Inqilab Logo

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ডিজিটাল সেবায় শীর্ষে সোনালী ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৬ পিএম
  • ১২২৭ শাখাই অনলাইনের আওতায়
  • সোনালী ই-সেবা, ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে ঘরে বসেই বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন গ্রাহকরা

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাস্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক কন্টাকলেস ব্যাংকিং তথা ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা অনেক দূর এগিয়েছে। গত দুই বছর বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বাসায় বসে প্রান্তিক মানুষের ব্যাংকিংয়ে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে রাস্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে।

সোনালী ব্যাংকের বর্তমান সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান ২০১৯ সালে রাস্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকটিতে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা চালুর উদ্যোগ নেন। যাতে করে ঘরে বসেই বিভিন্ন সেবা পেতে পারেন প্রায় কোটি গ্রাহক। বর্তমানে দেশের এই ব্যাংকটির মোট ১২২৭ টি শাখাই অনলাইন ব্যাংকের আওতায়। দেশের বৃহত্তম এই ব্যাংকটিকে একটি আদর্শ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মো. আতাউর রহমান প্রধান ২০২০ সালের মার্চ মাসে সোনালী ই-সেবা অ্যাপ চালু করেন। এই অ্যাপস চালুর পর থেকে জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত মোট ৯৯ হাজার ৩৩ টি হিসাব খোলা হয়েছে। এছাড়া ১৭ মার্চ ২০২০ সালে চালু করা হয় সোনালী ই ওয়ালেট যার মোট হিসাব সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮১ টি। বর্তমানে সরকারি এই ব্যাংকে, ছোট খাট ট্রান্সজেকশন করতে এবং হিসেব খুলতে গ্রাহকদের আর ব্যাংকে আসতে হয় না। সোনালী ব্যাংকের ব্লেজ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রবাসী গ্রাহকরা তাদের কস্টার্জিত অর্থ মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে তাদের হিসেবে জমা করতে পারেন।

দেশের সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকের সবগুলো শাখা এখন অনলাইন। এই ব্যাংকের আইটি খাতের নিরবিচ্ছিন্ন সার্ভিস দিতে ৩০১ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। সোনালী ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৬ হাজার টি ট্রান্সজেকশন হচ্ছে।

ব্যাংকিং খাতের পরিচিত মুখ ও দেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকটির সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান ব্যাংকটির ডিজিটাইজেশন সম্পর্কে বলেন, বিশ্বে পেপারলেস ব্যাংকিং একটি জনপ্রিয় ধারণা। বাংলাদেশও এত পিছিয়ে নেই। বর্তমানে সব মানুষই স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এই কোভিডকালীন সময়ে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ফলে গ্রাহকরা ঘরে বসেই সব ধরনের সেবা পাচ্ছেন, বিশেষ করে বয়োঃবৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সিটিজেনরা যারা সরকারি এই ব্যাংক থেকে ভাতা নেন তাদের জন্য এটি একটি নিরাপদ মাধ্যম।

ব্যাংকিংখাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, সময় এখন ভার্চুয়াল এন্ড স্মার্ট ব্যাংকিংয়ের। কোর ব্যাংকিং সলিউশনের মাধ্যমে এখন নন-স্টপ ব্যাংকিং সার্ভিস দিচ্ছে সোনালী ব্যাংকে। অনলাইন ব্যাংকিং সফটওয়্যার যুগোপযোগী করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে সোনালী ব্যাংক। একই সঙ্গে অচিরেই সরকারি সব ভাতাসমূহ ডিজিটালি প্রদান এবং বৃহত্তর পরিসরে ইন্টারনেট ও এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আতাউর রহমান প্রধান।

সূত্র মতে, করোনাকালীন বেশীরভাগ ব্যাংক বন্ধ রাখলেও দেশের আপামর মানুষের কথা চিন্তা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তার-কর্মচারীরা অফিস করেছেন এই সময়ে। গত বছর সোনালী ব্যাংক শুধু সেবা নয় মুনাফায় ও শীর্ষে ছিল। ২০২১ সালে রেকর্ড ২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০২০ সাল শেষে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। সরকারের সামাজিক খাতের ৩৭ টি সেবা সোনালী ব্যাংক দিচ্ছে একদম ফ্রি। এসব ভাতাসমূহ উত্তোলনের জন্য ভাতাভোগীদের আর ব্যাংকে না আসতে হয় সেজন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সব ধরনের সেবা চালু হবে অচিরেই যার মাধ্যমে বিভিন্ন ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস থেকে তারা এসব টাকা উত্তোলন করতে পারে। এসব ভার্চুয়াল সার্ভিস চালু হলে ব্যাংকে পাঠানো রেম্যিটান্স গ্রাহকরা বাসায় বসেই তুলতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংকের চীফ ইনফরমেশন টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ রেজওয়ান আল বখতিয়ার ইনকিলাবকে বলেন, ভার্চুয়াল ব্যাংকিংয়ে যেমন গ্রাহকরা নিরবিচ্ছিন্ন ২৪ ঘন্টা ব্যাংকিং সেবা পান সেটা যেমন সঠিক তেমনি আমাদেরকে তাদের গচ্ছিত অর্থের নিরাপত্তাও নিশ্বিতকরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। হ্যাকিংয়ের বিষয়টা মাথায় রেখে আমাদের এইসব সেবা চালু করতে হয়। এজন্য আমাদের আইটি সিকিউরিটি বিভাগ নামে একটি বিভাগ রয়েছে। সবার আগে গ্রাহকের সঞ্চিত অর্থের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কারন এই কার্ড ব্যবহার ফি দেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কম। একই সঙ্গে এই কার্ড ব্যাবহার করে দেশের যে কোন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেন গ্রাহকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ