Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি অবনতিশীল

আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়লেও ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি অনুপস্থিত

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৪ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভাইরাস আবার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ সংখ্যা ও হার বাড়ছে। এ অঞ্চলে শনাক্তের হার ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ ভাগের কাছে। মহানগরী সহ বরিশাল জেলার এবং পিরোজপুর ও ভোলা এখন করোনার আঁতুড় ঘর। তবে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালবাঠীর অবস্থাও ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। রোববার দুপুরের পূর্ববর্তি ৪৮ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আরো ২২৬ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে রেরববার দুপুরর পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায়ই শনাক্তের সংখ্যা ১৭৪। ফলে চলতি মাসের ২২ দিনে শনাক্তের সংখ্যা দাড়াল ৭৫৯ জনে।
অথচ গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে এ অঞ্চলের ৬ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০৫ জন। এরমধ্যে অক্টোবরে ২১৭, নভেম্বরে ৬৬ এবং ডিসেম্বর মাসে সংক্রমন সংখ্যাটা ছিল ২২ জনে । অক্টোবরের প্রথম পক্ষে দু জনের মৃত্যু হলেও নভেম্বর ও ডিসেম্বরে কোন মৃত্যু ছিল না। চলতি মাসেও এখন পার্যন্ত কোন মৃত্যু সংবাদ নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে পরিস্থিতি অবনতির মুখেও বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও নুন্যতম স্বাস্থ্যবিধি পালিত হচ্ছে না। খোদ বরিশাল মহানগরীর ৮০ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিলেও মহানগরীতে কয়েকটি বেসরকারী স্কুলে রোববারও ক্লাস নিতে দেখা গেছে। এ অঞ্চলের কোথাও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনের বালাই নেই।
অপরদিকে সংক্রমন বৃদ্ধির সাথে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও ক্রমাগত বাড়ছে। রোববার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ড ২৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল বলে পরিচালক জানিয়েছেন। তবে আইসিইউ’তে কোন রোগী চিকিৎসাধীন নেই বলে জানা গেছে। পরিস্থিতির অবনতি বিবেচনায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ও উপজেলা হাসপাতালই করোনা রোগী ভর্তির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ৩শ শয্যার করোনা ওয়ার্ড ছাড়াও ৩০ শয্যার আইসিইউ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান হয়েছে।
এদিকে গত ৪৮ ঘন্টায় আক্রান্তদের মধ্যে মহানগরীতে প্রায় ৭০ জন সহ বরিশাল জেলায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯৯ জন। এনিয়ে মহানগরীতে ১১ হাজার ২শ সহ জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৬৯ জনে। গত মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় মৃতের সংখ্যা ছিল ২৩০। যারমধ্যে মহানগরীতেই মারা গেছেন ১০২ জন।
এসময়ে খুলনা-বাগেরহাটের সীমান্তবর্তি পিরোজপুরে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪৪। জেলাটিতে এপর্যন্ত ৫ হাজার ৪৬৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বীপজেলা ভোলাতেও গত ৪৮ ঘন্টায় নতুনকরে ৩৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জেলাটিতে ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৯৬২ জন আক্রান্তের মধ্য মারা গেছেন ৯১ জন। পটুয়াখালীতেও গত ৪৮ ঘন্টায় নতুন করে ২২ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জেলাটিতে এপর্যন্ত ৬ হাজার ৩শ জন আক্রান্তের মধ্যে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বরগুনা ও ঝালকাঠীতে গত ৪৮ ঘন্টায় যথাক্রমে ১২ জন ও ১০ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক মৃত্যুহারের বরগুনাতে ৪ হাজার ২ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৯৭ জনের মৃত্যুর কথা বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সর্বাধীক সংক্রমনের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে ৪ হাজার ৭০৯ জন আক্রান্তের ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে গত ৪৮ ঘন্টায় ৩৬ জন সহ দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ হাজার ৭৪৯ জন। সুস্থতার হার চলতি মাসে কিছুটা হ্রাস পেয়ে এখন ৯৫ ভাগেরও নিচে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ