পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বহু বছর পর নির্বাচন চলাকালীন সময়ে মূল প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীরা ভোট কারচুপি এবং অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি; তা হলো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। গতকাল সিটির ১৯২ ভোটকেন্দ্রে ইলেট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। তবে প্রার্থী ও ভোটারদের মূল অভিযোগ ছিল ইভিএমের বিরুদ্ধে। ইভিএমের ত্রুটির কারণে অনেকেই ভোট দিতে পারেননি। আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় অনেক ভোটারকে ফিরিয়ে দিয়ে বিকেলে ভোট দিতে আসতে বলা হয়। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের দুই থেকে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আঙ্গুলের ছাপ মেলানোর জন্য পানিতে হাত ধুঁইয়ে আসতে হয়। কারো কারো আঙ্গুলে ভ্যাসলিন মেখে ছাপ মেলানোর চেষ্টা হয়। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ-বৃদ্ধারা আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন।
গতকাল সারাদিন ইনকিলাবের তিনজন রিপোর্টার ও তিনজন ফটো সাংবাদিক নির্বাচনী এলাকায় ঘুরেছেন। তারা মেয়র, কমিশনার প্রার্থী, রিটানিং, পুলিং অফিসার, আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী ছাড়াও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রায় সকলেই বলেছেন, ইভিএমের কারণে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে, ভোটারদের ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এমনকি অনেকেই ভোট দিতেই পারেননি। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের পরও ভোট নিতে হয়েছে।
বন্দর থানার কদমরসুল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। তারা জানান, ভিতর থেকে অন্য ভোটার ভোট দিয়ে বের না হওয়ায় আমাদের ডাকা হচ্ছে না। একজন ভোট দিয়ে বের হয়ে এসে জানান, হাতের আঙ্গুলের ছাপ মেলাতে তার ৫ মিনিট সময় লেগেছে। ভিতরে গিয়ে পুলিং আফিসারের কাছে জানতে তাইলে তিনি স্বীকার করেন ভোট দিতে বিলম্ব হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিং অফিসার বলেন, অনেকের আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার পর তাদের ছবি ভাসছে না। বাধ্য হয়েই তাদের বিকেলে আসতে বলা হয়েছে। বন্দর থানার শাপের চর এলাকার পশ্চিম বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ভোটার অভিযোগ করেন আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় তাকে বের করে দেয়া হয়েছে। ভিতরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার হাতের আঙ্গুরের ছাপ মেলেনি। পরে পানি দিয়ে ধূঁইয়ে এবং ভ্যাসলিন লাগিয়ে চেষ্টা করা হলেও আঙ্গুলের ছাপ মেলেনি। ফলে তার ভোট নেয়া সম্ভব হয়নি।
সোনাকান্দা বালক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটারার জানান, ভোট দিতে আসা বেশির ভাগ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় তাদের অনেকের ভোট গ্রহণ সম্ভব হয়নি। তবে কারো কারো আঙ্গুলে ভ্যাসলিন মেখে এবং পানিতে ধুঁইয়ে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বন্দর উপজেলার বিএম স্কুল, সোনাকান্দা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ইভিএম ঠিকমতো কাজ না করায় ভোটারদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নবিতুন নেছা নামের এক ভোটার জানান, তিনি লাইনে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে পেরেছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্চ সদরের দেওভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। একাধিক টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা ভিতরে গেলে জানানো হয় একটি ভোগ গ্রহণে তিন থেকে ৬ মিনিট সময় লাগছে। ইভিমের বটম বুঝতে না পারায় অনেকেই ভুল করে অন্য প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। বিবি মরিয়ম স্কুল কেন্দ্রে দেখা যায় অনেক ভোটার ইভিএমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
তাদের অভিযোগ, সাধারণ ব্যালটে ভোট গ্রহণে করা হলে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না। আমলাপাড়া মহিলা স্কুল কেন্দ্রে এক পুলিং অফিসার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অযথাই ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ভোট নিতে গিয়ে বিবৃতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। মো. শহীদ নামের এক বৃদ্ধ জানান প্রথমে তার আঙ্গুলের ছাপ মেলেনি। পরে ভ্যাসলিন মাখিয়ে চেস্টা করার পরও ইভিএম ছবি ভাসেনি। পরে পানিতে হাত ধুুঁইয়ে ভোট দেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শতভাগ (১৯২টি) কেন্দ্রে ইলেট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিল্পাঞ্চল খ্যাত এই সিটিতে শ্রমিক, স্বল্পশিক্ষিত, গৃহিনী ও বয়স্কদের মধ্যে ইভিএমে ভোট নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। এমনকি প্রার্থীরাও ইভিএমের না করে ব্যালটে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দাবি করে বলেছিল, ইভিএমে ভোট প্রদানে ভোটাদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আধুনিক ও সহজ পদ্ধতি হওয়ায় ব্যালটে ভোট গ্রহণের চেয়ে এটি সহজ ও দ্রæত হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ভোটারদের। একই সঙ্গে যারা ভোট গ্রহণ করেছেন সেই প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিং অফিসার তারাও চরম বিড়ম্বনায় পড়ে যান।
ভোটের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার জানিয়েছিলেন, ১৯২টি কেন্দ্রের ১৩৩৩টি ভোট কক্ষে ইভিএমেই ভোট গ্রহণের কথা। নির্বাচন কমিশনে ২৪০ জন দক্ষ ট্রেইনার ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।