Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোনো টাকা চাননি সার্জেন্ট ক্ষমা চাইলেন সেই বিদেশি

টাকা ছুড়ে মারার ভিডিও ভাইরাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবের সামনে এক ট্রাফিক সার্জেন্টের উদ্দেশ্যে চীনা নাগরিকের টাকা ছুড়ে দেয়ার ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে সার্জেন্টের কোনো দোষ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই চীনা নাগরিক বিনা কারণে মেজাজ হারিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়াও ওই চীনা নাগরিক প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এরই মধ্যে চীনা নাগরিকের গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা বলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ। তার বক্তব্যেও কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ও অন্য ট্রাফিক সদস্যদের কোনো দোষ পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে ওই চীনা নাগরিককে ডাকা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ডিসি সাহেদ আল মাসুদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, রাওয়া ক্লাবের সামনে ট্রাফিক পুলিশকে চীনের এক নাগরিক টাকা ছুড়ে মারেন। এ সময় ওই চীনা নাগরিক কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইউ ওয়ান্ট মানি, আই গিভ ইউ দিস (তুমি টাকা চাচ্ছ, আমি তোমাকে টাকা দিচ্ছি)’। এই ঘটনার ভিডিও গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিও প্রকৃত ঘটনা জানতে ইতোমধ্যে খোঁজ খবর নিচ্ছে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ।

ডিসি সাহেদ আল মাসুদ বলেন, রাওয়া ক্লাবের সামনে ট্রাফিক সদস্যদের উদ্দেশে চীনা নাগরিকের টাকা ছুড়ে দেয়ার ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের কাছে নিজের আচরণের জন্য মোবাইল ফোনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওই চীনা নাগরিক। ঘটনার বিস্তারিত জানতে ওই চীনা নাগরিককে আমরা ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি ফোনে আমাদের বলেছেন, কাগজপত্র চাওয়ার কারণে তিনি রেগে যান। এ ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ঘটনাটির যে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছিল এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তাই তিনি ফোনে সরি বলেছেন। পুলিশকে ওই চীনা নাগরিক আরও বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন। যেহেতু একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, সেখানে তিনি নিজের বক্তব্য পুলিশকে জানাবেন। তবে তিনি এখনও পুলিশকে অফিশিয়ালি কোনো লিখিত বক্তব্য দেননি।

পুলিশ জানায়, ওই চীনা নাগরিক ফোনে আরও বলেন, যদি তার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়, তাহলে তা নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। ঘটনার পর এ বিষয়ে আমরা ডিএমপির কাফরুল থানায় একটি জিডি করেছি। সেদিন কী ঘটেছিল, তা জানতে আমরা তদন্ত করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তে জানতে পেরেছি, ওই চীনা নাগরিক সিএলএক্স নামে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ঘটনার দিন তিনি একটি প্রাইভেটকারে করে অফিসে যাচ্ছিলেন। পরে রাওয়া ক্লাবের সামনে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট তার গাড়ি থামিয়ে চালকের কাছে কাগজপত্র দেখতে চান। চালক কাগজ দেয়ার পর সার্জেন্ট তা পরীক্ষা করে দেখছিলেন। এর মধ্যেই ওই চীনা বিনা কারণে উত্তেজিত হয়ে মেজাজ হারিয়ে টাকা ছুড়ে মারেন।
কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা কোনো টাকা চেয়েছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-কমিশনার সাহেদ আল মাসুদ বলেন, ঘটনার সময় উপস্থিত কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টের বুকে ক্যামেরা ছিল। ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে আমরা এ ধরনের কোন তথ্য পাইনি। এছাড়া উপস্থিত জনতা কেউই এ ধরনের কথা বলেনি।

গাড়িচালককে ডেকে কথা বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তিনিও আমাদের বলেছেন, কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা শুধুমাত্র গাড়ির কাগজ দেখতে চেয়েছিলেন। গাড়ির কাগজ পরীক্ষা করতে দুই-তিন মিনিট যে সময় লাগে, তা শেষ না হওয়ার আগেই ওই চীনা নাগরিক গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। গাড়ি থেকে নেমে তিনি বিনা কারণে উত্তেজিত হয়ে এ ঘটনা ঘটান। আগে বা পরে গাড়ির চালক ব্যতীত কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ওই চীনা নাগরিকের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

এ ঘটনার তদন্ত চলমান উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত কর্তব্যরত ট্রাফিক সদস্যের কোনো ধরনের গাফিলতি বা অপরাধ পাওয়া যায়নি। তিনি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের কাজ করছিলেন। এ বিষয়ে চালকের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ওই চীনা নাগরিক কেন বিনা কারণে উত্তেজিত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তা জানতে তাকেও আমরা ডেকে পাঠিয়েছি। তার সঙ্গে কথা বললে এ বিষয়ে আমরা আরও জানতে পারব।
ডিএমপির কাফরুল থানায় দায়ের করা জিডির তদন্ত করছেন এসআই শ্যামল কুমার হালদার। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। বুধবার জিডি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যের কোনো দোষ আছে কি না, তা এখনো আমরা পাইনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভিডিও ভাইরাল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ