Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশের পাশে থাকবে তুরস্ক

রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে কক্সবাজারে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজার ব্যুরো ও উখিয়া উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সহযোগী হিসেবে তুরস্ক শুরু থেকে বাংলাদেশের পাশে আছে উল্লেখ করে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলাইমান সয়লু বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে, তা বিশ্বে বিরল। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান দরকার। বিশ্ব নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেই কেবল এটি সম্ভব। যতদিন এ সংকট কাটছে না, ততদিন বাংলাদেশের পাশে থেকে সংকট সমাধানে এবং রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে তুরস্ক।

গতকাল শনিবার সকালে বালুখালী ৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেলো বছরের ২২ মার্চের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া তার্কিশ সরকারি সংস্থা আফাদ পরিচালিত ৫০ শয্যার ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
পরে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একই এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে আশ্রয়হারা রোহিঙ্গাদের জন্যে নির্মানাধীন অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি রোহিঙ্গা যুবকদের সাথে কিছুটা সময় খেলায় মেতে উঠেন এবং বিভিন্ন বয়সের মানুষের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি ১৭ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তুর্কি রেড ক্রিসেন্টের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম এবং তুরস্কের দিয়ানাত ফাউন্ডেশন পরিচালিত রোহিঙ্গা দ্বারা সাবান তৈরীর কারখানা পরিদর্শন করেন।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ভাইস মিনিস্টার ইসমাইল ছাতাকলু,স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ভাইস মিনিস্টার খালিল বল দামির, তুরস্কের দু’জন সংসদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান,চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় বিশেষ বিমানে করে তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকে সরাসরি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি
দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী, রেস্টুরেন্টে টিকা সনদ ছাড়া প্রবেশ নিষেধ, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জেল-জরিমানার সিদ্ধান্ত আসছে
একলাছ হক
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মহামারি করোনভাইরাসের এ নতুন ধরনটি। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলেও হাটবাজার, শপিংমল, বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সর্বত্রই উদাসীনতা। ইতোমধ্যে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক করা হয়। বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নানা নির্দেশনাও দিয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন। এসময় তিনি বলেছেন, লঞ্চ এবং ট্রেনে উঠতে গেলেও ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার চিন্তা করছে সরকার। বাড়ির বাইরে মাস্ক ছাড়া চলাচল বন্ধ থাকবে।

এছাড়াও মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতাল ও নার্স-চিকিৎসকেরা সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সকল দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। রেস্টুরেন্টে টিকা সনদ ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ যাত্রীবাহী সকল পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি না মানা, মাস্ক ছাড়া বাইরে গেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল-জরিমানা করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

কিন্তু মহামারি ঠেকাতে কোন ক্ষেত্রেই নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। রাস্তা থেকে অফিস, বাজার-বন্দর, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন, নৌবন্দর কোথাও নেই স্বাস্থবিধি। কোন কোন অফিসে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকলেও ব্যবহার নেই। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিকভাবে মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। কেউ কেউ মাস্ক পড়লেও সঠিকভাবে পড়েন না। থুতুনির উপরে রেখেই দায়িত্ব সারেন অনেকে। স্বাস্থ্যবিধি পালনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় উদাসিনতা। গতকাল রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, আজিমপুর, ফার্মগেটসহ কয়েকটি এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।

বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলির রাস্তার চিত্র একই। মুদি দোকান ও চায়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বাড়তি জটলা। খোলা দোকানপাটের সামনে কেউ কেউ খোশগল্পেও মেতেছেন। মানছেন না কোনো ধরনের বিধিনিষেধ। অন্যদিকে কাঁচাবাজারেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের প্রবণতা দেখা যায়নি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে। ক্রেতা-বিক্রেতা অনেকের মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক। সংক্রমণ রোধে গণপরিবহনে অর্ধেক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ ক্ষেত্রে কোনো ভাড়া বাড়ানো যাবে না। তবে মানুষের মধ্যে এখনো কোনো রকমের সচেতনতা কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

সবধরনের গণপরিবহনে যে যার মতোই চলাফেরা করছেন। গণপরিবহনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি না মানার ক্ষেত্রে দিচ্ছেন একেক রকম যুক্তি। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলার বিষয়টি আলোচনায় আসলেও এখনও জানেন না মালিক-শ্রমিকরা। মতিঝিলে একটি যাত্রীবাহী বাসে দেখা যায় প্রায় অর্ধেকসংখ্যক যাত্রীর মুখেই মাস্ক নেই। মাস্ক নেই বাসের চালক ও হেলপারের মুখেও। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠছেন যাত্রীরা। বাসে উঠার পর সিট নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। একই অবস্থা রাজধানীর অন্য এলাকাগুলোতেও। বেশিরভাগ রিকশার আরোহী ও চালকের মুখেও নেই মাস্ক।

সাকিব নামের এক বাসযাত্রী বলেন, আমি নিয়মিত বাসে যাতায়াত করি। কিছুদিন আগেও বাসে যাত্রীরা মাস্ক পড়তেন। এখন বেশিরভাগ যাত্রীরাই মাস্ক পড়েন না। করোনার প্রকোপ কমে গেছে তাই এখন আর মাস্ক পড়া হয় না। তবে নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসায় আমরা আতঙ্কিত। এখনো মানুষ এ ব্যাপারে সচেতন নয়।

মতিঝিল কলোনী বাজারে দেখা যায় কোন ব্যবসায়ীই স্বাস্থবিধি মানছেন না। বেশিরভাগ ক্রেতারই মুখে নেই মাস্ক। যে যার মতো গাদাগাদি করে বাজারে কেনাকাটা করছেন। এ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ বলেন, আগের মতো এখন আর স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আমার দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রেখে দিয়েছি কিন্তু কোন ক্রেতা এসব ব্যবহার করেন না।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, এখন করোনা আর স্বাস্থ্যবিধির কথা কেউ বলে না। অফিস করছি স্বাভাবিকভাবে। মাঝে মাঝে কিছু সময়ের জন্য মাস্ক ব্যবহার করছি। আর বাকি সময় থাকে না। আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার আগের মতো ব্যবহার করা হয় না।
একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. লিমন হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সংক্রমণ যাতে না বাড়ে তাই সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। আর স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।

ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতাল ও নার্স-চিকিৎসকেরা সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সকল দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। রেস্টুরেন্টে টিকা সনদ ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ যাত্রীবাহী সকল পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মাস্ক ছাড়া বাইরে গেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল-জরিমানা করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ