Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সরকার হটানোর আন্দোলনের সর্বাত্মক কর্মসূচির কোনো বিকল্প নেই- আবদুল্লাহ আল নোমান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:২৬ পিএম

সরকার হটানোর আন্দোলনের সর্বাত্মক কর্মসূচির কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে আজ বুধবার

জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের(রুনেসা) উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা ও অগ্নিঝরা মতিহার এবং রিজভী আহমেদ’ শীর্ষক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীরের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর রহমান শামীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, নুরুজ্জামান তপনসহ রুনেসার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে আপনি যদি সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি দেন সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন যে বক্তব্য ভেসে আসছিল সেই শক্তি ভেসে আসবে। কিন্তু কর্মসূচি দিতে হবে। কর্মসূচিটা কিসের? সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচি। কান টানলে মাথা আসবে, কানটা টানবো মাথাটা আসবে-এই প্রক্রিয়া যদি যেতে পারি তাহলে আমরা সফল হব।

সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ আমার কাছে যেটা মনে হয়-এই দিন শেষ দিন না, আরো দিন আছে। বিচার দেখেন নাই এখনও। এখন যে দুর্নীতি-লুটপাট, হত্যা-গুম, আমেরিকায় কার কী ভিসা বাতিল করেছে এই নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন না, এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না।আরে ভাই, আপনারা প্রস্তুত হন, বিচারের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতে হবে। ভাবার কোনো কারণ নাই যে, আপনি লুটপাট করেছেন ক্ষমতায় সারা জীবন এখানে থাকবেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিতসাধীন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রসঙ্গ টেনে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এটা হচ্ছে বাস্তব। অনেক পার্থক্য আছে বাংলাদেশের সাথে ইউরোপ-আমেরিকার চিকিৎসা ব্যবস্থা। আমি নিজে অসুস্থ হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসা করিয়ে এসেছি। আমি এটা ফিল করেছি।আমার সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে বেঁচে থাকার অধিকার। এটা সরকারের দায়িত্ব অথচ তারা সেটা গ্রহন করছে না। কাজেই সরকার অবশ্যই গ্রহন করবে যদি আমরা আামাদের শক্তিকে আরো জোরদার করতে পারি, একাবদ্ধ হতে পারি। আমাদের প্রয়োজনে, দেশমাতৃকার প্রয়োজনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
সেজন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান এই প্রবীন নেতা।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বন্দি নয়, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে লড়াই করছে। তার মুক্তি ও বিদেশে তার সুচিকিতসার দাবিতে আমাদের এই মুহুর্তে রাস্তায় নেমে পড়া উচিত। আমরা প্রায় বলে থাকি, তার(খালেদা জিয়া) যদি কিছু হয় তাহলে সরকারকে জবাব দিতে হবে। তার কিছু হওয়া পর্যন্ত আমরা সময় দেবো কেনো? তার কিছু হবে কেনো? এই মুহুর্তেই আমাদের রাস্তায় নামা উচিত। যার ঘোষণা ও আন্দোলনে সেই আওয়াজ তরঙ্গায়িত হতো সারাদেশে, বিদ্যুত স্পৃষ্ঠের মতো আমাদেরকে উদ্ধুব্ধ করতো, স্বচকিত করতো আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আজকে গণতন্ত্রের মা ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতীক যিনি দেশের স্বার্থকে কোনো দিন বিসর্জন দেননি সেই নেত্রী আজ একটা হিংসা, প্রতিহিংসা, ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে বন্দি করে রেখে যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই, যাদের কোনো জনগনের সমর্থন নেই এমন একটা দখলবাজ সরকার।

উল্লেখ্য আজ ২২শে ডিসেম্বর১৯৮৪ সাল ঐতিহাসিক "ছাত্র-শ্রমিক সংহতি দিবস " এই দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মতিহার চত্তরে ধর্মঘট চলা অবস্থায় গুলি বিদ্ধ হন রিজভী আহাম্মেদ। ১৯৮৪ সাসের ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ দেশ ব্যাপি ধর্মঘটের ডাক দেয়। সেই ধর্মঘট আন্দোলনের বেগে হরতালে রূপ নেয়। সেই ধর্মঘট সফল করতে সেই সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা একাধিক ভাগে ভাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ষ্টেশন, কাজলা গেট এলাকায় অবস্থান নেয়।আরও গুলি বিদ্ধ হন জাসদ ছাত্রলীগের শাহজাহান সিরাজ বুকে বুলেট বিদ্ধহয়ে ষ্টেশনে লুটে পরে। পরের গুলি সোহরাওয়ার্দী হলের তিন তালার বারান্দায় বিদ্ধ হয় পত্রিকার হকার আব্দুল আজিজের মাথায়। হকার আজিজ ওখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।ছাত্রদের রক্তের সাথে শ্রমিকদের রক্ত একই ধারায় প্রবাহিত হয়। আর তাই ২২ ডিসেম্বর কে ঘোষনা করা হয় "ছাত্র-শ্রমিক সংহতি দিবস " হিসাবে। সেইদিন একই সময়ে ষ্টেশন ও হলের মাঝামাঝি স্থানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীর সাথে থাকা কোমরের পিছে গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয় ছাত্রনেতা রহুল কবির রিজভী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ