Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুলনার ডুমুরিয়া, যেদিকে চোখ যায় শুধু শিম আর শিম !

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৫৬ পিএম

শিম মূলত শীতকালীন সবজি। গ্রীষ্মেও চাষ চলে, ভালো ফলন হয়। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় এবার শীতে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চারিদিকে শুধু শিম আর শিম। ক্ষেত থেকে কয়েক দফা শিম তোলা হয়ে গেছে। এখনো ফুল আসছে। ফেব্রুয়ারী-মার্চ পর্যন্ত প্রায় একই রকম ফলন হবে। শিমের ভাল বাজার মূল্য পেয়ে খুশি কৃষকরা।
খুলনার শস্যভান্ডার খ্যাত ডুমুরিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ, ক্ষেত ও মাছের ঘেরের আইলে শিমের চাষ করা হয়। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই সবুজ-বেগুনী রংয়ের শিম ফুলে প্রকৃতি যেন একাকার। শীত মৌসুমের শুরুতে মনোরম শিমের ফুলে ভরে উঠেছে ডুমুরিয়ার মাঠ-ঘাট, খাল-বিল ও ঘের-পুকুরের পাড়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়ায় সাড়ে ৩ হাজার কৃষক প্রায় ১৭০ হেক্টর বা ১২৭০ বিঘা জমিতে শিমের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ২৫ টন করে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টন শিম উৎপাদন হবে। এখানে লাল ফুল জাতের শিমের বেশি ফলন হয়ে থাকে। তাই প্রায় ৯৫ শতাংশ জমিতেই লাল ফুলের শিম আবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে বাজারে শিমের বেশ ভালো দাম রয়েছে। মাস খানেক আগে শিম প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজি। এখন তা নেমেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
ডুমুরিয়ার আটরিয়া ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল হক বলেন, ছোটকাল দেখেছি শিম লাগানো হতো ভিটে বাড়িতে। জমিতে হতো ধান। এখন চাহিদা বেড়েছে, ফলনও বেড়েছে তাই শিম চাষ করতে জমি, ভিটা, রাস্তাঘাট, খাল কিছুই বাদ নেই। যার যেখানে জমি ফাঁকা আছে শিম গাছ লাগিয়েছে। আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানিতে অথবা শিশিরে ফুল ভিজে শিমের পঁচে যেত। কিন্তু বর্তমানে শিমের উন্নত জাতের উদ্ভাবনের কারণে ওই ধরনের সমস্যা নেই, এখন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই শিম চাষ করা যাচ্ছে। তাই সকলে শিম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
একই ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিম চাষ করে আমরা লাভবান হওয়ার আশা করছি। দশ বিঘা মাছের ঘেরের পাড়ে শিম চাষ করেছি। যেভাবে ফলন এসেছে তাতে সকল খরচ করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মত লাভ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। ভান্ডার পাড়া ও শরাফপুর ইউনিয়নের শিম চাষীরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গোটা উপজেলা জুড়ে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। শিম চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিম চাষ খুব ভালো হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। শিম উৎপাদন করতে কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অফিস শিম চাষীদের বিভিন্ন সময় এসব ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে। ডুমুরিয়ার শিমের কদর সারা দেশ জুড়ে রয়েছে। কৃষকরা যাতে শিমের ন্যায্য মূল্য পায়, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি। তিনি আরো বলেন, দেশে পঞ্চাশটিরও বেশি স্থানীয় শিমের জাত আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বাইনতারা, হাতিকান, চ্যাপ্টা শিম, ধলা শিম, পুটি শিম, ঘৃত কাঞ্চন, সীতাকুন্ডু, নলডক ইত্যাদি। বারি শিম ১, বারি শিম ২, বিইউ শিম ৩, ইপসা শিম ১, ইপসা শিম ২, একস্ট্রা আর্লি, আইরেট ইত্যাদি আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত। এর প্রায় সবগুলোই ডুমুরিয়াতে আবাদ হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সবজি

৪ এপ্রিল, ২০২২
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৯ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ