Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঘুরে দাঁড়াল শেয়ারবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৮ এএম

টানা সাত কার্যদিবস পতনের পর সপ্তাহের শেষ দিনে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলেছে দেশের শেয়ারবাজারে। মূলত শেষ ঘণ্টার ঝলকে এই ঊর্ধ্বমুখীতা দেখা যায়। এর আগে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসসহ টানা সাত কার্যদিবস দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩৪৭ পয়েন্ট পড়ে যায়। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসেই পড়ে ২২৩ পয়েন্ট।

শেয়ারবাজারে এমন টানা দরপতন হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল সূচকের বড় উত্থান হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাত কার্যদিবসের টানা পতনের পর এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই দাম বেড়ে যায় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এতে ১০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধানমূল্য বেড়ে যায় প্রায় ১০ পয়েন্ট।

তবে সূচকের এই উত্থান বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিট পার হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক। লেনদেনের ৩৬ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৩১ পয়েন্ট পড়ে যায়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার বড় পতনের শঙ্কা পেয়ে বসে। এমনকি লেনদেনের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টা পতনের ধারায় থাকে বাজার। তবে দুপুর দেড়টার পর সূচক ঘুরতে থাকে। শেষ আধঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে পতন কাটিয়ে বড় উত্থান দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার ৭৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৯টির। আর ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শেয়ারবাজার পতন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোয় বিনিয়োগকারী মোরসালিন বলেন, বাজারে যেভাবে টানা দরপতন হয়েছে তাতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশ আতঙ্ক দেখা দেয়। এদিনও শুরুতে বড় উত্থানের পর সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়লে অনেকে আতঙ্কে বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেয়। তবে শেষ দিকে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
ফিরোজ নামের আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, গত কয়েকদিনের পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিন বাজার ঘুরে না দাঁড়ালে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হয়তো পেনিক সৃষ্টি হয়ে যেত। বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও সূচক ঘুরে দাঁড়ানোয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে। এদিকে সূচক ঘুরে দাঁড়ালেও লেনদেনের গতি কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৭১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ৬৪ কোটি ৫২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, বেক্সিমকো ফার্মা, জিনেক্স ইনফোসিস এবং ফরচুন সুজ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩২টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেয়ারবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ