Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশে দ্রুত নগরায়নে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২১, ১২:২০ এএম

দ্রুত নগরায়ণের কারণে দেশে নারীদের মধ্যে বাড়ছে স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ছে। নগরায়ণের প্রভাবগুলো হলো নারীদের ১০ থেকে ১২ ঘন্টা বসে কাজ করা, সপ্তাহে তিনবারের বেশি ফাষ্টফুড খাওয়া, স্থুলতা এবং অধিক কসমেটিক ব্যবহার। তবে এ সব বিষয়ে সচেতন হলে স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি অনেকংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।
গতকাল রাজধানীর বিএমএ ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন সভা কক্ষে আয়োজিত ‘স্তন ক্যান্সারে পেশাগত ঝুঁকি’ বিষয়ক সচেতনতামূলক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য তুলে ধরেন। ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানী বিকন এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্যান্সার স্ট্যাডি গ্রুপ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টস ফোরাম যৌথভাবে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ ক্যান্সার স্ট্যাডি গ্রæপের গবেষক ও জাতীয় ক্যান্সার ইনন্সটিটিউটের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেষ সহ এশিয়ারদেশগুলোতে গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বেশি নগরায়ণ হয়েছে। এর ফলে এশিয়াতে প্রতি ২ মিনিটে একজন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। কর্মজীবীদের মধ্যে প্লাষ্টিকের বোতলে পানি পানের প্রবণতা বাড়ছে। প্লাষ্টিকের বোতলে মুখ লাগিয়ে পানি পানের ফলে মুখের লালার সঙ্গে প্লাষ্টিকের স্পর্শে ‘বিপিএ’ নামের এক ধরনের বিষক্রিয় শরীরে প্রবেশ করে। ফলে নারীদের স্তন ক্যান্সার ঝুঁকি ৩ শতাংশ বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, দেশে নারীরদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ব্যাপক হলেও ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্যান্সার ধরা পড়ে চতুর্থ স্তরে। আগে থেকে প্রতিরোধ করতে পারলে বা কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে এই ঝুঁকি কমানো যায়। জীবন যাপনের পরিবর্তন করে, পরিবারে রক্তের সম্পর্কের মধ্যে যদি কারো স্তন ক্যান্সার হওয়ার ইতিহাস থাকে, তাহলে দ্রæত স্ক্রীনিংয়ের আওতায় আসতে হবে।
তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষা নিতে এসে, যে পরিবেশের ভেতর দিয়ে যেতে হয়, তাতে করে নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। যারা গ্রামে বাস করে, তারা প্রকৃতির সানিধ্য পায়, তাদের ঝুঁকি কম। দেশ যত শিল্পনায়ানের দিকে ঝুঁকবে, স্তন ক্যান্সারসহ অন্য ক্যান্সারের ঝুঁকি ততই বাড়বে।
মতবিনিময় সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন দরকার। কারণ দেশে প্রায় ৫০ বছর আগে ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা শুরু হলেও রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী সেবার মান ও ব্যাপ্তি (পরিধি) বাড়েনি। দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটা করে ক্যান্সার কেন্দ্র দরকার। সে হিসাবে ১৬০টি ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে সচল ও বিকল মিলে আছে মাত্র ২০টি কেন্দ্র। যা চাহিদা অনুযায়ী খুবই কম। এই মহ‚র্তে দেশে প্রায় ১৬ লাখ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এর সঙ্গে প্রতি বছর নতুন করে যোগ হয় দুই লাখ। এই রোগীদের ৭০ শতাংশই চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জাতীয় রাজস্বের অপচয় হচ্ছে, যেটা জাতীয় স্বাস্থ্য বাজেটের ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ।
তিনি বলেন, স্তন ক্যান্সার মেয়েদের গোপন অঙ্গের রোগ হওয়ায় প্রাথমকিভাবে লজ্জা ও অসতেনতায় তা প্রকাশ করে না। ফলে রোগটির তৃতীয় বা চর্তুথ স্টেজে এসে ধরা পড়ে। তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তৃতয়ি ধাপেও স্তন ক্যান্সার নির্ম‚ল করা সম্ভব। অক্টোবর মাস বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস। এ জন্য যার যার জায়গা থেকে সচেতন করে তুলতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্যান্সার

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ