ। এখনো সময় আছে, মানুষের ভাষাগুলো পড়েন। দেয়ালের লিখন দেখেন। দেখে মানে মানে নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তৈরি করে সরে যান এবং জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে দিন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু পদের জন্য দৌঁড়াবেন না। নতুন কমিটি হচ্ছে তার জন্য মাঠ বোঝাই করে দেবেন না। যখন আন্দোলনের ডাক আসবে তখন মাঠ বোঝাই করবেন, যখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা মাঠে নামবো, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যখন মাঠে নামবো, তখন মাঠ বোঝাই করবেন, রাস্তায় বোঝাই করবেন। আসুন এটাই পথ। আন্দোলন ছাড়া, গণআন্দোলন ছাড়া, গণঅভ্যুত্থানের জন্য এই দানবকে সরানো যাবে না। দানবকে সরাতে হলে সমস্ত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে, সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে।

সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০ আসনও পাবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই। রাজনৈতিকভাবে তারা সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা জানে যে, যদি কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় সেই নির্বাচনে তারা ৩০টা আসন পাবে না। এই কারণে তারা সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয়করণ করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন আবার চেষ্টা করছে আবার তারা ক্ষমতায় আসবে ওই ধরনের একটা নির্বাচন করে। যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না। তারা ইভিএম চালু করেছে। এই যন্ত্র একটা বড় হাতিয়ার কি করে ভোট চুরি করা যায়, কি করে ভোট না পেয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত ঘোষণা করা যায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হুদা সাহেব তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দিয়েছেন কয়েকদিন আগে তিনি রাশিয়াতে গিয়ে নির্বাচন পদ্ধতি দেখে এসেছেন। রাশিয়ার একই অবস্থা। একইভাবে যে থাকে সরকারে হয় সে একবার প্রেসিডেন্ট হয় না হয় প্রধানমন্ত্রী হন। যা বাংলাদেশের সঙ্গে তার কোনো পার্থক্য নাই। ওটা দেখে এসেছেন উনি দিনের বেলা কিভাবে ভোট চুরি করা যায়, সেটা শিখে এসেছে। এই চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করবার এই ভয়াবহ প্রচেষ্টা-এটা আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে তারা সংবিধান বিরোধী কথা বলে। এই সংবিধানকে শেষ করে দিয়েছে কাটা-ছেড়া এই সরকার। তারা আবার লম্বা লম্বা কথা বলে। তারা (সরকার) বলছে, সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফিরে যাওয়ার সুযোগ নাই। এর সোজা ভাষা হলো আওয়ামী লীগের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নাই। যে আওয়ামী লীগ চিরজীবন ক্ষমতা থেকে যাবে না। তারা একটা ইতিহাস ভুলে গেছে পৃথিবীতে কোনো স্বৈরাচার টিকে থাকতে পারেনি এবং স্বৈরাচারকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের এখন একটাই কথা যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, অনিন্দ ইসলাম অমিত, আমিনুল হক, মীর নেওয়াজ আলী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, রফিকুল আলম মজনু, আরিফা সুলতানা রুমা, শায়রুল কবির খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ সহাস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Motiur Rahman Sahnur ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০২ এএম says : 0
    নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় আমরা সুষ্ঠু সুন্দর অবাক নির্বাচন হলে জনগণ তাদের চাওয়া-পাওয়া একটাই জনগণের ভোটাধিকার পাওয়া জনগণে রায় দিবেন আশাকরি সুন্দর ভালো একটা প্রতিফল বেরিয়ে আসবে নির্বাচনটা সুস্থ-সুন্দর অবাক হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
    Total Reply(0) Reply
  • Rasel Ahammed Jony ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৩ এএম says : 0
    মি. ফখরুল, হুমকি দমকি দিয়ে লাভ নাই। রাজপথে নামেন, দেখবেন বাস্তবতা অনেক কঠিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Zubayer Hossain ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৩ এএম says : 0
    আমার বর্তমান বয়স ৩১ বছর ৭ মাস কিন্তু একবারও ভোট দিতে পারলাম না। এ কেমন স্বাধীন রাষ্ট্র
    Total Reply(0) Reply
  • Ajarul Islam ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৩ এএম says : 0
    আমরা দেখতে চাই সুষ্ট নির্বাচন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kashem ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৩ এএম says : 0
    নির্বাচন নির্বাচন খেলা আওয়ামীলীগের আমলে হয়নি হবেনা,
    Total Reply(0) Reply
  • mohammad Quayum ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২৫ এএম says : 0
    দানব সরাতে হলে কঠিন তেগ সিকার করতে হবে , আরও রক্ত দিতে হবে, বাসায় বসে সিরিয়াল দেখে হবে না,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ