সারা দেশের ন্যায় দ্বিতীয় ধাপে উখিয়ার ৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে ভোট গ্রহণ। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হলেও নির্বাচন পরবর্তী রত্নাপালং ইউনিয়নে একের পর এক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটে চলেছে। বিশেষ করে ঘোড়া প্রতীকের কর্মী, সমর্থকদের মারধর পূর্বক, উল্টো মামলা-হামলা, হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে বিজয়ী প্রার্থী নুরুল হুদার নির্বাচনী কর্মী বর্তমান চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এর প্রতিবাদে ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গয়ালমারা স্টেশন চত্বরে বিক্ষুদ্ধ জনতা এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী বলেন, নির্বাচন পরবর্তী এবং নির্বাচনের আগে একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে খাইরুল আলম চৌধুরী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। যা প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই জানেন।
এখনো সে প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থকদের মারধর করতেছে এবং বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমি অনেক সহ্য করেছি, প্রশাসনকে অনুরোধ করছি এসব বন্ধ করার পদক্ষেপ নিন। তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এখন থেকে আমার একটা কর্মী,সমর্থকদের উপর যদি হাত দেওয়া হয়, তাহলে উচিৎ জবাব দেওয়া হবে। এসময় তিনি তার কর্মী, সমর্থকদের ধৈর্য্য ধরারও অনুরোধ জানান।
নির্বাচন পরবর্তী একেরপর এক ঘটনায় ১০/১২ জন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে উখিয়া থানা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে।
এদিকে ঘোড়া প্রতীকের কর্মী রত্নাপালং ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত দরবেশ আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫) অভিযোগ করে বলেন, কোন কারণ ছাড়া তাকে ভালুকিয়া হারুন মার্কেটে শনিবার খাইরুল আলম চৌধুরীর লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী মোঃ ইউনুছ, আব্দুর রহিম, আবু তাহের ঘোড়া মার্কায় ভোট দেওয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে গালিগালাজ পূর্বক মারধর করেছে।
একই অভিযোগ রত্নাপালং ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মুফিজ আলম (৪০) এর। তুনি অভিযোগ করে বলেন, ঘোড়া প্রতীকের নির্বাচন করায় সাবেক ইউপি সদস্য আবুল ফজলের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের উশৃংখল একদল যুবক তাকেও মারধর করে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে।
একই কথা বলে খাইরুল আলম চৌধুরীর লোকজন লাঞ্চিত করেছে রত্মাপালং ৪নং ওয়ার্ডের মৃত আলী হোসেন ছেলে ছৈয়দ কাশেম (৬০)কে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নুরুল কবির চৌধুরী পক্ষে নির্বাচন করায় গত শুক্রবার থেকে হারুন মার্কেটে অবস্থিত তার দোকানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মারধরের শিকার রত্নাপালং ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোনা আলীর ছেলে আবুল হাশেম (২০) ও নছর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম (৪০) জানান, ভালুকিয়া হারুন মার্কেট এবং বাড়ীতে না থাকার জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরীর নিজে তাদেরকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
এছাড়াও তাদেরকে জীবনে দেখে নেবেন বলে প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, সে কারনে তারা ভয়ে বাড়ীতে অবস্থান করতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। এসময় তিনিসহ ১০/১২ জন ভুক্তভোগী উখিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে রত্মাপালং ইউনিয়নের টেলিফোন প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজ উদ্দিন বাবু বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহামদ সঞ্জুর মোরশেদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রশাসন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরেও যদি কেউ তা নষ্ট করতে চায় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এ নিয়ে প্রতিদ্বন্ধী দুই প্রার্থীর সাথে কথা বলবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।