Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লালফিতায় বন্দী বগুড়া বিমানবন্দরের প্রকল্প

উত্তরাঞ্চলের অচল বিমানবন্দর সচল ও ফ্লাইট চালুর দাবি

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

ক্রমশ জোরদার হচ্ছে বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে এখান থেকে বেসরকারি ডমেস্টিক ফ্লাইট চালুর দাবি। একই সাথে তোলা হচ্ছে ঈশ^রদী, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট বিমানবন্দরগুলোকে সচল করা। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিত্বকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত এক দশক জুড়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের তুলনায় সরকারি প্রকল্পে পিছিয়ে রয়েছে উত্তরাঞ্চল। এ অঞ্চলে বেসরকারি খাতের উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা দ্রুত যাত্রাপথ হিসেবে বিমান যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা।
একটি জায়গায় সবাই একমত হয়ে বলছেন, উত্তরাঞ্চলে চলমান ফোরলেন সড়ক প্রজেক্ট, পাবনার রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেগা প্রকল্প এবং এনজিও কার্যক্রমে বিদেশিসহ ভিআইপি পার্সনরা এখন সড়কপথের সীমাহীন যানজটের ভয়ে এদিকে আসতে চান না। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও ভয় করেন যানজটকে। এ প্রসঙ্গে দেশের বৃহত্তম এনজিও সংস্থা টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, এই মুহূর্তে বগুড়া-ঢাকা ডমেস্টিক ফ্লাইট খুবই জরুরি। বিমানবাহিনী পরিচালিত বগুড়া এয়ারবেসে যে অবকাঠামো রয়েছে তার সাথে পশ্চিম প্রান্তে এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বড়মোহর গ্রামের দিকে মাত্র তিন হাজার ফিট জায়গা অধিগ্রহণ করে রানওয়ে নির্মাণ করলেই বগুড়া রুটে ডমেস্টিক ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হবে।
সিভিল এভিয়েশনের একটি সূত্রে জানা যায়, বগুড়া এয়ারবেসের পশ্চিমদিকে রানওয়ে সম্প্রসারণের একটি ফাইল আমলাতন্ত্রের লাল ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে। এদিকে বড় মোহর গ্রামবাসির সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বগুড়া এয়ারবেসের জমি অধিগ্রহণের সময় এলাকায় একটি মহল জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করলেও এখন মানুষের মনোভাবে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন জমি দিতে প্রস্তত।
বগুড়ার পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জাহেদুর রহমান জাদু বলেন, এক সময়ে যাত্রীর অভাবে ঠাঁকুরগাঁও, ঈশ^রদী, লালমনিরহাটের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলেও বর্তমানে চলমান রাজশাহী ও সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে পরিচালিত ফ্লাইটগুলোতে টিকিট পাওয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে। বগুড়া থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজশাহী ও সৈয়দপুর হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছেন। জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে রোগিদের রাজধানীতে নিতে হচ্ছে।
তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে প্রবাসীরা ঢাকায় এসে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় আসতে সর্বাধিক বিড়ম্বনায় পড়েন। তাদেরকে ঢাকায় নেমে মাইক্রো বা প্রাইভেটকার নিয়ে বাড়ি ফিরতে ১০-২৫ হাজার পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করতে হয়। অথচ ঢাকা বগুড়া এয়ার সার্ভিস থাকলে খুব দ্রুত হাজার হাজার প্রবাসী কানেকটিং ফ্লাইট ধরে উত্তরাঞ্চলে চলে আসতে পারতো।
জাতীয় যুব শ্রমিকলীগ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি রাকিবুদ্দিন সিজার বলেন, মালেয়শিয়া ও সউদী আরবসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে কর্মরত প্রবাসীরা বেশিরভাগই বগুড়া তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষ। সড়ক পথের জ্যামের কারণে বিদেশগামীদরে ফ্লাইট ধরতে একদিন আগে ঢাকায় অবস্থান করতে হয় ফ্লাইট মিস হওয়ার ভয়ে। এটি গরীব শ্রেণির মানুষদের জন্য বোঝার ওপর শাকের আটির মত। একইভাবে বিদেশ ফেরতদেরও খরচ করতে হয় অতিরিক্ত টাকা। অথচ বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-ঈশ^রদী বা লালমনিরহাটের মধ্যে ফ্লাইট যোগাযোগ থাকলে উত্তরাঞ্চলের প্রবাসী শ্রমিকদের বিদেশ যাতায়াতে আর্থিক সাশ্রয় হত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুড়া বিমানবন্দর
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ