Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তিনি এসেছেন রহমত হয়ে

মাওলানা বাশীরুদ্দীন আদনান | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

আমরা ছিলাম পথহারা, দিশেহারা। হেদায়াত ও সফলতার পথ সম্পর্কে ছিলাম অজ্ঞ। অতপর মহান রাব্বুল আলামীন হেদায়েতের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে। তিনি এসে আমাদেরকে সত্য-মিথ্যা চিনিয়েছেন। আমাদের নিকট সত্য দ্বীন নিয়ে এসেছেন। নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পন্থা শিখিয়েছেন। এ ছিল আমাদের প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ।
এই অনুগ্রহের বর্ণনা পবিত্র কোরআন মাজীদে এভাবে এসেছে : আল্লাহ মুমিনদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন; তিনি তাদেরই নিজেদের মধ্য হতে তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেন, যদিও তারা এর আগে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল। (সূরা আলে ইমরান : ১৬৪)।

নবী কারীম (সা.) যেমনিভাবে নবীগণের সর্দার তেমনিভাবে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেও তিনি সকলের চেয়ে মহান। তিনি এমন এক উৎকৃষ্ট সমাজ রেখে গেছেন, যার নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরবর্তীরাও উৎকর্ষের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে। কারণ তিনি সমাজ বিনির্মাণ করেছেন ওহীর ভিত্তিতে, যে ওহী মানব সভ্যতার প্রকৃত উৎকর্ষ নিশ্চিত করে। আর তাই এই উম্মতের জন্য তাঁকে মনোনীত করা উম্মতের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। তবে এই অনুগ্রহ থেকে তারাই মূলত উপকৃত হয়, যারা ঈমান আনে। তাই আয়াতে ব্যাপকভাবে উম্মতের বদলে শুধু মুমিনদের কথা বলা হয়েছে।

তিনি জগদ্বাসীর জন্য রহমত হয়ে এসেছেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন : (হে নবী!) আমি তোমাকে বিশ্ব জগতের জন্য কেবল রহমত করেই পাঠিয়েছি। (সূরা আম্বিয়া : ১০৭)।
ইমাম ত্ববারী রাহ. বলেছেন : নবী কারীম (সা.) জগতের সকলের প্রতি আল্লাহ পাকের রহমত। মুমিন-কাফির নির্বিশেষে সকল মাখলুকই কিয়ামত পর্যন্ত এই মহান রহমতের মাধ্যমে উপকৃত হতে থাকবে। মুমিনকে তো আল্লাহ তাআলা তাঁর মাধ্যমে হিদায়াত দান করেছেন। তাঁর উপর ঈমান আনা এবং তিনি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে যে পয়গাম নিয়ে এসেছেন সে অনুযায়ী আমল করার কারণে তাকে জান্নাত দেবেন। আর এই উম্মতের অবিশ্বাসীকে তাঁর কারণে পূর্ববর্তী উম্মতের অবিশ্বাসীর মতো নগদ শাস্তি দেবেন না। (তাফসীরে ত্ববারী : ১৮/৫৫২)।

মাওলানা শাব্বীর আহমদ উসমানী রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, কাফেরদের সাথে রাসূলুল্লাহ (সা.) যে জিহাদ করেছেন সেটাও ব্যাপকার্থে প্রকাশ্য রহমত ছিল। কেননা এর মাধ্যমে বড় রহমত, যা তিনি আল্লাহর তরফ থেকে নিয়ে এসেছিলেন তার হেফাজত হয়েছিল। তাছাড়া এর ফলে এমন অনেকের ঈমানের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি খুলে গিয়েছিল, যে ব্যাপারে তারা স্বেচ্ছায় অন্ধত্ব বয়ে বেড়াচ্ছিল। (দ্র. তাফসীরে উসমানী)।



 

Show all comments
  • MNI Khan ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২০ এএম says : 0
    ALHAMDULILLAH VERY IMPORTANT ARTICLE.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rakibul Hussain ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৬ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সমগ্র সৃষ্টি তথা বিশ্বমানবের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের সার্বিক কল্যাণ ও মুক্তির পয়গাম নিয়ে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আওয়াল সোমবার প্রভাতের সময় মহাবিশ্বে আগমন করলেন প্রিয় নবী, শেষ নবী, রহমাতুল্লিল আলামিন, শান্তির অগ্রদূত, মানবতার মুক্তির দিশারি হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
    Total Reply(0) Reply
  • সোয়েব আহমেদ ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৬ এএম says : 0
    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন বিশ্ব তথা মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে। হজরত আদম (আ.)- এর মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে প্রথম নবীর আগমন, হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)'র আগমনের মাধ্যমে পৃথিবীতে নবী-রসুলের আগমন পর্বের সমাপ্তি টানা হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজনীন জাহান ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৭ এএম says : 0
    মহানবী মুহাম্মদ (সা.)'র পর পৃথিবীতে আর কোনো নবী আসবেন না। তিনি হলেন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য মনোনীত নবী। কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ পৃথিবীতে আসবে তারা তার উম্মতের মধ্যেই গণ্য হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • বদরুল সজিব ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৭ এএম says : 0
    সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কোনো একটি বিশেষ দল বা সম্প্রদায়ভুক্ত নবী ছিলেন না এবং তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের মানুষের জন্য বিশ্বনবী।
    Total Reply(0) Reply
  • জোবায়ের খাঁন ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৮ এএম says : 0
    রাসুল (সা.)'র মন ছিল আকাশের মতো উদার, সত্যে প্রতি অবিচল। জীবনে কোনো দিন কোন প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেননি। কোন মিথ্যা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি, দানে-ধ্যানে জ্ঞানে, বিচারে-সহানুভবতায় তিনিই ছিলেন তার দৃষ্টান্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • নোমান মাহমুদ ১০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৪৮ এএম says : 0
    আমরা রাসূল (সা.)'র সাথে যত বেশি মহব্বতের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব, যত বেশি দরুদ ও সালাম পাঠাব ততই বাতিল, তাগুত আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাবে। ঈদে মিলাদুন্নবী সবার জন্য হোক মুবারক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন