Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে বিপুল সৈন্য সমাবেশ, মানবাধিকার বিপর্যয়ের শঙ্কা

মুক্তির পর ফের কারাগারে মিয়ানমারের শতাধিক বিক্ষোভকারী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৭ এএম

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার সেনা সমাবেশের খবরে দেশটিতে আরও বড় ধরনের মানবাধিকার বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে বিশৃংখল অবস্থা বিরাজ করছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার টম অ্যান্ডুস শুক্রবার বলেন, ‘আরও বেশি গণহত্যার মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারে আমাদের সবার প্রস্তুত থাকা উচিত; ঠিক যেমন মিয়ানমারের এই অংশের (উত্তরাঞ্চল) মানুষজন প্রস্তুত রয়েছে। আমি খুব করে চাচ্ছি, আমার এ আশঙ্কা ভুল প্রমাণ হোক।’ এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার হিসাবে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধীদের ওপর চালানো রক্তক্ষয়ী অভিযানে এক হাজার একশ’র বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর, জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আট হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাতিসংঘে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে অ্যান্ডুস বলেন, তিনি তথ্য পেয়েছেন- মিয়ানমারের দুর্গম উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাজার হাজার সৈন্য এবং ভারী অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, সামরিক জান্তা মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছে। রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার আগে যেভাবে সামরিক সমাবেশ করা হয়েছে, এবার দেশটির উত্তরাঞ্চলে একইভাবে সামরিক সমাবেশ ঘটানো হচ্ছে উল্লেখ করে অ্যান্ডুস বলেন, ‘সামরিক জান্তার এ ধরনের কৌশলগুলো ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযানে প্রায় সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘ মনে করে, ওই অভিযান গণহত্যার সমতুল্য হয়ে থাকতে পারে। জাতিসংঘ বলছে, এই অভিযানে বিপুল মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার আগে যেভাবে সামরিক সমাবেশ করা হয়েছে, এবার দেশটির উত্তরাঞ্চলে একইভাবে সামরিক সমাবেশ ঘটানো হচ্ছে। অপর এক খবরে বলা হয়, অভ্যুত্থানবিরোধী শতাধিক বিক্ষোভকারকে মুক্তির পর পুনরায় আটক করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। স্থানীয় একটি নজরদারি সংস্থার বরাত দিয়ে শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামের একটি সংগঠন জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে আট হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে। গত সোমবার সেনাবাহিনী পাঁচ হাজারেরও বেশি বন্দিকে মুক্তির ঘোষণা দেয়। তবে ঠিক কতজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তা যাচাই করা যায়নি। মুক্তির পরপর অন্তত ১১০ জনকে পুনরায় আটক করা হয় বলে জানিয়েছে এএপিপি। বৃহস্পতিবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাড়িতে পৌঁছার পরপরই কাউকে কাউকে আটক করা হয়। অন্যদের জানানো হয়, তারা মুক্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় ছিল, তাদের জেলগেটে নিয়ে যাওয়া হয়। আরও অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।’ এএফপি, হিন্দুস্তান টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ