Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যশোর শিক্ষাবোর্ডের হিসাব সহকারী সালাম অর্থ আত্মসাতের দায়ে বরখাস্ত

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২১, ৬:০৯ পিএম

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেক জালিয়াতের মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতকারী হিসাব সহকারী আব্দুস সালামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বোর্ড কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সচিব প্রফেসর এএমএইচ আলী রেজা।

সচিব জানান, অর্থ আত্মসাতের পুরো ঘটনার সব দোষ সালাম নিজে স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই সাথে ১৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। সালাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত দিয়ে সব দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ও প্রে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা জমা দেন। সালামের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী লিখিত আবেদন ও টাকা জমা দেন। এরপর বোর্ড কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সালামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোর শিক্ষাবোর্ডের আড়াই কোটি চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় দুদকে (দুর্নীতি দমন কমিশন) অভিযোগ দাখিল করেছে বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী রেজা। দুদক যশোর কার্যালয়ে গিয়ে তিনি এ অভিযোগ দাখিল করেন। এরপরে দুদক কর্মকর্তারা শিক্ষাবোর্ডে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্ত ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বাবু ও আশরাফুল আলমের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মূলহোতা হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম অনুপস্থিত ছিলেন। চলতি অর্থবছরে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করে। এই ৯টি চেক জালিয়াতি করে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের নামে ১ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ১০টাকা এবং শাহী লাল স্টোরের নামে ৬১ লাখ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সরকারি ছুটি থাকায় ঘটনা প্রকাশ্যে আসার দুইদিন পর বোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী রেজা দুদক কার্যালয়ে গিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযোগ দাখিল করেন। দুদক কর্মকর্তারা সকল কাগজপত্র সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করেন। দুদকের যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক নাজমুস ছায়াদাতের নেতৃত্বে তদন্ত করেন সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন ও সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল। দুদকের কর্মকর্তাদের তদন্ত শেষ হওয়ার পর সালামের স্ত্রী দোষ স্বীকার করে লিখিত ও টাকা ফেরত দেন।

সেখানে জানানো হয়েছে, চেক জালিয়াতের ঘটনায় আব্দুস সালাম ব্যক্তিগতভাবে দায়ী। শিক্ষাবোর্ডের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী কেউ জড়িত নয়। পূর্ব পরিচিতির সূত্র ধরে দুই প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার তিনি টাকা উত্তোলন করেছেন। নিজ প্রয়োজনে খরচ করে ফেলেছেন। ওই টাকা তিনি ফেরত দিতে ইচ্ছুক। তাই ১৫ লাখ ৪২ টাকা ফেরত দিচ্ছেন। পর্যায়ক্রমে সব টাকা ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

আব্দুস সালাম যশোর শিক্ষা বোর্ড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য। হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম এর আগেও অনেক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১২ লাখ টাকার একটি দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই সময় তদবির করে তিনি সেখান থেকে রক্ষা পান। এরপর আড়াই কোটির টাকা দুর্নীতির সঙ্গেও তিনি জড়িত হয়েছেন। আব্দুস সালাম দুর্নীতির মাধ্যমে উপশহরে দুটি আলীশান বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি এলাকায় ১০ বিঘা জমি, যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি বেসরকারি ক্লিনিকের মালিকানা রয়েছে তার।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, বোর্ড কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সালামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে দুদকে অভিযোগ করা হয়েছে। আইনের মাধ্যমে পুরো ঘটনার নিষ্পত্তি হবে। দোষীরা কোনোভাবেই রেহায় পাবে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ