Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যাত্রীবেশে ভয়ঙ্কর ডাকাত

চট্টগ্রামে প্রবাসী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার চক্রের ৬ সদস্য

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

একটি মাইক্রোবাস। তাতে একজন চালক, কয়েকজন যাত্রী। মাইক্রোবাসটি অপেক্ষা করে মহাসড়কে। কোন যাত্রী পেলে তুলে নেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর ওই যাত্রীকে জিম্মি করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র। এরপর সুযোগ বুঝে ওই যাত্রীকে ছুঁড়ে ফেলা হয় নির্জন কোন স্থানে। যাত্রীবেশে ভয়ঙ্কর এই চক্রের সদস্যরা খুনও করে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক প্রবাসী খুনের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ এই চক্রের সন্ধান পেয়েছে। পুলিশ বলছে, এই চক্রটি গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে মহাসড়ক থেকে যাত্রী তুলে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ফেলে দিত মহাসড়কে।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা ও আকবরশাহ থানা পুলিশ বুধবার রাতে নগরীর অলঙ্কার মোড় থেকে ওই চক্রের ছয় সদস্যকে পাকড়াও করে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) মো. শামসুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ চক্রটি বরিশাল থেকে ঢাকা হয়ে যাত্রী বেশে চট্টগ্রামে আসে। পথে যাত্রী হিসেবে কাউকে তুলতে পারলে তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এরা মূলত আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য। গ্রেফতার ছয়জন হলেন- মো. শাহ আলম আকন (৩২), আবুল কালাম (৪৭), মো. জাকির হোসেন সাঈদ (৩৬), মো. আল আমিন (২৯), মিজানুর রহমান (৫৩), নাহিদুল ইসলাম ওরফে হারুণ (৩১)।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ চক্রটি গত ১৯ ডিসেম্বর হোসেন মাস্টার নামের এক প্রবাসীকে অলঙ্কার মোড় থেকে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ নেয়ার কথা বলে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। বিমানের টিকিট কিনে নগরীর আগ্রাবাদ থেকে ফিরছিলেন তিনি। গাড়িতে তুলে গন্তব্যে না নামিয়ে তাকে জিম্মি করে কুমিল্লার দিকে নিয়ে যায় তারা। এরপর হোসেনের সাথে থাকা ১০ হাজার টাকা, পাসপোর্ট, ভিসা, দুইটি স্বর্ণের আংটি, ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
কিছুক্ষণ তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতারিয়া এলাকায় রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। গুরুতর আহত হোসেনকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে একদিন পর মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নগরীর পাহাড়তলী থানায় মামলা করে তার পরিবার। মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়েই ওই ডাকাত চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই প্রবাসীর মত এ চক্রের খপ্পরে পড়ে আরও অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন। গত কয়েক মাসে অন্তত অর্ধশত ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে তারা।
গ্রেফতার ছয়জনের কাছ থেকে একটি মাইক্রোবাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ডাইভার, ছুরি, প্লাসসহ ডাকাতির সরঞ্জাম, ১০টি মোবাইল সেট, একটি পাসপোর্ট ও একটি ভিসার কপি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার শাহ আলম, আবুল কালাম, জাকির ও আল আমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতির করার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতার ছয়জনের মধ্যে মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালী থানা এবং খুলনার খালিশপুর থানা এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণের দোকানে লুট, নগরীর হালিশহরে ব্যাংক ডাকাতিসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। প্রবাসীকে তুলে নিয়ে খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ওই ছয়জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রবাসী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ