Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে ৬ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক

বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল কালিতলা পার্কিংএ

বেনাপোল অফিস | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১২ পিএম

বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল কালিতলা পার্কিংএ বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে ৫ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক। ফলে দু দেশের আমদানি রফতানি বানিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধ্বস নামতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো: আজিজুর রহমান।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের জটিলতা তৈরী করে ট্রাক থেকে প্রতিদিন আদায় করা হচেছ লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদা। আর চাঁদার পুরো টাকাটাই পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশী আমদানি কারকদের । ফলে বাংলাদেশে একটি আমদানি পণ্য বোঝাই ্রটাক প্রবেশ করতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। আমদানি পন্য বোঝাই ট্রাক থেকে চাদা আদায়ের জন্য সেখানে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ট্রাক থেকে মোটা অংকের চাদা আদায় ও পন্য প্রবেশে দীর্ঘ সূত্রিতার কারনে বড়বড় আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো: আজিজুর রহমান ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর ও সেখানকার ব্যবসায়ীদের সাথে একাধিকবার বিষয়টি সমাধানের জণ্য বৈঠক করলেও তা ফলপ্রসু হয়নি।

বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিবছর ভারতের সাথে ৩০ হজার কোটি টাকার বানিজ্য সম্পন্ন হয়ে তাকে এ বন্দর দিয়ে। যদিও চলতি অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছেন ৬ হাজার কোটি টাকা।
বছরে প্রত্যক্ষ ও পরক্ষ ভাবে ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে বেনাপোল কাস্টমস হাউস। ইতিপূর্বে দেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৭/৮শ’ ট্রাক পন্য আমাদনি হতো ভারতে থেকে। বর্তমানে তার সংখ্যা দাড়িয়েছে মাত্র ২/৩শ’ ট্রাকে। ওপারে বনগাও পৌরসভা কালিতলা পার্কিংএ আমদানিবোঝাই ট্রাক গুলো জোর করে প্রবেশ করাচেছ। প্রতিটি ট্রাক থেকে ড্রামারেজ বাবদ ২ হাজার টাকা করে চাদা আদায় করা হচ্ছে প্রতিদিন। বর্তমানে একটি ট্রাক বাংলাদেশে আমদানি হতে ৩০ থেকে ৩৫ দিন করে সময় লাগছে।
বেনাপোল কাস্টম সুত্র জানান, দেশের সিংহভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামাল সহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানি হয় এই বন্দর দিয়ে। ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে।

ভারত বাংলাদেশ চেস্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গড়ে উঠেছে একটি শক্তি শালী সিন্ডিকেট। বনগাও পৌর সভার নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিটি পন্যবোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে চাদা আদায় করছে। পন্যবোঝাই একটি ট্রাক দেশে প্রবেশ করতে ৩০ থেকে ৩৫ দিন সশয় লাগছে। ওপারে আটকে থাকলে তাকে ৬০ হাজার রুপী পরিশোধ করতে হচ্ছে। চাঁদার পুরো টাকা পরিশোধ করতে হচেছ আমদানিকারকদের। আমদানিকারকরা মোটা অংকের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে।
ভারতের প্রেটাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক শ্রী কর্তিক চন্দ্র জানান, কালিতলা পাকিং এ দীর্ঘদিন পন্যবোঝাই ট্রাক আটকে থাকায় মোটা অংকের ড্যামারেজ গুনতে হচেছ ওপারের আমদানিকারকদের এটা সত্য। সিরিয়ালের নামে এসব ট্রাক কালিতলা পকিং এ ঢোকানো হচ্ছে বনগাও পৌর সভার তত্বাবধানে। আমরা চাই পেট্রাপোল বন্দরের তত্বাবধানে সিরিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন হলে চাদাবাজি বন্ধ হবে এবং দ্রæত পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে।
বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচা মাল পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানি হয় এ বন্দর দিয়ে। পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক আমদানিকারক এ বন্দর ছেড়ে চলে গেছে অন্যত্র।

বেনাপোল কাস্টমস হাইসের কমিশনার মো: আজিজুর রহমান জানান, ভারতীয় প্রেটাপোল কালিতলা পার্কিং এ বর্তমানে প্রায় ৬০০০ পন্য বোঝাই ট্রাক আটাকে আছে। ফলে রাজস্ব আয় অনেক কমে গেছে। কালিতলা পাকিং থেকে একটি পন্যবোঝাই ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। রাজস্ব আয় বাড়াতে ও আমদানি রফতানি বানিজ্যকে গতিশীল করতে ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেনাপোল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ