Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইউপি নির্বাচনে হাতপাখাকে ঠেকাতে সকলে ঐক্যবদ্ধ - পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ৭:২৮ পিএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঠেকাতে বড় দলগুলো একজোট হয়ে মাঠে নেমেছে। সরকার দলীয় দস্যুরা নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতনের স্টিমরোলার চালাচ্ছে। প্রশাসন দস্যুদের না থামিয়ে তাদের প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় বিজয়ী ঘোষণা করতে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, বিনা চ্যালেঞ্জে এবং খালি মাঠে গোল দেয়ার পথ রুদ্ধ করতে হবে। তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, দলীয় মাস্তানদের থামান। অন্যথায় ধৈয্যের সীমা ভেঙ্গে গেলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

আজ বুধবার বিকেলে বরিশালের চরমোনাই মাদরাসা মিলনায়তনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের মজলিসে শুরা অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাাদানী, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মাওলানা আব্দুল আউয়াল পীর সাহেব খুলনা, মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারি মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, নবনির্বাচিত চরমোনাই ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি জিয়াউল করীম। শুরা অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের তত্ত্বাবধায়ক আলহাজ আমিনুল ইসলাম।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতিই পারে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে উন্নত জীবন যাপনের নিশ্চয়তা প্রদান করতে। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে প্রণয়ন করেছিলেন ইসলামী শ্রমনীতি। ইসলামী শ্রমনীতির মূল কথাই হলো শ্রমজীবি মেহনতি মানুষের উপরে কোনো ধরণের জুলুম নির্যাতন, অধিকার বঞ্চিত করা যাবে না। শ্রমিকদের সাথে কোনো ধরণের খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান করতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইতিহাসের সকল উত্থান-পতনে শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শ্রমিকরা ইচ্ছে করলে মূহুর্তেই পরিবর্তন ঘটিয়ে দিতে পারেন। মালিক শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। মালিক যা খাবে শ্রমিক তাই খাবে। মালিক যা পরিধান করবে শ্রমিকদের তাই পরিধান করার ব্যবস্থা করতে হবে।

শুরা সম্মেলনে সারাদেশ থেকে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের শতাধিক শুরা সদস্য অংশ গ্রহণ করেন। অধিবেশনে আলহাজ মো. আমিনুল ইসলামকে কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঢাকার সাবেক মেয়র প্রার্থী আলহাজ মো. আব্দুর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমানকে সেক্রেটারি জেনারেল করে কমিটি ঘোষণা করেন দলের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই।

পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, শ্রমিকরা আমাদের সমাজে প্রতিটি স্তরে অবহেলিত। তারা প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। রাসূল (সা.) ছিলেন শ্রমজীবীদের কাছের মানুষ। তিনি শ্রমজীবী মানুষদের খুব ভালোবাসতেন। রাসূল (সা.) ঘোষণা দিয়েছেন, শ্রমিকরা আল্লাহর বন্ধু। আল্লাহর রাসূল (সা.) শ্রমিকের অধিকার কায়েম ও তাদের প্রতি ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমান সময়ের দুর্ভাগ্য শ্রমিক মেহনতি মানুষ সবদিক থেকে অধিকার বঞ্চিত। অথচ আমাদের কাছে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনুপম আদর্শ রয়েছে। তাই শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাসূল (সা.)-এর শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, শ্রমিক বিপ্লব ঘটানোর মাধ্যমে ইসলামী বিপ্লব কায়েম করতে হবে। শ্রমিকগণ দেশের অন্যতম শক্তি। শ্রমিকরা ইচ্ছে করলে অনেক কিছু করতে পারেন। জ্বালানি তেল বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকরা সারাদেশ মূহুর্তেই অচল করে দিয়েছে। তেমনিভাবে বিনা ভোটের সরকারকে পতন ঘটাতে শ্রমিকদের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, নারী নেতৃত্বের অবসান করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে হাতপাখাকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে শ্রমিকরা আরো বেশি ভূমিকা পালন করবে।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, সারাদেশে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন শক্তিশালী নেতৃত্ব সৃষ্টি করেছে। দ্বীন বিজয়ের আন্দোলনে আগামীতে আরো বেশি ভূমিকা পালন করবে। তিনি নতুন নেতৃত্বকে দ্বীন বিজয়ের আন্দোলনে আরো শক্তিশালী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। দ্বীনকে বিজয় করতে যুগে যুগে শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আমাদের দেশেও দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শ্রমিকরা অগ্রগামী। ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমিকরা বর্তমান সময়েও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জাতীয় নির্বাচনের মত বিনা ভোটে চেয়ারম্যানদেরকে বিজয়ী করতে সরকার মরিয়া। হাতপাখার চেয়ারম্যান প্রাথীদের হুমকি-ধমকি এবং নির্যাতন করে বিজয় ছিনিয়ে নিচ্ছে। তিনি সাধারণ ও শ্রমিক সমাজের প্রতি লক্ষ্য রেখে নিত্যপ্রয়োজণীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর দাবি জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পীর সাহেব চরমোনাই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ