Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অবসান হচ্ছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা: | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ৯টি গ্রামের জনসাধারণের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের শাখা যমুনা নদীর মুচির ঘাট এলাকায় একটি ব্রিজের জন্য দীর্ঘ দিন যাবৎ দাবি করে আসছিল ওই এলাকার মানুষগুলো। দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হওয়ার পথে এমনটিই জানান ওই এলাকার মানুষ। যেখানে বাঁশের সাঁকোই ছিল একমাত্র ভরসা, গ্রামের মানুষগুলোকে একটি ব্রিজের জন্য করতে হয়েছে নানা কষ্ট। কোন কারণে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গেলে দড়ি দিয়ে টানতে হতো নৌকা। সেখানেই একটি ব্রিজ হবে এমন খবরে আনন্দে উদ্দেলিত নদী পাড়ের মানুষগুলো।

উপজেলা প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা গেছে, ওই স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে,দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে একটি বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ হয়। ২০১৭ সালের স্মরণীয় ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে সাঁকোটি ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। এরপর নদীর দুই পাড়ের ৯টি গ্রামের মানুষকে জরুরী কাজে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার। সময় বাঁচাতে গ্রামবাসীরা খরার সময় হাটুপানির নদী ডিঙিয়ে এবং নদীতে পানি থাকলে নৌকায় পারাপার করেন। এতে অর্থ ও সময় দুই’ই নষ্ট হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে শিবনগর ইউনিয়নের মুচির ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর একপ্রান্তে পাঠকপাড়া ও অপরপ্রান্তে কুমারপুর। কয়েক বছর আগে একটি বাঁশের সাঁকো থাকলেও ২০১৭ সালের স্মরণীয় বন্যার পর আর দেখা মিলেনি সাঁকোটির। সাঁকোটি না থাকায় নদীর পশ্চিম প্রান্তের পাঠকপাড়া, শমশেরনগর, চোকারহাট, মল্লাই ও মদনপুরের জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পূর্বপ্রান্তের শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ ও ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া সহ বাজারে যেতে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার পথ। একইভাবে নদীর পূর্বপ্রান্তের কুয়ারপুর,মহেশপুর শিবনগর ও পলিশিবনগর গ্রামবাসীকে পশ্চিমপ্রান্তে জরুরী প্রয়োজনে যেতে হলে ঘুরে যেতে হয় ১০ কিলোমিটার পথ। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই নষ্ট হচ্ছে ওই এলাকার বসবাসরত মানুষগুলোর। কেউ কেউ সময় বাঁচাতে খরার সময় হাটুপানি পার হন আবার নদীতে বেশী পানি থাকলে নৌকায় পার হন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন-উর-রশিদ পাঠকপাড়া ও কুয়ারপুর সংযোগ এলাকার মুচিরঘাটে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেন। কিন্তু ২০১৭ সালের স্মরণীয় ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যায় সাঁকোটি। তারা বলেন, সাঁকোটি ভেঙে গেলেও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ চৌধুরী বিপ্লব তা মেরামতের কোন উদ্যেগ নেননি। একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেও কোন লাভ হয়নি তাদের। দীর্ঘদিন পর হলেও সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণ করার উদ্যেগ গ্রহণ করায় নদী পাড়ের মানুষগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন হলে ৯টি গ্রামের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।

এদিকে ব্রিজ নির্মাণের খবরে শিবনগর কুয়ারপুর গ্রামের পলিন সরকার, শেফালী বেগম এবং পাঠক পাড়া গ্রামের সুজয়, মনোরঞ্জন দাস, মন্টু মিঞা জানান, যাক দীর্ঘদিন পর সরকার তাদের কষ্টের কথা মাথায় নিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে। তবে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আহবান জানান তারা। ইউপি চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশিদ চৌধুরী বিপ্লব বলেন, নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রতিবেদন গেছে অচিরেই ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. রায়হানুল ইসলাম বলেন,ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই ব্রিজ নির্মাণে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবসান হচ্ছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ