Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জিহাদিদের অর্ধেকই ইউরোপীয় মুসলিম

প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বড় ধরনের অগ্রগতি দাবি করেছে ইরাকি সরকারি ও কুর্দি বাহিনীগুলো। তারা বলছে, ইরাকি সেনাবাহিনী দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে মসুলে হামলা শুরু করেছে। অপরদিকে পেশমেরগা পূর্বদিক থেকে মসুলমুখি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গতকাল বুধবার ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী পৃথক বিবৃতিতে অভিযানের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় পাওয়া সাফল্য তুলে ধরেছে। এসব বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মসুলের পূর্ব, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের মোট ২০টি গ্রাম বিদ্রোহীদের দখল থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইরাকি সেনাবাহিনী ও পেশমেরগার বিবৃতিতে সামরিক বা বেসামরিক হতাহতের কোনো বিবরণ দেয়া হয়নি।
এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান হামলার সাহায্য নিয়ে ৩৪,০০০ ইরাকি সৈন্য, শিয়া মিলিশিয়া এবং হাজার পাঁচেক কুর্দি যোদ্ধা চারদিক দিয়ে মসুলের দিকে এগুছে। কিন্তু এই অভিযানের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইউরোপ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিশনার জুলিয়ান কিং জার্মান পত্রিকা ডি ভেলটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকার বলেছেন, জিহাদিদের অনেকেই ইউরোপে ঢুকে পড়তে পারে। তিনি বলেন, পালানো জিহাদিদের অল্প কিছু ঢুকলেও চরম হুমকি তৈরি হবে। আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার এই উদ্বেগের কারণ রয়েছে। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য বলছে, মসুলে যে ৫০০০ এর মত আই এস যোদ্ধা রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ইউরোপীয় মুসলিম রয়েছে। জুলিয়ান কিং আরও বলেন, মসুলে ইউরোপীয় মুসলিম জিহাদিদের সংখ্যা কম-বেশি ২৫০০ হতে পারে। তিনি বলেন, এরা সবাই যে পালিয়ে ইউরোপে ঢুকতে পারবে তা হয়ত নয়, কিন্তু অল্প কিছু ঢুকলেও বিপদ তৈরি হবে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য ত্রাণ সংস্থা সাবধান করছে, চলতি সামরিক অভিযানের ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসে ১০ লাখ লোক বাস্তচ্যুত হতে পারে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ভয় পাছে, আই এস যোদ্ধারা বেসামরিক লোকজনকে মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার জন্য তাদেরকে আটকে রাখার চেষ্টা করবে। আবার অনেক যোদ্ধা বেসামরিক লোকজনের ছদ্মবেশে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সেটাই ইউরোপের ভয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পিটার কুক বলেছেন, মসুলে আই এসের কয়েক হাজার যোদ্ধা পালানোর চেষ্টা করবে, নাকি শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে - তা এখনও বোঝা যাছে না।
গত সোমবার ভোরে আইএসের বিরুদ্ধে অভিযানরত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিমান হামলার ছত্রছায়ায় মসুলমুখি অভিযান শুরু করে ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী। এর আগে ভোররাতে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি মসুল অভিযানের ঘোষণা দেন। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরটি ২০১৪ সালে আইএসের দখলে চলে যায়। তারপর থেকে গত দুই বছর ধরে শহরটি কট্টরপন্থি উগ্রগোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে আছে। মসুলের পতন হলে তা ইরাকের লড়াইয়ে আইএসের পরাজয় হিসেবে বিবেচিত হবে। আইএস ইরাকের প্রতিবেশী সিরিয়ারও বেশ কিছু অংশ দখল করে রেখেছে। বর্তমানে সিরিয়া ও ইরাক মিলিয়ে আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকা শহরগুলোর মধ্যে মসুল বৃহত্তম। এই শহরটিতে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। ২০১৪ সালে এই শহরটি থেকেই ইরাক ও সিরিয়ার দখলকৃত অংশে খিলাফত ঘোষণা করেছিল গোষ্ঠীটি। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিহাদিদের অর্ধেকই ইউরোপীয় মুসলিম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ